মূল্যস্ফীতির হার কমা অর্থনীতির ভালো লক্ষণ: পরিকল্পনামন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৪:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩
- / ১৫৮৪ বার পড়া হয়েছে
ধীরে হলেও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার কমছে, যা সামনে নয় শতাংশের নীচে নেমে আসবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান৷ তার মতে, দেশে ধনীরা আরও ধনী হলেও গরীবদের অবস্থারও উন্নতি হয়েছে৷
‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ টকশোতে এবারের আলোচনার বিষয় ছিল: ব্রিকসের চাওয়া-পাওয়া৷ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী৷ ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্য হতে না পারা, নির্বাচন নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব, টাকা পাচারের অভিযোগ, দুর্নীতিসহ নানা বিষয় উঠে আসে তাদের আলোচনা৷
সম্প্রতি সাউথ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে নতুন ছয়টি দেশকে সদস্য করেছে জোটটি৷ এর আগে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল৷ এক্ষেত্রে জোটের বর্তমান কোনো সদস্য বাধা দিয়েছে কি না এ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে প্রশ্ন করেন সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন৷ জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার অবস্থান থেকে আমি এমন কিছু দেখছি না৷ আমার কাছে তা মনেও হয়নি৷ এটা পদ্ধতিগত একটি বিষয়৷ আমাদের দিক থেকে কিছু পদক্ষেপ হয়তো বাদ ছিল৷ আমাদের সরকার অবশ্যই মনে করে গ্লোবাল ফোরামে যাওয়া দেশের জন্য মঙ্গলজনক৷’’
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের মনোভাব এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রে করা আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরাও ফেয়ার (স্বচ্ছ) নির্বাচন চাই৷ ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে কী লিখেছে না লিখেছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার৷ আমরা ঠাণ্ডা মাথায় আমাদের পলিসিগুলো তৈরি করি এবং সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করি৷’’
তবে মন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘উনাদের মুখের কথা মনের কথা এক না৷” তার মতে, ১/১১ এর কলাকুশলীরাই ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ তে কলকাঠি নেড়েছে৷ ভারতও চায় বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক৷
এবার বিএনপির সাথে ভারতের সম্পর্ক কেমন জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করবো৷ ভারতেরও তেমন কিছু স্বার্থ আছে৷ আবার আমাদের কিছু কমন স্বার্থ আছে৷ বিএনপির সাথে ভারতের সম্পর্ক উত্তরোত্তর ভালো হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও ভালো হবে৷”
বাংলাদেশের সরকার কি আর্থিক দুর্নীতি ঠেকাতে ব্যর্থ কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে এম এ মান্নান বলেন, দুর্নীতি আকারে বেড়েছে৷ তবে দেশের অর্থনীতির আকার যেভাবে বেড়েছে সেই অনুপাতে দুর্নীতির মাত্রা বেশি নয় বলে মনে করেন তিনি৷ অর্থ পাচারের নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে পাচারের সুযোগ সুবিধা অনেক বেড়েছে৷
সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে এম এ মান্নান বলেন, ‘‘গ্লোবালি (বিশ্বজুড়ে) মোটামুটি সব দেশই এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথমবারের মতো (রেকর্ড)মূল্যস্ফীতির শিকার হয়েছে৷ কোভিডের সময় সবকিছুর উৎপাদন অনেক কমে গিয়েছিলো, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে৷”
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে গত তিন মাসে বাংলাদেশ বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত কমেছে৷ হতে পারে তা দশমিক পাঁচ, দশমিক তিন দশমিক দুই শতাংশ কমেছে৷ ‘‘আমরা সাড়ে নয়ে উঠেছিলাম এখন আমরা নয়ের নীচে নামছি৷ চলমান মাসে আরেকটু নামবো৷ স্থিতিশীলভাবে আমরা নামছি যা অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ভালো লক্ষণ,” বলেন মন্ত্রী৷
আরেক প্রশ্নের উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ৭০ ভাগ লোক গ্রামে বসবাস করে৷ সে মানুষগুলো চায় স্কুল, সড়ক, ব্রিজ, হাসপাতাল, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ৷ না খেয়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো লোক নেই৷ ধনী আরও ধনী হয়েছে, গরীব আরও গরীব হয় নাই, তার থেকে অবস্থার উন্নতি হয়েছে৷”
ডয়চে ভেলে