ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই গিয়ে ভিক্ষা, যা ঘটল প্রবাসীদের সাথে
- আপডেট সময় : ০৯:০৪:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪
- / ১৮২১ বার পড়া হয়েছে
প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে বলেন, ‘নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করে যে উপার্জন করা হয়, তাই সর্বোত্তম’ (মেশকাত)। একই সঙ্গে প্রিয় নবি (সা.) ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তাইতো কবি কবিতায় বলেছেন- ‘নবীর শিক্ষা কোরো না ভিক্ষা, মেহনত করো সবে।’ বস্তুত ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে কখনও প্রশ্রয় দেয়নি। ভিক্ষাবৃত্তি থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়-প্রধান-নিরাপদ শহর ও আমিরাতে বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাই। বিলাসবহুল জীবনযাপন, চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোকরশ্মি, আকাশচুম্বী অট্টালিকা, বিলাসবহুল হোটেল, কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জসহ ব্যবসায়িক কারণে দুবাই ভ্রমণপ্রিয়দের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। এখন শুধু ব্যবসায়ী ও টুরিস্টদের দৃষ্টিই শুধু নয় ভুক্ষুকদের নজরও পড়েছে দুবাইয়ের দিকে।
নারীর পোশাক পরিধান করে মহিলার ছদ্মবেশে মসজিদের বাইরে ভিক্ষা করার সময় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দুবাইয়ের পুলিশ। তবে লোকটির নাম ও দেশের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। লোকটি পুলিশের কাছে বলেছে নারী ভিক্ষুকরা বেশি সহানুভূতি পায় বলে বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারে। তাই আরো বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য একজন নারীর ছদ্মবেশে সে এ কাজটি করেছিল। দুবাই পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশনের জেনারেল ডিপার্টমেন্টের সন্দেহ ভাজন এবং অপরাধমূলক ঘটনা বিভাগ বলেছে, লোকটি একটি বোরকা এবং নেকাব আবৃত একজন মহিলার ছদ্মবেশে দুবাইয়ের একটি মসজিদের বাইরে ভিক্ষা করার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পবিত্র রমজান মাসে ২০২ জন ভিক্ষুককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ হলেন ১১২ জন আর নারী ৯০ জন। তারা বেশিরভাগই টুরিস্ট ভিসায় দুবাই গেছেন। ভিক্ষা করার সময়ে পুলিশের বিশেষ অভিযানে তারা হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। সংবাদমাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়লে রীতিমতো অবাক ও হতবাক হয়েছেন অনেকে।
দুবাই পুলিশের কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার আলী সালেম আল সামসি জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ে বেশি অর্থ পাওয়ার আসায় ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছিলেন আটককৃত এসব ভিক্ষুক।তিনি আরও জানান, তারা মূলত পেশাদার ভিক্ষুক নন। রমজান মাসে ধনীরা দুস্থদের সহায়তা করে থাকেন; এই শটকাট সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ভিক্ষুক সেজে তারা প্রতারণা করছিলেন।
দেশটিতে ভিক্ষাবৃত্তি একেবারেই নিষিদ্ধ। ভিক্ষাবৃত্তি একেবারেই পছন্দ করেন না আরব আমিরাতের নাগরিক ও পুলিশ প্রশাসন।বিশেষ করে পবিত্র মাহে রমজানকে পুঁজি করে ভিজিট ভিসায় এসে এ ভিক্ষাবৃত্তি বেশি করা হচ্ছে বলে পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে।এর ফলে ভিক্ষুকদের জন্য সতর্কতা জারি করে এ বিধান করা হয়। দুবাইয়ে ভিক্ষাবিরোধী কঠোর আইনও রয়েছে। রমজান মাসে ভিক্ষা করার দায়ে পাঁচ হাজার দিরহাম জরিমানা ও তিন মাস জেলের বিধান রয়েছে আরব আমিরাতে। তার পরও এশিয়ান একশ্রেণীর লোক ভিজিট ভিসায় এসে ভিক্ষাবৃত্তি করে যাচ্ছে নির্দ্বিধায়-নির্বিঘ্নে। এখানে ভিক্ষা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে ভিক্ষা প্রদান না করতেও উদ্বুদ্ধ করা হয়। দুবাই পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, যারা নির্দেশনা অমান্য করে ভিক্ষা করবেন এবং ধরা পড়বেন তাদের দিতে হবে জরিমানা। সঙ্গে অভিযুক্তদের তিনমাসের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
তাইতো কথায় আছে- চোরের দশ দিন গেরস্তের এক দিন। শটকাটে টাকা ইনকাম করতে গিয়ে ধরা খেয়ে জরিমানাসহ ১৪ শিকে হলো শেষ ঠাই।