আগামী ১৮ বছরে আমাদের জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে : পলক
- আপডেট সময় : ০৩:৪৭:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩
- / ১৫৯৭ বার পড়া হয়েছে
মেধাবী তরুণদের দক্ষতার পূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণফোনের জিপি অ্যাকাডেমি প্ল্যাটফর্ম। এরই ধারাবাহিকতায়, জিপি অ্যাকাডেমির উদ্যোগে সম্প্রতি আরও একটি মাস্টারক্লাস আয়োজন করা হয়েছে। মাস্টারক্লাসে অতিথি বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটিডি) মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের অগ্রযাত্রায় ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক হিসেবে তরুণদের দায়িত্ব ও করণীয় প্রসঙ্গে মাস্টারক্লাসে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে এবং দেশ ও জাতির জন্য একটি ইতিবাচক রূপান্তর প্রসঙ্গে আশাবাদী করে তোলে।
প্রাক-নিবন্ধনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৩ শ’রও বেশি তরুণ শিক্ষার্থী জিপি অ্যাকাডেমির এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন এবং স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির মাধ্যমে আয়োজনটিকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।
রাজধানীর জিপি হাউসে আয়োজিত এই মাস্টারক্লাসে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের মূল চারটি ভিত্তি – স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি – নিয়ে আলোচনা করেন। যথাযথ ভবিষ্যৎমুখী দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কীভাবে নিজেদের ডিজিটাল রূপান্তরের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া ও প্রস্তুত করে গড়ে তোলা যায় – সে বিষয়ে তরুণদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
নিজ বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক উল্লেখ করেন, ১৮ বছর আগেও দেশে পর্যাপ্ত দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা ছিল না, আর দামও ছিল সাধারণের নাগালের বাইরে। কিন্তু সরকারের যথার্থ প্রয়াস এবং গ্রামীণফোনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা, যার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন দেশের ১২.৭ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
সরকারের ‘ট্রিপল এ’ কৌশলের উল্লেখ করে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, “দেশে ইন্টারনেট ও ডিজিটাল সেবাকে আরো বেশি সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করে তোলা এবং ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরো বেশি জনসচেতনতা সৃষ্টি করা আমাদের লক্ষ্য। আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বিশ্ব এক আমূল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে, যার মাধ্যমে শ্রম-নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো ধীরে ধীরে প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনীতি গঠনের দিকে ঝুঁকবে। এই পরিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য দেশে উদ্ভাবন-ভিত্তিক একটি ইকোসিস্টেম গঠন করা, যেখানে নতুন উদ্যোক্তা ও উদ্যোগসমূহ বেড়ে ওঠার প্রেরণা পাবে। ইতোমধ্যে, কেবল গত ৬ বছরেই যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুর ও ভারতের মত দেশ থেকে বিনিয়োগকারীরা আমাদের বাজারে ৮শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছেন।
পাশাপাশি এই খাতে সরকারেরও ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। কেননা, আগামী ১৮ বছরে আমাদের একটি জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতির পথ গড়ে তুলতে হবে, যেমনটি আমরা অতীতে সিলিকন ভ্যালিতে গড়ে উঠতে দেখেছি।”
তথ্যবহুল বক্তব্যের পাশপাশি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি কুইজ খেলার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আনন্দঘন সময় কাটান এবং বিজয়ীদের হাতে বিশেষ পুরস্কারও তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে একটি ৪-মিনিটের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশের সম্ভাব্য চিত্র শিক্ষার্থীদেরকে অনুপ্রাণিত করে তোলে।
তরুণদের জন্য এমন চমৎকার একটি আয়োজন এবং স্মার্ট বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি অংশীদার হিসেবে নির্ভরযোগ্য দায়িত্বপালনের জন্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী, ইয়াসির আজমান নিজেও। ওই দিনের জন্য তিনি নিজেকেও একজন গর্বিত শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করেন।
ইয়াসির আজমান বলেন, “আমি মনে করি, আমারও অনেক কিছু শেখার আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ রূপকল্পের অন্যতম প্রধান নীতিনির্ধারক মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি’র কাছে থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ ধারণা নিয়ে সরাসরি জানতে পারা আমাদের সবার জন্য এক অনন্য সুযোগ।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আমাদের নিজেদের ওপর বিনিয়োগ করা জরুরী, যাতে আগামীতে আমরা নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে পারি। ভবিষ্যৎ উপযোগী বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উন্মোচনের “এখনই সময়”। শিখতে ও নিজেদের বিকাশে আমাদের মনকে উন্মুক্ত করতে হবে। কেননা, আমাদের আজকের স্বপ্নের ওপরেই নির্ভর করছে আমাদের আগামীর অর্জন।”
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন হোসেন সাদাত, সিনিয়র ডিরেক্টর, কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স; ফারহানা ইসলাম, হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট, ফারহানা হোসেন শাম্মু, প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবং প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমি (www.grameenphone.academy) মূলত একটি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া যায়। এটি ক্যারিয়ার, ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যবসায় উদ্যোগ সহ তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়ে সেশনও আয়োজন করে থাকে।
সকল প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের মেধাবীরা যেনো প্রত্যাশিত ও যোগ্য স্থানে পৌঁছাতে পারেন এজন্য ২০২২ সালের মে মাস থেকে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে জিপি অ্যাকাডেমি। জিপি অ্যাকাডেমি থেকে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার অংশগ্রহণকারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৯ হাজার ছিল নারী অংশগ্রহণকারী।
বৈশ্বিক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের আপস্কিল করতে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দেশজুড়ে ১৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৭ হাজারের বেশি সনদ অর্জন করা শিক্ষার্থী মনে করেন তাদের ব্যক্তিগত ও ক্যারিয়ার সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে জিপি অ্যাকাডেমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার শুরু করা