খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় একটি গুজবকে কেন্দ্র করে শুরু হয় সহিংসতা
- আপডেট সময় : ০৬:৫০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ১৬৬৭ বার পড়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তবর্তী সরকারকে বিব্রত করতেই পরিকল্পিতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতা তৈরীর অপচেষ্টা শুরু করেছে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা। বলির পাঠা বানানো হচ্ছে পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায় ও সহজ-সরল বাঙ্গালীদের। আর দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোকে। দেরিতে হলেও বিষয়টি বুঝতে পেরেছে পার্বত্য জেলার বাসিন্দারা। যদিও এরইমধ্যে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। তবে তা পুনরুদ্ধারে একমত সবাই।
বুধবার রাতে খাগড়াছড়ির দুর্গম দীঘিনালায় একটি গুজবকে কেন্দ্র করে শুরু হয় সহিংসতা। এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে মিছিল হয় রাঙ্গামাটিতে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের আঞ্চলিক কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিল থেকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত অতর্কিত হামলা চালায় বনরূপা বাজারের বিভিন্ন স্থাপনায়। সহিংসতার তীব্রতা বাড়াতে হামলা চালানো হয় মসজিদে।
মুহুর্তে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। আক্রান্ত হয় বাজারের পাশ্ববর্তী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পাড়াগুলো। ঘটনার আকস্মিকতা বিস্মিত করে স্থানীয় নেতাদের।
পাহাড়ে বসবাসরত সকলেই ছোট-বড় দাঙ্গা-হাঙ্গামার সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু আগের ঘটনাগুলোর সঙ্গে মেলাতে পারছেন না আকস্মিক সহিংসতার
চরিত্র। হামলায় নেতৃত্ব দেয়া লোকজনও সব অপরিচিত। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের মানুষেরা জানান, হামলার হাত থেকে তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেন বাঙালি প্রতিবেশীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালিরা সবাই সবার পরিচিত হলেও হামলাকারিদের চেনেন না কেউ।
আঞ্চলিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পালিয়ে যান রাঙামাটি আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে কয়েকদিনে মধ্যে ফিরে আসেন স্থানীয় এমপি দীপঙ্কর তালুকদারসহ অন্যরা।
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উস্কানিও দিয়েছেন তারা।
ঘটনার পর শনিবার তিন উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল রাঙামাটিতে বৈঠক করেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে। সেখানে অভিযোগ ওঠে– জাতিসংঘ অধিবেশনসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে হেয় করা এবং নতুন সরকারকে বিতর্তিক করতেই পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চলছে। যদিও জেলা প্রশাসকের দাবি এসব চক্রান্ত ব্যর্থ করতে তৎপর প্রশাসন।
ষড়যন্ত্র হোক, আর সহিংসতাই হোক এই ঘটনা কেন্দ্র করে পাহাড়ে বসবাস করা সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সম্প্রীতিতে যে ক্ষত তৈরী হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।