১১:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

নতুন কৌশলে গুজব ও ভুয়া খবর

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১১:৩১:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১৭৩০ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গুজবনির্ভর সংবাদ পরিবেশন বা ভুয়া খবর প্রচার বেশ পুরোনো বিষয়। ফ্যাক্ট চেকারদের গ্রুপগুলো সেগুলো আগে ধরিয়েও দিয়েছে। তবে এবার এসেছে ভুয়া কলাম বা ভুয়া বিশেষজ্ঞদের কলাম।

সেগুলো  ইংরেজিতে  কিছু অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখান থেকে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমও ছেপেছে। এএফপির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, লেখক হিসেবে যাদের নাম ও পরিচয় দেয়া হয়েছে ওইসব কলামে, বাস্তবে তাদের অস্তিত্বই নেই। এরকম মোট ৩৫ জন ভুয়া কলামিষ্টের ৭০০ নিবন্ধ গত এক বছরে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো সরকারের পক্ষে প্রশংসা করে লেখা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উন্নয়ন কর্মসূচি, কূটনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রশংসা করে কথিত ওই নিবন্ধগুলো দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এএফপির অনুসন্ধান বলছে, এসব লেখকভুয়া পরিচয়, ছবি এবং নামব্যবহার করেছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া, ওয়াশিংটনভিত্তিক ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের সাউথ এশিয়া ব্রিফসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসব লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

কথিত বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন। তাদের কেউ কেউ আবার প্রকৃত বিশ্লেষকদের নামে বানোয়াট মন্তব্যও উদ্ধৃত করেছেন।

লেখাগুলোতে বতর্মান সরকারের প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে। বিশেষ করে চীনের প্রতি জোরালো সমর্থন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

কথিত কলামিস্ট হিসেবে আলোচিত নামগুলোর মধ্যে ১৭টির সঙ্গে পশ্চিমের এবং এশিয়ার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত সংযোগ দেখা যায়। তাদের মধ্যে ৯ জন যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন বলে পরিচয়ে লিখেছেন, সেসব বিশ্ববিদ্যালয় এএফপিকে নিশ্চিত করেছে, ওইসব নাম তারা কখনো শোনেনি। এসব কলামিস্টের মধ্যে আটজন যেসব ছবি ব্যবহার করেছেন, সেগুলো অন্য মানুষের। তাদের মধ্যে ভারতের একজন জনপ্রিয় ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সারের ছবিও রয়েছে।

কথিত লেখকদের একজনের নাম ডরিন চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতার সমালোচনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশংসা করে অন্তত ৬০টি নিবন্ধ লিখেছেন। ডরিন চৌধুরী তার পরিচয়ে একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন বলে জানিয়েছেন, সে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তার নামে কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি।

ব্যাংকক পোস্ট এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের একটি ব্লগসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন ফুমিকো ইয়ামাদা নামে একজন। তাকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলা হয়েছে। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার উপস্থিতির কোনো প্রমান নেই এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ নামে সেখানে গবেষণার কোনো ক্ষেত্রও নেই।

নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজের একজন অধ্যাপক জেরার্ড ম্যাকার্থি বলেছেন, পৃথ্বীরাজ চতুর্বেদী নামে মিয়ানমারের প্রতি ‘পশ্চিমা দ্বিচারিতার’ নিন্দা করে একটি নিবন্ধ তার চোখে পড়েছে। এতে তার নামে সম্পূর্ণ বানোয়াট উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক গুজব বা ফেক নিউজের প্রবণতা বেশ পুরোনো। এর উদ্দেশ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করা। আবার অনলাইনে লাইক, ক্লিক পাওয়াও একটা লক্ষ্য। এই গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনি, সাম্প্রদায়িক  হামলা ও নিরীহ মানুষের ক্ষতির কারণ ঘটছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য সরকারের অনুদান নিয়েছেন- সম্প্রতি এরকম একটি ব্যাংক চেকের ফেক ছবিও বেশ ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমন রহমানের নেতৃত্বে ‘ফ্যাক্ট ওয়াচ’ টিম কাজ শুরু করে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই। তার নিয়মিতভাবে পেশাদার হিসেবে গুজব, ফেক নিউজ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ” শুরুর দিকে  বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের অনলাইনে নানা ধরনের  ফেক নিউজ ছাপা হতো। এটা হতে পারে লাইক , কমেন্ট পাওয়ার জন্য বা না বোঝার কারণে। তবে এই প্রবণতা কমেছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং একটু কম গ্রহণযোগ্য অনলাইন পোর্টালে এই ধারা অব্যাহত আছে।”

“কিন্তু সমস্যা হলো যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করেন, তারা কিন্তু থেমে নেই। এটা রাজনৈতিক গোষ্ঠী করে, কোনো স্বার্থানেন্বষী মহল করে, সেটা বলতে গেলে এক ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।  তারা জেনেশুনেই এটা করে। নির্বাচনের আগে সেটা আরো বাড়বে বলে মনে হয়,” বলেন অধ্যাপক সুমন রহমান।

তিনি জানান, ” লাইক কমেন্টের জন্য ফেক নিউজ বা গুজবের প্রবণতা কিছুটা কমলেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গুজব, ফেক নিউজ, প্রচারণা এটা না কমে , বরং বেড়েছে এবং এটা সংঘবদ্ধভাবে করা হচ্ছে।”

