কিশোর গ্যাং প্রধান জয়নালের পরিবর্তে স্কুলছাত্র জয়নালকে ক্রসফায়ারে হত্যা করে পুলিশ
- আপডেট সময় : ০৫:৫৩:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫৩৬ বার পড়া হয়েছে
এক বছর আগে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কিশোর গ্যাংয়ের নেতা জয়নালের পরিবর্তে বায়েজিদ স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র আরেক জয়নালের জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়া হয়। শুধু তাই নয় নিহত দেখিয়ে মামলার চার্জশিট থেকে আসামীর নাম বাদ দেয় পুলিশ। পরে আদালতে গিয়ে বলেন, আসামী কিশোর গ্যাংয়ের নেতা জয়নাল দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে সিএমপি পুলিশ কমিশনার বলেন, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দিয়েই বিষয়টি তদন্ত করা হবে। এদিকে সন্তান হত্যার বিচার চান স্কুল ছাত্র জয়নালের বাবা-মা।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন বায়েজিদ টেক্সটাইল ভকেশনাল ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জয়নাল। নিহত হওয়ার দু’দিন আগে গভীর রাতে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর ৪৮ ঘন্টারও বেশী সময় অজ্ঞাত স্থানে রেখে আমিন জুট মিলের মাঠে বন্দুকযুদ্ধের কথা বলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মৃত্যু হয় তার। ওই সময় পুলিশ জানায়, নিহত জয়নাল একটি কিশোর গ্যাংয়ের নেতা। তার বিরুদ্ধে শাহ আলম নামের একজনকে আহত করার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
ঘটনার এক বছর পর ওই মামলার বাদী আদালতকে জানায়, তার মামলার আসামী জয়নাল এখনো প্রকাশ্যে ঘুরছে। ঘটনার ভেতরে গিয়ে জানতে পারে, নামের মিল থাকায় নিরীহ স্কুলছাত্র আরেক জয়নালকে ধরেছিলো পুলিশ। তাহলে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি আসলে কি ছিলো, সে বিষয়ে আদালতের নজরে আনার কথা জানান মানবাধিকার কর্মীরা।
সেদিনের ঘটনা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন জয়নালের বাবা-মা। বলেন, নিজেদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না থাকায় মামলা করবেন না তারা। তবে প্রধানমন্ত্রী তাদের সন্তান হত্যার বিচার করবেন– এমন আশা আছে তাদের। নিরপরাধ জয়নালের মৃত্যুতে আজও চোখের পানি ফেলছেন প্রতিবেশীরাও।
এদিকে, পুলিশ কমিশনার বললেন, ঘটনাটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছেন তারা। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার নেয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর পুরনো সেই মারামারির মামলা থেকে জয়নালের নাম কেটে দেয় পুলিশ। এক বছর পর মামলার বাদী ফের জীবিত জয়নালের নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন আদালতে। আগামী ১৩ অক্টোবর বিষয়টি শুনানীর জন্য দিন নির্ধারণ করেছে আদালত।