ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি
- আপডেট সময় : ০৭:৩২:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
- / ১৬৪৯ বার পড়া হয়েছে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এলাকায় বাতাসের গতিবেগ বর্তমানে ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে। সুপার সাইক্লোন পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরী সভা করেছে উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সব আশ্রয়কেন্দ্র।
ঘূর্ণিঝড় “মোখা” ধেয়ে আসছে এমন সময়, যখন বঙ্গোপসাগরে ভরা পূর্ণিমার জোয়ার। তাই এসময় উপকূলে আঘাত করলে সম্পদ ও প্রাণহানীর আশঙ্কাও কয়েক গুণ বেশী। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে উপকূলীয় জেলা-উপজেলাগুলোতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বরগুনার প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৯ হাজার ৬১৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলার ৪২টি ইউনিয়নে গঠন করা হয়েছে ৪৯টি মেডিকেল টিম। এছাড়া সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিলসহ স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৪৬টি সাইক্লোন সেল্টার। জেলার ৯ উপজেলায় জরুরী সভা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।
পিরোজপুরের প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আগাম প্রস্তুতির ব্যাপারে সকলকে দিকনির্দেশনা দেন। সভায় পুলিশ সুপার ও ইউএনওরাসহ সরকারী-বেসরকারী দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক জানান, ৭ উপজেলায় ১ লাখ ৪০ হাজার জনের জন্য ২১৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আর শুকনা খাবার, চাল, ঢেউটিন ও নগদ ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রস্তুত ৬৩টি মেডিকেল টিম এবং রেডক্রিসেন্টের ২২০ জনসহ ১ হাজার ৭শ’ স্বেচ্ছাসেবক। সভায় পুলিশ সুপার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সব ধরনের সহযোগিতার নিশ্চয়তা দেন।
উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ থেকে চাঁদপুরবাসীকে রক্ষার্থে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে চাঁদপুর কোস্ট গার্ড। চাঁদপুর মোহনা, বেদেপল্লি, মাছঘাট, জেলেপল্লি, লঞ্চঘাট এবং যাত্রীবাহী লঞ্চে জনসচেতনতামূলক মাইকিং করছে কোস্ট গার্ড। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার। ইউএনও আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় জানানো হয়, শ্যামনগর উপজেলার ১৬৩টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত আছে। এছাড়া পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, মেডিকেল টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিম, রাস্তা পরিস্কার রাখার জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।