০১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

করোনার ছোবলে বছরজুড়েই স্থবির রাজনৈতিক কর্মকান্ড

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০২:০৯:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ১৫১২ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

করোনার ছোবলে বছরজুড়েই স্থবির প্রায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড। নিরুত্তাপ রাজনীতি এখনো সচল হয়নি। নেই সভা-সমাবেশ বা রাজনৈতিক কোলাহল। করোনাকালে স্থানীয় সরকারসহ কয়েকটি উপনির্বাচনে কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও পুরো বছরই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়নি রাজনীতি। সীমাবদ্ধ ছিল ভার্চুয়াল মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তৃতা-বিবৃতিতেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ জোট-মহাজোটের তেমন কোনো কার্যক্রমও ছিল না।

২০২০ সালের ‍শুরুতে দেখা দেয় কোভিড-১৯ মহামারী। জীবন বাঁচাতে মাঠ আর রাজপথ ছেড়ে রাজনীতি আশ্রয় নেয় ঘরের কোনে। মিছিল, সমাবেশের মতো জনসংযোগের চেনা দৃশ্যগুলো হয়ে যায় উধাও। (কোভিড+ লক ডাউন)

সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর যে কোনো সমাবেশের উপরও আসে নিষেধাজ্ঞা। রাজনৈতিক নেতাদের কাজ অনলাইনে বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে সঙ্কটে পড়া মানুষের সহায়তায়, ত্রাণ বিতরনে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মীদের তৎপরতা ছিল। ( অনলাইন সভা+ ত্রাণ বিতরণ)

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণ দেখিয়ে মহামারীকালেও সংসদের কয়েকটি আসনের উপনির্বাচন করেছে কমিশন। চলেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কয়েক ধাপের ভোট গ্রহণ। বড় দলগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এসব নির্বাচনে বেশির ভাগ জয়ী হয় ক্ষমতাসীনরা। আর বিএনপি বরাবরের মতোই কারচুপির অভিযোগ তোলে। ( নির্বাচন+ ইসি+ মির্জা/ রিজভীর অভিযোগের আপস)

করোনা প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপের ভূল ধরে মাঠ গরম করার চেষ্টা চালায় বিরোধীজোট। কিন্তু জমিয়ে তুলতে পারেনি আন্দোলন। ( ফখরুলের/ জাফরউল্লাহর আপস)

ফরাসি সাময়িকীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর তা কেন্দ্র করে রাজপথে সক্রিয় হয়েছিল হেফাজতে ইসলাম আর ইসলামী দলগুলো। এরমধ্যে হেফাজতে ইসলামীর আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভাজন । বছরের শেষ ভাগে এসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় সরব হন হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতা। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে সরকার ও হেফাজতের মুখোমুখি অবস্থান। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আলোচনার মধ্য দিয়ে এই বিরোধিতার অবসান ঘটাতে চাইছে। হেফাজত নেতারাও ক্রমশ অনড় অবস্থান থেকে সরে আসছেন। (হুজুরদের বিক্ষোভ +কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু ভাষ্কর্য ভাঙ্গা)

মুজিববর্ষ উদযাপনের মধ্যে দল গোছাতে বছরের শুরুতে নানা পরিকল্পনার কথা শোনালেও মহামারীর কারণে তা আর এগোয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য কয়েকটি পদ পূরণ করা হয়েছে। গঠিত হয়েছে বেশিরভাগ উপকমিটি। দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দিতে নেতারা ‍মুখে অনেক কথা বললেও কাজে তা দেখা যায়নি। বছরের শেষপ্রান্তে এসে পদ্মাসেতুর পুরোটা দৃশ্যমান হওয়ার ঘটনা কেবল দেশেই নয় বিদেশেও আওয়ামী লীগ সরকারের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

গত বছর বিএনপির কর্মসূচি ঘুরপাক খাচ্ছিল দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নিয়ে। শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেলেও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত। বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমও তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি গঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির অভ্যন্তরে নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের খবর জোরালো হয়েছে বছরের শেষ ভাগেও। তবে সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুমকি ছিল বিএনপি নেতাদের মুখে।

সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি তাদের কাণ্ডারি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর অনেকটাই ম্রিয়মান। বছরের শুরুতে কাউন্সিলের পর তৃণমূলে ঘর গোছানোর কাজ শুরু করলেও মহামারীতে সে কাজ থমকে যায়। কাউন্সিলে মহাসচিব হয়েছিলেন মশিউর রহমান রাঁঙ্গা। কিন্তু জুলাই মাসে মহাসচিব পদ থেকে তাকে সরিয়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে বসানো হয়।

কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে বিভেদ দেখা দেয় বছরের শুরুতে। ভাগ হয়েছে আ স ম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিও। অন্য সব দলের মতো সিপিবি, বাসদসহ বাম দলগুলোর তৎপরতা ঘরোয়া বৈঠক, মানববন্ধনে সীমিত ছিল। বছরের মাঝামাঝিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর সরব হয়েছিল বাম দলগুলো, তবে তা মিছিল-সমাবেশ-মানববন্ধনেই সীমিত ছিল। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনেও সক্রিয় হয়ে উঠেছিল তারা, তবে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান পাশ হবার পর সেই আন্দোলনও স্তিমিত হয়ে আসে।

শীতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজনীতির মাঠে স্বাভাবিকতা কবে ফিরবে, তা নিয়ে সংশয় কাটেনি।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

করোনার ছোবলে বছরজুড়েই স্থবির রাজনৈতিক কর্মকান্ড

আপডেট সময় : ০২:০৯:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

করোনার ছোবলে বছরজুড়েই স্থবির প্রায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড। নিরুত্তাপ রাজনীতি এখনো সচল হয়নি। নেই সভা-সমাবেশ বা রাজনৈতিক কোলাহল। করোনাকালে স্থানীয় সরকারসহ কয়েকটি উপনির্বাচনে কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও পুরো বছরই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়নি রাজনীতি। সীমাবদ্ধ ছিল ভার্চুয়াল মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তৃতা-বিবৃতিতেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ জোট-মহাজোটের তেমন কোনো কার্যক্রমও ছিল না।

২০২০ সালের ‍শুরুতে দেখা দেয় কোভিড-১৯ মহামারী। জীবন বাঁচাতে মাঠ আর রাজপথ ছেড়ে রাজনীতি আশ্রয় নেয় ঘরের কোনে। মিছিল, সমাবেশের মতো জনসংযোগের চেনা দৃশ্যগুলো হয়ে যায় উধাও। (কোভিড+ লক ডাউন)

সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর যে কোনো সমাবেশের উপরও আসে নিষেধাজ্ঞা। রাজনৈতিক নেতাদের কাজ অনলাইনে বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে সঙ্কটে পড়া মানুষের সহায়তায়, ত্রাণ বিতরনে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মীদের তৎপরতা ছিল। ( অনলাইন সভা+ ত্রাণ বিতরণ)

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণ দেখিয়ে মহামারীকালেও সংসদের কয়েকটি আসনের উপনির্বাচন করেছে কমিশন। চলেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কয়েক ধাপের ভোট গ্রহণ। বড় দলগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এসব নির্বাচনে বেশির ভাগ জয়ী হয় ক্ষমতাসীনরা। আর বিএনপি বরাবরের মতোই কারচুপির অভিযোগ তোলে। ( নির্বাচন+ ইসি+ মির্জা/ রিজভীর অভিযোগের আপস)

করোনা প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপের ভূল ধরে মাঠ গরম করার চেষ্টা চালায় বিরোধীজোট। কিন্তু জমিয়ে তুলতে পারেনি আন্দোলন। ( ফখরুলের/ জাফরউল্লাহর আপস)

ফরাসি সাময়িকীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর তা কেন্দ্র করে রাজপথে সক্রিয় হয়েছিল হেফাজতে ইসলাম আর ইসলামী দলগুলো। এরমধ্যে হেফাজতে ইসলামীর আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভাজন । বছরের শেষ ভাগে এসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় সরব হন হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতা। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে সরকার ও হেফাজতের মুখোমুখি অবস্থান। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আলোচনার মধ্য দিয়ে এই বিরোধিতার অবসান ঘটাতে চাইছে। হেফাজত নেতারাও ক্রমশ অনড় অবস্থান থেকে সরে আসছেন। (হুজুরদের বিক্ষোভ +কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু ভাষ্কর্য ভাঙ্গা)

মুজিববর্ষ উদযাপনের মধ্যে দল গোছাতে বছরের শুরুতে নানা পরিকল্পনার কথা শোনালেও মহামারীর কারণে তা আর এগোয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য কয়েকটি পদ পূরণ করা হয়েছে। গঠিত হয়েছে বেশিরভাগ উপকমিটি। দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দিতে নেতারা ‍মুখে অনেক কথা বললেও কাজে তা দেখা যায়নি। বছরের শেষপ্রান্তে এসে পদ্মাসেতুর পুরোটা দৃশ্যমান হওয়ার ঘটনা কেবল দেশেই নয় বিদেশেও আওয়ামী লীগ সরকারের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

গত বছর বিএনপির কর্মসূচি ঘুরপাক খাচ্ছিল দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নিয়ে। শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেলেও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত। বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমও তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি গঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির অভ্যন্তরে নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের খবর জোরালো হয়েছে বছরের শেষ ভাগেও। তবে সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুমকি ছিল বিএনপি নেতাদের মুখে।

সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি তাদের কাণ্ডারি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর অনেকটাই ম্রিয়মান। বছরের শুরুতে কাউন্সিলের পর তৃণমূলে ঘর গোছানোর কাজ শুরু করলেও মহামারীতে সে কাজ থমকে যায়। কাউন্সিলে মহাসচিব হয়েছিলেন মশিউর রহমান রাঁঙ্গা। কিন্তু জুলাই মাসে মহাসচিব পদ থেকে তাকে সরিয়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে বসানো হয়।

কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে বিভেদ দেখা দেয় বছরের শুরুতে। ভাগ হয়েছে আ স ম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিও। অন্য সব দলের মতো সিপিবি, বাসদসহ বাম দলগুলোর তৎপরতা ঘরোয়া বৈঠক, মানববন্ধনে সীমিত ছিল। বছরের মাঝামাঝিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর সরব হয়েছিল বাম দলগুলো, তবে তা মিছিল-সমাবেশ-মানববন্ধনেই সীমিত ছিল। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনেও সক্রিয় হয়ে উঠেছিল তারা, তবে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান পাশ হবার পর সেই আন্দোলনও স্তিমিত হয়ে আসে।

শীতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজনীতির মাঠে স্বাভাবিকতা কবে ফিরবে, তা নিয়ে সংশয় কাটেনি।