গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
- আপডেট সময় : ০৭:৫৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ১৫৮৪ বার পড়া হয়েছে
গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে বলো কি হবে, জীবন খাতার ছিন্ন পাতা বেহিসাবে ভরে রবে। জীবনের এই হিসেব চুকিয়ে দিয়ে ভোরে চিরবিদায় নিয়েছেন কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বেতার, টেলিভিশন, সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার গান রচনা করেছেন তিনি। প্রেম, বিরহ, দেশাত্ববোধক, আধ্যাত্মিক বিষয়ে লেখা তার বেশিরভাগই গানই কালজয়ী। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বস্তরের মানুষ। কাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর এফডিসিতে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে এই গীতি-কবিকে।
গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তাল-সুরের মেলবন্ধনে কালজয়ী এক গান। যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার অনুরণন। এখনো এর সুর রক্তে শিহরণ জাগে বাঙ্গালীর।
দেশের গানে তার গীতি মন ছুঁয়েছে সব সময়ই। দেশের প্রতি তার ভালোবাসা ফুটে উঠেছে তা লেখনীতে। স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম নিয়ে গান লিখে অমরত্ব পান এই গীতিকবি।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার। কিংবদন্তী এক নাম। ফিরে আসবেন না আর এই ছোট্ট সোনার দেশে। সুরের জগতে তার বলিষ্ঠ লেখনী বাংলার গানের ভাণ্ডারকে করেছ সমৃদ্ধ। ২০ হাজার গানের বেশির ভাগই দাগ কেটে আছে বাঙ্গালীর মনে। ৬০’র দশকে প্রেম-বিরহের বর্ণনা তার ফুটে উঠেছে লেখার সাবলীলতায়। এ যেন সবার জীবনের অংশ।।
১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি জন্ম গাজী মাজহারুল আনোয়ারের। স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। রোববার সকালে অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলে উপল আনোয়ার। চিকিৎসকরা চেষ্টা করে জ্ঞান ফেরাতে পারেন নি। সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন বাঙ্গালীর গর্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার।
তাঁর মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ও বাসায় ছুটে গেছেন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে স্বজন পরিজন সবাই। জানিয়েছেন শ্রদ্ধাসহ ভালোবাসা।
গুণী এই ব্যক্তি একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও সুরকার। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ ১৯৮২ সালে মুক্তি পায়। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৪১টি।তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। পাঁচ পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
সবার ভালোবাসা পেছনে ফেলে চলে গেলেন বহু কালজয়ী গানের স্রষ্টা।
গানের খাতায় আর কখনোই লিখবেন না স্বরলিপি। সেখানে বসবে না সুর। নতুন করে আর বাজবে না তার লেখা গান।
চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তবে যতদিন এ গানগুলো বাজবে ততদিন মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার।