চলচ্চিত্র কি তবে অভিভাবকহীন?
- আপডেট সময় : ০৯:৪৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জুন ২০২২
- / ১৫৭৫ বার পড়া হয়েছে
করোনার আগে থেকেই বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নাজুক অবস্থায়। তারপর করোনায় শেষ একটা ঝড়। মিশন এক্সট্রিম, মুখোশ, শান, গলুই পর্যায়ক্রমে মুক্তির পর মৃতপ্রায় এই শিল্পে আবারো প্রাণের সঞ্চার হয়। স্ফুলিঙ্গ, রাত জাগা ফুল, আগামীকালের মত শৈল্পিক ছবির পাশাপাশি বিদ্রোহী এর মত পুরোপুরি কমার্শিয়াল ছবিরও দরকার ছিল।
সবশেষ মুক্তি পেল তালাশ আর অমানুষ। ছবি দুটি মুক্তির আগে ঈদের মতন একটা আমেজও তৈরি হয়েছিল। একদিকে অনন্য মানুন ও নিরবের প্রচারনা আর অন্যদিকে সৈকত নাসির, আদর ও বুবলীর প্রচারনা। আবারো যেন নতুন দিনের নতুন সূচনার পথে। এমন অবস্থায় ছবি দুটি মুক্তির দিন থেকেই টানা বৃষ্টি আর দেশের একাংশে বন্যায় শুক্রবারের সেলে একটা প্রভাব পড়ে। তবুও ভাল কন্টেন্টের প্রতি দর্শকের আগ্রহে ওটিটি’র এই যুগে আমরা সাহস পাই। নতুন নতুন সিনেপ্লেক্স মিনিপ্লেক্স হচ্ছে, কিছু সিংগেল স্ক্রীন রিনোভেট হচ্ছে। আমরা আশায় বুক বাঁধি!
হ্যাঁ, এটা সত্য, আমাদের সব সিনেমাই দশে দশ হয় না। কিন্তু চেষ্টা তো চলছে! নকল গল্পের সিনেমা বন্ধ হল, অশ্লীলতা বন্ধ হল, গলা কাটা পোস্টার নেই, প্রিন্ট কোয়ালিটি আর টেকনিকালি ডেভেলভড হচ্ছে- এসব কি পজিটিভ না? সাংবাদিক ভাইরা সবসময় সিনেমার প্রমোশন করে মন থেকে, তাদের পাশে পেয়েছি আমরা সবসময় এবং এখনও।
কিন্তু গুটি কয়েক ভাইরা সম্ভবত আর চাচ্ছেন না বাংলা সিনেমা হউক। বাংলাদেশের তারকাদের নিউজ তাদের আর ভাল লাগছে না। এদেশের হলে বাংলা ছবি নেমে গিয়ে বিলেতি ছবি চলবে আর তারা সেটারই হয়তো নিউজ করবে! ব্যাক্তিগত মান অভিমান দেখানোর জায়গা কি তাহলে সংবাদের কলাম? আফসোস, আজ আমরা সবাই বিভিন্ন দলে বিচ্ছিন্ন। আওলাদ চাচাকে খুব মিস করি। আমরা কি তবে অভিভাবকহীন? চলচ্চিত্র কি তবে অভিভাবকহীন? আমি এখনও বড় গলায় বলতে পারি, এই ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবেই।
শাকিব খানের পপুলার টাইপ সিনেমা যেমন দরকার, শুভ সিয়ামকেও দরকার, আবার সাইমন আদর নিরব ইমন রোশানকে যেমন দরকার মোশারফ চঞ্চল নিশোদেরকেও দরকার এই ইন্ডাস্ট্রির। আর বছরে একটা বিগ বাজেটের অনন্ত জলিলের সিনেমাও আমাদের দরকার।
আমাদের চলচ্চিত্রে নতুনের কেতন না উড়লে, ভাল গল্পের ভাল কন্টেন্ট না হলে, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ না হলে, খামাকা দর্শকের দোষ দিয়ে লাভ নেই… সিনেমা হলের পাশাপাশি এখন আয়ের বড় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে ওটিটি, ডিজিটাল, স্পন্সর, টিভি রাইটস, বহির্বিশ্বে সিনেমা মুক্তি, এয়ারলাইনস রিলিজ ও ফেস্টিভেল। আরও অনেক অনেক কথা, অন্যদিন বলবো।
লিখেছেন জাহিদ হাসান অভি (কর্ণধার টাইগার মিডিয়া)।