কলকাতার ‘খেলা হবে’ মাদ্রিদে
- আপডেট সময় : ১২:৪১:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১৭৬৬ বার পড়া হয়েছে
ফুটবলের সূত্রে আরো কাছাকাছি আসতে চলেছে কলকাতা ও মাদ্রিদ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন সফরে হতে পারে বোঝাপড়া।
কলকাতা যেমন ফুটবলের শহর, তেমনই গোটা বিশ্বে ফুটবলের অন্যতম তীর্থ হিসেবে পরিচিত স্পেনের শহর মাদ্রিদ। রিয়েল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এখানকার সমীহ জাগানো দুটি নাম। ফুটবলের ময়দানে এই দুই শহরের যোগসূত্র আরো নিবিড় করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পেন সফরে।
আজ সকালেই কলকাতা ছেড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী বৃহস্পতিবার, ১৪, সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী স্পেনের পেশাদার ফুটবল লিগ লা লিগার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন। এই বৈঠকে তার সঙ্গে থাকবেন কলকাতার তিন বড় ক্লাব, ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান ও মহামেডানের কর্তারা।
আলোচনায় সৌরভ
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ময়দানের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার সূত্রে। বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। থাকার কথা ছিল ভারতের ফুটবল অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীরও। তিনি ব্যক্তিগত কারণে থাকছেন না বলেই খবর।
বৈঠকের কথা লা লিগা কর্তৃপক্ষ তাদের সামাজিক মাধ্যমেও জানিয়েছে। ফুটবল নিয়ে দুই শহরের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র কীভাবে প্রসারিত করা যেতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে থাকবেন লা লিগার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার তাভেজ। আলোচনা শেষে ‘মউ’ স্বাক্ষরিত হতে পারে।
সেতু ফুটবল
কলকাতার সঙ্গে মাদ্রিদের ফুটবলের সেতু আগেই তৈরি হয়েছে। ২০১৪ সালে শুরু হয় ইন্ডিয়ান সুপার লিগ। সেই প্রতিযোগিতায় প্রথম বছর চ্যাম্পিয়ন হয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ফ্রাঞ্চাইজি অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা।
এই ক্লাব পরে এটিকে মোহনবাগান ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস-এ পরিবর্তিত হয়েছে। আগে লা লিগা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য জড়িত থেকেছে ত্রিপুরার ফুটবলের সঙ্গে। ২০২১ সালে আগরতলায় একটি ফুটবল শিবির করেছিল তারা।
শতবর্ষ প্রাচীন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই লিগ কীভাবে কলকাতার ফুটবলকে সমৃদ্ধ করতে পারে, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন অতীত থেকে বর্তমানের ফুটবলার এবং সমর্থকরা।
ফুটবল জগতের প্রতিক্রিয়া
ভারতের জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলের সৈয়দ রহিম নবি বলেন, “দুই দেশের মধ্যে ফুটবল নিয়ে আদানপ্রদান হলে খুবই ভালো। আমাদের ছেলেরা ওখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। ওখান থেকে যারা প্রশিক্ষণ দিতে আসবেন তাদের কাছ থেকে আমাদের শিখতে হবে।”
মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাস কলকাতার তিন বড় ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেছেন। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “যুব স্তরে পারস্পরিক সহযোগিতা দরকার। তা হলে কম বয়স থেকেই অনেক উন্নতমানের প্রশিক্ষণ পাবে আমাদের ফুটবলাররা। এর সঙ্গে ওদের একাডেমিতে জায়গা পেলে সেটা শুধু কলকাতা নয়, গোটা দেশের ফুটবলের জন্যই কাজে আসবে।”
ময়দানে দাপিয়ে খেলা জাতীয় দলের সাবেক তারকা মেহতাব হোসেন একই সুরে বলেন, “শুধু বাংলা নয়, আমাদের দেশের ফুটবল উপকৃত হবে স্পেনের সঙ্গে বোঝাপড়া হলে। অনূর্ধ্ব ১৭ দলে একটাও বাঙালি ছেলে নেই, এটা দেখে খুব খারাপ লাগে। যদি চুক্তি হয়, তা হলে বাংলা থেকে বেশি সংখ্যায় প্রতিভাবান ফুটবলাররা উঠে আসবে বলে আশা রাখি।”
বড় দলের সাবেক গোলরক্ষক অভ্র মণ্ডল বলেন, “শুধু বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসে সফর করলে হবে না, তাদের এখানে থেকে কাজ করতে হবে। একইভাবে এখানকার ফুটবলারদের ওখানে থেকে শিখতে হবে। তবেই এই উদ্যোগ সার্থক হবে।” মোহনবাগানের ফুটবল সচিব দেবাশিস দত্ত ডয়চে ভেলেকে জানান, এই বিষয়ে তিনি এখনই কিছু বলতে চান না।
মোহনবাগান ক্লাবের সঙ্গে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বোঝাপড়ায় কাঁটা হয়েছিল দলের নাম। এটিকে মোহনবাগান নামটি সমর্থকদের একটা বড় অংশ মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে আন্দোলনও হয়। অবশেষে এটিকে শব্দটি বাদ দিতে হয় ক্লাবের নাম থেকে।
এমনই আবেগে ভরা কলকাতার ফুটবলের সঙ্গে কীভাবে জুড়বে মাদ্রিদ, তা নিয়ে কৌতূহলী বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা।
ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