ঢাকার নিউমার্কেট সংঘর্ষের মূলহোতা বাপ্পী কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার
- আপডেট সময় : ০২:০৮:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মে ২০২২
- / ১৫৫৭ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সাথে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের আলোচিত সংঘর্ষে দু’জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত একজন এবং সংঘর্ষের সূত্রপাতকারী দু’জনসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে রেব। সকালে ঢাকার কাওরান বাজারে রেব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। গ্রেফতারকৃত বাপ্পি ও সজীব নিউমার্কেটের ওয়েলকাম ফাস্টফুডের দোকানে কর্মচারী। আর মাহমুদুল হাসান সিয়াম সংঘর্ষের সময় নাহিদকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
তিনি বলেন,ফাস্টফুডের দুই কর্মচারী বাপ্পি ও সজিব ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যায় এবং কক্সবাজার গিয়ে বেশ কিছু হোটেলে চাকরির জন্য সিভি দেয় বলে জানায় রেব।
সকালে ঢাকার কাওরান বাজারে রেব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় প্রায় ১৮ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। এরপর জড়িতদের গ্রেফতারে রেব দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। পরে শরীয়তপুর ও কক্সবাজার এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় রেব।
রাজধানীর নিউমার্কেটে সংঘর্ষের সৃষ্টি ওয়েলকাম ও ক্যাপিটেল । প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে র ্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার রেব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি আরও জানান, এছাড়াও সংঘর্ষের জেরে কর্মচারী নাহিদকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত দুই কর্মচারী নিজেদের ‘হিরোইজম, ইগোইজম’ প্রকাশ করার জন্য এবং নিজেদের আধিপত্য দেখানোর জন্য বেশকিছু দুষ্কৃতিকারীকে ফোনের মাধ্যমে খবর দেয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের উসকে দেওয়ার জন্য গুজব ছড়িয়ে সংঘর্ষকে আরও উসকে দেওয়া হয়। নাহিদকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ইমনকে শনাক্ত করা গেলেও তাকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (৪ মে) র ্যাব-২ এর অভিযানে মোয়াজ্জেম হোসেন সজিব (২৩), মেহেদি হাসান বাপ্পিকে (২১) কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া র ্যাব ৩ এর অভিযানে মাহমুদুল হাসান সিয়ামকে (২১) গ্রেফতার করা হয়েছে শরীয়তপুর থেকে।
র ্যাব জানিয়েছে, ১৮ এপ্রিল ইফতার চলাকালে দোকানে বসাকে কেন্দ্র করে ওয়েলকাম এবং ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মচারীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তী সময়ে বাপ্পি এবং সজীব নিজেদের ক্ষমতা দেখানোর জন্য ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের খবর দেয়। বাপ্পি এবং সজীব সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের খবর দিয়ে নিয়ে আসে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানের কর্মচারীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ হাতাহাতির ঘটনার বিষয়টি উল্টোভাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করে তাদের উসকে দেওয়া হয়। বলা হয়- কাপড় কিনতে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, হাতাহাতি এবং এক পর্যায়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়। এ খবর শুনেই মূলত শিক্ষার্থীরা দোকানে এসে হামলা চালায়।
নিউমার্কেটের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে দুটি হত্যা মামলা। সংঘর্ষ চলার সময় ইটপাটকেলের আঘাতে কর্মচারী নাহিদ রাস্তার পাশে পড়ে যায়। নাহিদ রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পর রড দিয়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সিয়াম প্রথম তাকে আঘাত করে। পরে ইমন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নাহিদকে কোপায়।
পরবর্তী সময়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। র ্যাব বলছে, ‘সিয়ামের কোনও পলিটিক্যাল পরিচয় নেই। সিয়াম এবং ইমন আঘাত করেছে নাহিদকে। ইটগুলো কোথা থেকে ছোড়া হয়েছিল সে বিষয়গুলো পর্যালোচনা বিষয় রয়েছে। ইমনকে খোঁজা হচ্ছে। আমরা আশা করি তাকে ধরতে পারবো। দেশ ত্যাগ করেছে কিনা এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে খোঁজা হচ্ছে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অনেককে শনাক্ত করা হয়েছে, অধিকাংশ আত্মগোপনে রয়েছে। যারা সাংবাদিকদের উপর আঘাত করেছে তারা বহিরাগত এবং কিছু দোকান কর্মচারীও ছিল।’
নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।