জেল হত্যা দিবসে জাতীয় ৪ নেতার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ
- আপডেট সময় : ০২:৩৯:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর ২০২২
- / ১৭৭১ বার পড়া হয়েছে
শোকাবহ ও কলঙ্কময় জেল হত্যা দিবস আজ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জঘন্যতম ঘৃণ্য আরেকটি কালো অধ্যায়।১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে। মানবতার ইতিহাসে জঘন্যতম এই হত্যাযজ্ঞে স্তম্ভিত হয় বাংলাদেশ ও সারা বিশ্ব।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে একটি পিকআপ এসে থামে। তখন রাত আনুমানিক দেড়টা থেকে দুইটা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় সে গাড়িতে কয়েকজন সেনা সদস্য ছিল।
তারা টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে আইজি প্রিজনকে কথা বলতে বলেন। আর্মি অফিসাররা যা চায়, তাতে বাধা না দেয়ার নির্দেশ দেন খন্দকার মোশতাক
এভাবেই কারাগারে জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে জেলখানায় হত্যা করে ঘাতকরা । কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই সংঘটিত হয় ইতিহাসের নৃশংস এই হত্যাকান্ড।
সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতার চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতে এটাই ছিল বিপক্ষ শক্তির সবচে’ বড় আঘাত।
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চারনেতা। বাঙালির স্বাধীনতা ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সামনের কাতারে ছিলেন তারা। বুলেট আর বেনোয়েটের আঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচরদের। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের নজির আর একটিও নেই।
বাংলাদেশ বিরোধী এক সুগভীর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে সংঘঠিত হয় ৩রা নভেম্বরের কলঙ্কিত নৃশংসতা। হত্যাকাণ্ডের পরদিন তত্কালীন উপ-কারা মহাপরিদর্শক লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করলেও তৎকালীন শাসকরা ইনডেমনিটি দিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখে । ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি বাতিল হয় এবং মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মতোই জেলহত্যার বিচারের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হয় জাতি। যদিও আজও কার্যকর হয়নি সে বিচারের রায়।