৮৬তম জন্ম বার্ষিকীর ১৭ দিন আগে মুত্যুকে আলিঙ্গন করলেন পণ্ডিত বিরজু মহারাজ
- আপডেট সময় : ০৯:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
- / ১৬৭৫ বার পড়া হয়েছে
৮৬তম জন্ম বার্ষিকীর ১৭ দিন আগে মুত্যুকে আলিঙ্গন করলেন উপমহাদেশের প্রবাদপ্রতীম নৃত্যব্যক্তিত্ব পণ্ডিত বিরজু মহারাজ। কত্থক নাচের জন্য ‘গুরু’ উপাধি নামের সাথে জুড়ে যায় অনেক আগেই। মঞ্চে নাচের ভাষাতেই গল্পের বয়ানে মুগ্ধ করতেন তিনি। পদ্মভূষণ পুরস্কারপ্রাপ্ত এই নৃত্যসাধক নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছেন কোরিওগ্রাফার হিসেবেও।
কত্থক নৃত্যে যে নামটি ছিল কালজয়ী এক মুদ্রা… হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে গেল সে নাম… পার্থিব মায়ার বন্ধন থেকে।
আকাশে যুক্ত হলো আরো একটি উজ্জল নক্ষত্র। ৮৬তম জন্ম বার্ষিকীর ১৭ দিন আগে মুত্যুকে আলিঙ্গন করলেন উপমহাদেশের প্রবাদপ্রতিম নৃত্যব্যক্তিত্ব পণ্ডিত বিরজু মহারাজ।
১৯৩৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, লক্ষ্ণৌতে। ছোট থেকেই নাচ-গানের পরিবেশে বেড়ে ওঠা তাঁর। কত্থকের ‘মহারাজা’ পরিবারে জন্ম বিরজু মহারাজের। শিশু শিল্পী হিসেবেই বাবার সঙ্গেই মঞ্চ ভাগ করে নিতেন তিনি। কৈশোরে পা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ‘গুরু’ তকমা জুড়ে নামের আগে।
নাচই ধ্যান আর নাচই জ্ঞান। যখন মঞ্চে উঠতেন নাচের ভাষাতেই গল্পের বয়ান। শাস্ত্রীয় নৃত্য কত্থক নাচে যোগ করেছেন এক অন্য মাত্রা। নাচের অঙ্গভঙ্গির অভিব্যক্তি আর অন্য সবার চেয়ে অনেক আলাদা।
বাংলাদেশে কত্থক ঘরানার যত শিল্পী আছেন। সবাই হাতখড়ি নিয়েছেন তার কাছ থেকেই। ফলে নিবিড় এক সংযোগ ছিল এই মাটির সঙ্গে।
অসাধারণ ড্রাম বাজাতেন বিরজু মহারাজ। সব ধরনের ড্রাম, তবলা ও নাল বাজাতে পারতেন তিনি। বাজাতেন পাখোয়াজ, সরোদ, সেতার, বাঁশি ও বেহালা। গানও গাইতেন বিরজু মহারাজ। ঠুমরি, দাদরা, ভজন ও গজলের দখল ছিল তাঁর গলায়। সত্যজিতের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে ‘কানহা ম্যায় তোসে হারি’ ঠুমরিটি গেয়েছিলেন।
মাত্র ২৮ বছর বয়সে সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার জেতেন তিনি। এছাড়াও ১৯৮৩ সালে ভারত সরকারে পক্ষ থেকে পান পদ্মভূষণ। পেয়েছেন কালীদাস সম্মানও।
এই কত্থকগুরু বেশ কিছু ছবিতে কোরিওগ্রাফি করেছেন। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে। নতুন শতাব্দীতে ‘দেবদাস’, ‘বাজিরাও মস্তানি’-র মতো ছবিতে বিরজু মহারাজের কোরিওগ্রাফি মুগ্ধ করেছে আপামর ভারতীয়কে। ‘বিশ্বরূপম’ ছবিতে কোরিওগ্রাফির জন্য চলচ্চিত্রে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন এই নৃত্যসাধক।
শুধুমাত্র কত্থক নৃত্যের ঝঙ্কারেই নয় , যুগ থেকে যুগান্তরে রঙিন সময়ের পালাবদলেও তার স্মৃতিটুকু থাকবে নৃত্যপ্রমীদের হৃদয়ে।