কয়লাভিত্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে না: সিপিডি

- আপডেট সময় : ০৬:৪৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫৪৬ বার পড়া হয়েছে
এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে গেলে কয়লাভিত্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হবে না মন্তব্য করছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডি। সোমবার ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা বর্জন : সরকারি উদ্যোগ ও কতিপয় সুপারিশ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করে তারা। এ সময় পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পেতে সরকারের এখনই নবায়নযোগ্য বিদ্যুত উৎপাদনে যাওয়া জরুরী বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। মূলপ্রবন্ধে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে এসে বিকল্প পদ্ধতি নেয়ার জন্য একটি প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছে।তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২২টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব প্রকল্প থেকে ২৩ হাজার ২৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল। এগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এগুলোতে নতুন করে বিনিয়োগে যাওয়া হবে না, এটি সরকারের অভ্যন্তরীণ অবস্থান। এ রকম একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে তারা ধন্যবাদ জানান।
‘সরকারের পুরো ব্যাপারটিকে সাধুবাদ জানাতে পারতাম, যদি কয়লা থেকে এটিকে পূর্ণভাবে ক্লিন এনার্জি যেটাকে আমরা বলি নবায়নযাগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার ব্যাপারে নীতি সিদ্ধান্ত নেয়া হতো’ বলেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।তিনি বলেন, আমরা জানতে পারছি ভেতরে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে। এ জায়গাটাতে আমাদের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। আপত্তি থাকার কারণ এর ফলে সরকারের পরিবেশ দূষণ থেকে সরে আসা অথবা ক্লিন এনার্জিতে যাওয়ার যে নীতিগত অবস্থান, সেটি এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় না। সুতরাং সরকারের এখনই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় কয়লার বদলে কীভাবে সৌরভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিজ্ঞানী নই, তারপরও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি এলএনজির পরিবেশ দূষণের মাত্রা প্রায় কয়লার সমান। সুতরাং এটাকে পরিবেশ দূষণমুক্ত ভাবার সুযোগ নেই।সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রত্যাশিত বেসরকারি বিনিয়োগ না হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগের সহায়ক সরকারি যেসব বিনিয়োগ যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা সৃষ্টি হবে, সেটিও সময় ধরে শেষ করা যাচ্ছে না। সেটিও একটি বিষয়।
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারের নীতি অবস্থানকে গুরুত্ব দেন। যখন তারা দেখতে পান সরকারের মাস্টারপ্ল্যানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রাধিকারের জায়গায় নেই, ও রকম একটি নীতিকাঠামোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কখনো উচ্চবিনিয়োগ প্রকল্প নিয়ে আসার বিষয়ে আগ্রহ দেখেন না।কয়লাভিত্তিক প্রকল্প থেকে সরে এলে ইতোমধ্যে এ খাতে যে বিনিয়োগ হয়েছে তা অপব্যবহার হবে কি-না? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। অনেকগুলোতে জমি উন্নয়নের কাজ হয়েছে। আমরা মনে করি জমির উন্নয়ন হয়ে গেলে সেখানে খুব সহজে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কাজ করা যায়।