বিজিবি’র কতিপয় অতি উৎসাহী সদস্যের বিতর্কিত ভূমিকায় অতিষ্ট কুমিল্লার ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা
- আপডেট সময় : ০৭:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২
- / ১৫৬০ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে বিজিবি’র কতিপয় অতি উৎসাহী সদস্যের বিতর্কিত ভূমিকায় অতিষ্ট কুমিল্লার ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা। পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে তা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিতে গেলেই বিজিবি সদস্যদের হয়রানির মুখে পড়েন তারা। প্রকাশ্যে খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া বৈধ পণ্যকে অবৈধ দাবি করে মাঝপথেই অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিচ্ছে তারা। সবশেষ গেল ২৫ এপ্রিল সকালে কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকা থেকে এসএ পরিবহনের ডাক, ডকুমেন্ট ও পার্শ্বেলবাহী একটি কাভার্ডভ্যান আটকে দু’দিন ধরে নানা নাটকীয়তার পর ট্রাস্কফোর্সের নাম ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে গাড়িটি জব্দ ও নিরপরাধ ড্রাইভার-সুপারভাইজারের নামে মামলা দিয়ে থানায় সোপর্দ করে বিজিবি।
কুমিল্লার কসমেটিকস, শিশুখাদ্য, উৎসব সামগ্রীর সবচেয়ে বড় ও পাইকারি বাজারের নাম রাজগঞ্জ বাজার। দিন রাত ২৪ ঘন্টা জমজমাট থাকে এই বাজারটি। যেখানে দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানী করা পণ্যও বিক্রি হয় প্রকাশ্যে।
কিন্তু বাজার থেকে কেউ বেশি পণ্য কিনে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিতে গেলেই বিজিবির কতিপয় সদস্যের হয়রানীর মুখে পড়তে হয় তাকে। এমনকি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চালান দিয়েও পণ্য নিতে পারছেন না তারা।
পণ্যবাহী গাড়ি মহাসড়কে উঠলেই কতিপয় বিজিবি সদস্য তার গতিরোধ করে পণ্য ছিনিয়ে নিচ্ছে অহরোহ। সবশেষ গেল ২৫ এপ্রিল ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকা থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় কুরিয়ার সার্ভিস এসএ পরিবহণের জরুরী ডাক ও পার্শ্বেলবাহী একটি গাড়ি জোর করে অস্ত্রের মুখে ড্রাইভার-সুপারভাইজারকে জিম্মি করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিজিবি সদস্যরা।
ক্যাম্পের খোলা মাঠে অরক্ষিত অবস্থায় দিনভর পার্শ্বেলগুলো লন্ড-ভন্ড করে রাতের আধারে গাড়িটি জব্দ দেখিয়ে প্রেরক-প্রাপকের নাম বাদ দিয়ে শুধু ড্র্রাইভার ও সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে থানায় সোপর্দ করে তারা। এমনকি এসএ পরিবহনের কুমিল্লা শাখার ম্যানেজার আব্দুল হাইকে ক্যাম্পে ডেকে ভয় ভিতি দেখিয়ে একটি মিথ্যা স্বীকারোক্তিও লিখিয়ে নেয় বিজিবি।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, সাধারণ ভোক্তারা যাতে বিদেশি পণ্য সহজে ব্যবহার করতে পারে সে জন্য কুমিল্লার বর্ডারে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সমন্ময়ে সীমান্তহাট পর্যন্ত চালু রেখেছে সরকার। কিন্তু বিজিবির কিছু অসাধু সদস্যের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের মহতি উদ্যোগ বিতর্কিত হচ্ছে।
আর সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি সদস্যদের ক্ষমতার অপব্যবহারের এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কখনো কখনো আদালতের নির্দেশনারও তোয়াক্কা করছে না তারা। যা দেশের আইন ও সংবিধানের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে টাস্কফোর্স কমিটির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেন বিজিবি-১০ এর অধিনায়ক। আর বিজিবির দেয়া তথ্যে অভিযানের কথা স্বীকার করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
শুধু এবারই নয় গত বছরের অক্টোবর মাসেও বিজিবি সদস্যদের এমন অপেশাদার আচরণের শিকার হয়েছে এসএ পরিবহণ পার্শ্বেল ও কুরিয়ার সার্ভিস। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বিজিবির উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানায় এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।