বান্দরবানের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল যেন লুটপাটের মহা আখড়া
- আপডেট সময় : ০৩:০৩:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪
- / ১৭৪২ বার পড়া হয়েছে
বান্দরবানের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল যেনো লুটপাটের মহা আখড়ায় পরিণত হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ে বসবাস করা সহজ সরল মানুষের সুপেয় পানির কষ্টকে পুঁজি করে, ছোট-বড় অসংখ্য প্রকল্পের নামে লুট করা হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকজন ঠিকাদারের সঙ্গে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের কর্মকর্তারা এক হয়ে বছরের পর বছর ধরে এই হরিলুট চালাচ্ছে। দুর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তা আর ঠিকাদার সিন্ডিকেটের বিচার দাবি করেছেন সুশীল সমাজ। দফায় দফায় ধর্ণা দিয়েও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের কোনো কর্মকর্তার দেখা কিংবা বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বান্দরবান শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরের এই পাহাড়ি গ্রামটির নাম জালালাবাদ লংগীপাড়া। গ্রামটিতে বসবাস করা কয়েকহাজার মানুষের সবচেয়ে বড় সংকট খাবার পানির। বর্ষা মৌসুমে পার্শ্ববর্তী সাঙ্গু নদী ছাড়াও দুর দুরান্তের পাহাড়ি ছড়া থেকে পানি সংগ্রহ করলেও শুষ্ক মৌসুমে পড়তে হয় মহা-দুর্ভোগে।
বছর দুয়েক আগে পাহাড়ে বাঁধ দিয়ে কয়েকটি ছড়ার পানি একত্রিত করে টাংকিতে জমা করে এই পাড়ায় সরবরাহের প্রকল্প নেয় স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। কিন্তু চরম অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে নয়-ছয় করে প্রকল্প শেষ করায়, সুফল পায়নি এলাকাবাসী। উপরন্তু ছড়াগুলোতে বাঁধ দেয়ায় পানির সংকট তীব্র হয়েছে।
মাটির তিন ফুট নিচে দিয়ে পাইপলাইন বসানোর কথা থাকলেও মাটির ওপর দিয়ে প্লাস্টিকের ওয়ানটাইপ পাইপ লাগিয়ে দায় সেরেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। ছড়ার বাঁধ কিংবা পানির টাংকিগুলো করা হয়েছে যেনোতেনোভাবে। রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে টাংকিতে জমেছে শ্যাওলা, কোথাও পাইপ ফেটে বের হচ্ছে পানি।
শুধু জালালাবাদ লংগী পাড়া নয়। শত কোটি টাকা ব্যয়ে আলাদা আলাদা ৪টি প্রকল্পের আওতায় জেলা জুড়ে ছোট বড় এমন শতাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। কিন্তু একটি প্রকল্পেরও সুফল পাচ্ছে না স্থানীয়রা। এতে ক্ষুব্ধ বান্দরবানের সুশীল সমাজ।
প্রকল্পের শত কোটি টাকা লোপাটের হোতা বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে জিএফএক্স-৪ ও উপসহকারী প্রকৌশলী জুলহাসের জিএফএক্স-৫ বক্তব্য জানতে দফায় দফায় ধর্ণা দিয়েও তাদের দেখা পায়নি এসএ টিভি। এমনকি মুঠোফোনও রিসিভ করেননি তারা।
বান্দরবানের সবচেয়ে কাছের প্রকল্প এলাকা এই লংগীপাড়া। প্রায় দুই ঘন্টা পাহাড়ি পথ পেরিয়ে পৌঁছতে হয় প্রকল্প এলাকায়। অন্য প্রকল্পগুলো আরো দুর্গম এলাকায় হওয়ায় উপর মহলের তদারকিও নেই খুব একটা। আর এই সুযোগের সদব্যবহার করছে দুর্নীতিবাজরা।
প্রকল্পের নাম
বরাদ্দকৃত টাকা
০১
বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাথুরে এলাকায় ভিএফএস ও সফল এলাকায় টিউবয়েলের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প।
৪৪ কোটি ৫৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা
০২
বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবানের তিনটি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প।
৪৪ কোটি ২৫ লাখ ১০০ টাকা
০৩
বান্দরবান পৌর এলাকার বালাঘাটা, কালাঘাটা ও বনরুপা পাড়া নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প
৯ কোটি ২০ লাখ টাকা
০৪
বান্দরবান পৌর পানি সরবরাহের পানি শোধনাগার ও কেমিকেল সরবরাহ প্রকল্প ৫০ লাখ টাকা।