০৫:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমালের হিসাব জব্দ

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৪:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৫৩২ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গত ৮ বছরে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচার, ব্যাংক দখল, ঋণ জালিয়াতি, শেয়ার কারসাজি, নামে-বেনামে ভুয়া কোম্পানি বানানো ব্যাংকের টাকায় সম্পদের পাহাড় গড়া– এতসব অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তিনি এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল। গত ৮ বছর শেখ হাসিনার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে নিজেকে মনে করতেন সবকিছুর উর্ধ্বে। হাসিনার আর্থিক সাম্রাজ্যে শত কোটি টাকার যোগান দেয়া এবং জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামীও তিনি। এসব কারণে ইতোমধ্যে পারভেজসহ তিন জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০১৩ সালে স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসনামলে প্রবাসী উদ্যোক্তাদের নামে এনআরবিসি ব্যাংকের যাত্রা শুরু হলেও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী ও ভাইস চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী ব্যাংকটির লাইসেন্স নেয়ার পর থেকেই লিপ্ত হন ব্যাপক চাঁদাবাজিতে। তখন ব্যাংকটির প্রাথমিক শেয়ার বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম আর মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান চক্রের সাথে লিপ্ত হয়ে ব্যাংকের অর্থ লোপাটসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ফরাসত আলী-তৌফিক চৌধুরীসহ ৬ পরিচালককে অপসারণ করে।

যার পেছনে মূলত কলকাঠি নেড়েছিলো ২০১৭ সালে নিয়োগ পাওয়া রাশিয়া-ফেরত বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজুসহ বর্তমান বোর্ডেরই সুবিধাবাদী চক্র। এরপর যেন আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ এসে যায় তমালের হাতে! শুরু হয়ে যায় ব্যাংকটির সীমাহীন লুটপাট, অনিয়ম আর নৈরাজ্যের নতুন নতুন উপাখ্যান।

গত ৮ বছর ধরে গণমাধ্যমের লালকালো শিরোনাম বলছে অপ্রতিরোধ্য তমালের অনিয়ম-দুর্নীতি কতটা লাগামহীন ছিল। একপ্রকার রাহুর গ্রাসে পরিণত হয় বেসরকারী ব্যাংকটি। কারণ একটাই- ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে সবই তার কাছে ছিল তুচ্ছ।

তমালের দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে ডুব দেয়ার আগে ছাত্রজনতার জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে পতিত হাসিনার ফ্যাসিজম বাস্তবায়নে কিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন সেই কাহিনীতে নজর রাখা যাক। জুলাইয়ের ১৭ তারিখ পারভেজ তমাল এক অফিস আদেশ জারি করেন, যেখানে বলা হয় ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা বা পরিবার যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া জুলাই মাসে ছাত্রদের আন্দোলন প্রতিহত করতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে মোটা অংকের টাকা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।

ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলাও হয়েছে তমালের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে তদন্ত।

পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে গণহত্যায় জড়িত পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে জানান টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগগুলোর তদন্ত চলছে। যা গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, ইসি কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাফর ইকবাল হাওলাদারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিষয়গুলো নিয়ে চেয়ারম্যান-এমডির সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যাংকে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কর্মকর্তারা জানান মামলা হওয়ার পর থেকে তারা আর ব্যাংকে আসেন না।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমালের হিসাব জব্দ

আপডেট সময় : ০৪:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

গত ৮ বছরে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচার, ব্যাংক দখল, ঋণ জালিয়াতি, শেয়ার কারসাজি, নামে-বেনামে ভুয়া কোম্পানি বানানো ব্যাংকের টাকায় সম্পদের পাহাড় গড়া– এতসব অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তিনি এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল। গত ৮ বছর শেখ হাসিনার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে নিজেকে মনে করতেন সবকিছুর উর্ধ্বে। হাসিনার আর্থিক সাম্রাজ্যে শত কোটি টাকার যোগান দেয়া এবং জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামীও তিনি। এসব কারণে ইতোমধ্যে পারভেজসহ তিন জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০১৩ সালে স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসনামলে প্রবাসী উদ্যোক্তাদের নামে এনআরবিসি ব্যাংকের যাত্রা শুরু হলেও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী ও ভাইস চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী ব্যাংকটির লাইসেন্স নেয়ার পর থেকেই লিপ্ত হন ব্যাপক চাঁদাবাজিতে। তখন ব্যাংকটির প্রাথমিক শেয়ার বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম আর মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান চক্রের সাথে লিপ্ত হয়ে ব্যাংকের অর্থ লোপাটসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ফরাসত আলী-তৌফিক চৌধুরীসহ ৬ পরিচালককে অপসারণ করে।

যার পেছনে মূলত কলকাঠি নেড়েছিলো ২০১৭ সালে নিয়োগ পাওয়া রাশিয়া-ফেরত বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজুসহ বর্তমান বোর্ডেরই সুবিধাবাদী চক্র। এরপর যেন আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ এসে যায় তমালের হাতে! শুরু হয়ে যায় ব্যাংকটির সীমাহীন লুটপাট, অনিয়ম আর নৈরাজ্যের নতুন নতুন উপাখ্যান।

গত ৮ বছর ধরে গণমাধ্যমের লালকালো শিরোনাম বলছে অপ্রতিরোধ্য তমালের অনিয়ম-দুর্নীতি কতটা লাগামহীন ছিল। একপ্রকার রাহুর গ্রাসে পরিণত হয় বেসরকারী ব্যাংকটি। কারণ একটাই- ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে সবই তার কাছে ছিল তুচ্ছ।

তমালের দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে ডুব দেয়ার আগে ছাত্রজনতার জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে পতিত হাসিনার ফ্যাসিজম বাস্তবায়নে কিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন সেই কাহিনীতে নজর রাখা যাক। জুলাইয়ের ১৭ তারিখ পারভেজ তমাল এক অফিস আদেশ জারি করেন, যেখানে বলা হয় ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা বা পরিবার যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া জুলাই মাসে ছাত্রদের আন্দোলন প্রতিহত করতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে মোটা অংকের টাকা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।

ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলাও হয়েছে তমালের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে তদন্ত।

পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে গণহত্যায় জড়িত পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে জানান টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগগুলোর তদন্ত চলছে। যা গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, ইসি কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাফর ইকবাল হাওলাদারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিষয়গুলো নিয়ে চেয়ারম্যান-এমডির সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যাংকে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কর্মকর্তারা জানান মামলা হওয়ার পর থেকে তারা আর ব্যাংকে আসেন না।