জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করেই শ্রীলঙ্কায় চলছে গণবিক্ষোভ, একজনের মৃত্যু
- আপডেট সময় : ০২:০২:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২
- / ১৫৪৬ বার পড়া হয়েছে
শ্রীলঙ্কাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জরুরি অবস্থা গণবিক্ষোভকে আরো উস্কে দেবে বলে জানিয়েছে বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ভবনের বাইরে বিক্ষোভের সময় কাঁদানে গ্যাসসেলের আঘাতে ও শ্বাসকষ্টে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
আইন-শৃংখলা বাহিনী গণজমায়েত ছত্রভঙ্গ করে দিলেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে চলছে আন্দোলন।
এদিকে, সাবেক রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া এখন চীন-ভারতের নেপথ্য সমর্থনে মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন।
জ্বালানি সংকট, খাদ্য ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতির জেরে গত এপ্রিল থেকে গণবিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগপর্যন্ত শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে ছিল রাজাপাকসে সাম্রাজ্যেরই আধিপত্য।
সেই পরিবারেরই সবচে’ প্রভাবশালী সদস্য সদ্য পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। আর, তাঁকেই রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে পালাতে হলো।
দু’মাস আগেও গোতাবায়া বিক্ষোভকারীদের গণদাবি উপেক্ষা করে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা দেন। শনিবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী তাঁর সরকারি বাসভবন দখলে নিলে তিনি সেনা-সমর্থনে আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হন, প্রতিশ্রুতি দেন ক্ষমতা ছাড়ার।
একই পরিবারের সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল মঙ্গলবার দেশ ছেড়ে যেতে চাইলে জনগণের ক্ষোভ আরও প্রকট হতে পারে আশঙ্কায় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাঁকে বাধা দেন। তবে, শেষ পর্যন্ত বাসিলও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গোটাবায়ার এই ছোট ভাই মার্কিন নাগরিক। এদিকে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া মালদ্বীপে গেলেও, সেখানে থাকতে না পেরে এখন সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা তাঁর।
শ্রীলঙ্কার কাছে এখন জ্বালানি আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নেই।
বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতা রাষ্ট্রীয়ভাবে ঋণখেলাপি বানিয়েছে।
গত মাসেই তাদের মূল্যস্ফীতি ৫৫ শতাংশ ছুঁয়েছে।
পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কায় এবং জ্বালানি বাঁচাতে স্কুল-কলেজ অফিস-আদালতও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
১৯৪৮ সালের স্বাধীনতার পর আর কখনোই দেশটি এত বাজে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে পড়েনি।
অথচ এর মধ্যে তাঁরা তামিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে একটি রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধও পার করেছে; ২০০৯ সালে প্রতিরক্ষা সচিব থাকাকালে গোতাবায়াই চীনের সহায়তায় তামিল বিদ্রোহীদের গুঁড়িয়ে দেন।
অবশ্য শ্রীলঙ্কার বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বেশি দায়ী করা হচ্ছে করোনা মহামারি ও উচ্চমাত্রার বিদেশী ঋণকে।
করোনা মহামারিতে দ্বীপদেশটির পর্যটন খাতে ধস নামায়, বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ স্থবির হয়ে পড়ে।
ফলে থেমে গেছে জ্বালানি ও খাদ্য আমদানী।
দেশটিতে বুধবার থেকে চলছে অনির্দিষ্টকালের জরুরি অবস্থা ও কারফিউ।
এ ঘোষণা বিক্ষোভকে আরো উস্কে দেবে বলে ধারণা বিশ্ব গণমাধ্যমের।
ব্যাপক রাজনৈতিক বিভক্তি ও উপদলীয় কোন্দলে জর্জরিত লঙ্কান পরিস্থিতিকে আমলা পরামর্শে শাসকেরা আরো ঘোলাটের দিকে নিয়ে গেছেন। যা থেকে এখন বেরুনোর পথ মিলছে না।