গাজায় ১১ দিনের হামলায় কমপক্ষে ২৪৮ জন নিহত
- আপডেট সময় : ০৬:৪১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মে ২০২১
- / ১৫২১ বার পড়া হয়েছে
ফিলিস্তিনের গাজায় গেল ১০ মে থেকে ১১ দিনের হামলায় চালানো ইসরাইলের বর্বর হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারীসহ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪৮ জন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে ১ হাজার ৯৪৮ জন ফিলিস্তিনি । হামাসের পাল্টা রকেট হামলায় ইসরাইলে এক সেনা সদস্যসহ ১৩ জন প্রাণ হারায়।বৃহস্পতিবার ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। মিসরে মধ্যস্থতায় স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ২টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় ।
শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও মসজিদুল আকসা প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হয় ইসরাইলি পুলিশ ।
ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস, স্টান গ্রেনেড, ধোঁয়া বোমা ও সরাসরি গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটে সেদিন। ফিলিস্তিনিরা পাল্টা প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের ছবি তুলছিলেন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক ফটো সাংবাদিক। বিষয়টি নজরে পড়লে ওই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা । এর আগে মাত্র ১ ঘণ্টার নোটিশে এপি এবং আলজাজিরার ব্যুরো অফিস ভবন গুঁড়িয়ে দেয় ইসরাইলি বিমান বাহিনী ।
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর মিসর, গাজা ও ইসরাইলের সীমান্তের মধ্যকার সংযোগস্থল কেরাম শালোম খুলে দিয়েছে ইসরাইল । এ সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার ত্রাণের ট্রাক ঢুকছে গাজায় । স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ধ্বংস হয়ে যাওয়া সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে কয়েক বছর লেগে যাবে। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েকশ’ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন । এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের সংস্থা প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি বলেছে, সাহায্যের জন্য তাদের ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার প্রয়োজন ।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে টানা ১১ দিনের প্রতিরোধ যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ায় ফিলিস্তিনিদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।
শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে মুসলিম দেশগুলোকে আন্তরিকতার সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান খামেনি।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের আর্থিক ও সামরিকভাবে শক্তিশালী করে তোলার দায়িত্ব মুসলিম বিশ্বের। সেইসঙ্গে গাজা উপত্যকার ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণেও মুসলিম দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি । ফিলিস্তিনি নিরপরাধ নারী ও শিশুদের হত্যা করার দায়ে তিনি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিচার দাবি করেন ।
একই দিনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন করেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ । গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি । এছাড়া ইসরাইলি হামলায় নিহত নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন ।জবাবে সৌদি বাদশাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাহমুদ আব্বাস বলেন, ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে সৌদি আরব বিশ্ব সম্প্রদায়, মুসলিম বিশ্ব ও আরব সংগঠনগুলোকে একত্রিত করতে কাজ করেছে । এজন্য সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি ।
এদিকে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র করাই এই সংঘাতের একমাত্র সমাধান । একই সঙ্গে গাজা পুনর্নির্মাণের প্রচেষ্টা সংগঠিত করতেও সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি তার প্রতিশ্রুতির,কোনো পরিবর্তন হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট ।