আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ
- আপডেট সময় : ০৩:১২:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২
- / ১৫৪৫ বার পড়া হয়েছে
আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। এদিন, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে কালজয়ী ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গেল বছর থেকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটি। এর আগে, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।
১৯৭১ সালের ২ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সারা বাংলায় চলে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন । তাইতো ইতিহাসখ্যাত ৭ মার্চ শুধু তৎকালীন পাকিস্তানি জনগণই নয়, বহির্বিশ্বের অনেকেও উদ্দীপনা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলো বঙ্গবন্ধুর ভাষণের জন্য। তবে স্বাধীনতার চেতনায় প্রদীপ্ত বাঙালির কাছে সেদিনের ভাষণ ছিলো জাতীয় মুক্তি আর কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে চূড়ান্ত সংগ্রামের সূচনা।
৭ মার্চ ১৯৭১, ঘড়ির কাটায় তখন বেলা ৩টা কুড়ি মিনিট। রেসকোর্স ময়দানের উত্তাল জনসমুদ্রের সভামঞ্চে আসেন চিরাচরিত সাদা আর কালো পোশাকে বাঙ্গালীর প্রাণপুরুষ ‘রাজনীতির কবি’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বনন্দিত মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো তাঁর জনগণকে একটি স্বপ্নের কথা বলতে নয়, তিনি আসেন নির্দেশের অপেক্ষারত উত্তাল বাঙালি জনসমুদ্রকে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান জানাতে।
মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণে তুলে ধরেন পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালিদের বঞ্চনার ইতিহাস। নির্দেশ দেন সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার। পরামর্শ দেন যে কোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার।
৭ মার্চের ভাষণ ছিল একজন দক্ষ কৌশলীর সুনিপুণ বক্তব্য। মূলত এ ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতারই ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই একটি ভাষণই সৃষ্টি করেছে একটি জাতিরাষ্ট্র, যা ছিলো বিশ্বে নজিরবিহীন। তাইতো ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এই ভাষণকে বিশ্ব–ঐতিহ্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’–এ অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউনেসকো। আর এই স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তৎকালীন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতেও এ অর্জন, ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাড়িয়েছে দেশের মর্যাদা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের এ ভাষণ নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে করেছে সশস্ত্র, আর এই একটি ভাষণকে অবলম্বন করেই স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে ৩০ লাখ বাঙালি, সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন আড়াই লাখ মা–বোন। ৭১–এর রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদেরও শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত করেছিলো এ ভাষণ।