তার কথা, “প্রচলিত ধারণা ছিল গুজব, ফেক নিউজ শুধু খারাপ বিষয় নিয়েই করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি দেখা গেল ভুয়া কলামিস্ট, অস্তিত্বহীন কলামিস্টের নামে সরকারের গুণগানমূলক গুজব বা ফেক কলামের ছড়াছড়ি। এটা অর্গ্যানাইজড ওয়েতেই করা হয়েছে। এখানে বিনিয়োগ আছে। যারা করেছেন তারা সাধারণ মানুষকে তথ্যগত বিভ্রান্তিতে ফেলে সুবিধা নিতে চান।”

তার কথা, “এটা সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রেও ঘটছে। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রশংসামূলক নানা প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে। হয়তবা প্রতিবেদন তৈরি করে সরাসরি সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে. সেটাই ছাপা হচ্ছে সরাসরি। এর পিছনে চাপ থাকতে পারে. সুবিধা নেয়ার কারণ থাকতে পারে। তবে যা-ই হোক না কেন এগুলোও গুজব, ফেক নিউজ।”

“মূল বিষয়টি হলো ফ্যাক্ট অ্যান্ড নন-ফ্যাক্ট। এভাবে বিবেচনা করলেই বিষয়টি সহজ হয়ে যায়, যা সত্য নয়, তাই ফেক বা গুজব। সেটা  মানহানিকর হোক আর প্রশংসামূলক হোক, দুটোই অপরাধ। কারণ, এর মাধ্যমে মানুষকে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি করা হয়, যা সত্য নয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করার যে-কেনো ধরনের চেষ্টাই অপরাধ,” অভিমত তথ্য প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপনের।

এর পিছনে ভেস্টেড ইন্টারেস্ট গ্রুপ কাজ করে, তারা তাদের পক্ষে বা প্রতিপক্ষকে হেয় করতে এই সব অসত্য তথ্য, কলাম প্রচার করে। ভুয়া নামে প্রচার করা হলেও এগুলো কেউ না কেউ তো লেখেন, তৈরি করেন। এটা করতে তো অনেক অর্থ ব্যয় হয়। এটা অনেকটাই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করা হয়। নির্বাচনের আগে এই ধরনের প্রোপাগান্ডা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করেন জাকারিয়া স্বপন। তিনি বলেন, “এটা শুধু ভুয়া কলাম বা খবরের মধ্য দিয়ে নয়, পোস্টার , প্রচারপত্র, লিফলেটের মাধ্যমেও করা হয়। রাজনৈতিক বক্তৃতায় তো সারাক্ষণই হচ্ছে।”

তার মতে, এটা পুরনো গোয়েবলসীয় পদ্ধতি। একটি মিথ্যাকে বার বার সত্য বলে প্রচার করলে মানুষ সেটা সত্য মনে করবে।  শুধু কৌশল পরিবর্তন হয়েছে। তবে যারা যেভাবেই করুক না কেন, সেটা অপরাধ। তার কথা, “গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্য হলো পানি ঘোলা করা, মানুষকে বিভ্রান্ত করা। এর মাধ্যমে স্বার্থ উদ্ধার করা।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ভালো কলামিস্ট খুঁজছে বলে গত বছর সংবাদমাধ্যমে একটি খবর বের হয়েছিল। কলামিস্ট খোঁজার উদ্দেশ্য ছিল সরকারের ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে কলাম লেখা, সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারের জবাব দেয়া । এটাকে তারা বলেছিল আউট সোর্সিং। তাদের সম্মানি দিয়ে ‘ভালো’ লেখা লেখানোর কথা ছিল। এজন্য সংসদসীয় কমিটিকেও ভালো কলামিস্ট খুঁজে দেয়ার অনুরোধ করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা শেষ পর্যন্ত ভালো কলামিস্ট পেয়েছিলো কিনা সেই খবর আর জানা যায়নি। তবে সরকারের পক্ষে লেখা অস্তিত্বহীন কলামিস্টের কলামের তথ্য পেয়েছে এএফপি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, “বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ যে ভুয়া কলামিস্টের ঘটনাটি প্রকাশ পেলো, সেটা অভূতপূর্ব। এমনটি এর আগে কখনো দেখা যায়নি। এটা একেবারেই নতুন। এটা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হতে পারে। এর আগে আমরা ভাড়াটে লেখক, দলীয় লেখক- এসব বিষয়ে জেনেছি। কিন্তু ভুয়া লেখক, অস্তিত্বহীন কলামিস্ট একেবারেই নতুন। কিন্তু এই লেখাগুলো তো কেউ না কেউ লিখেছেন। তারা কারা? তারা একটি গ্রুপ, সংঘবদ্ধ গ্রুপ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন লেখার জন্য সম্মানির বিনিময়ে কলামিস্ট খোঁজে, তখন অনেক কিছুই বোঝা যায়। এটা তো তাদের কাজ নয়। কলামিস্ট খুঁজবে পত্রিকা, সংবাদমাধ্যম।”

তার কথা, “এই যে কলামগুলোর কথা আমরা জানলাম, এগুলোও গুজব, ফেক কলাম। যারা করেছেন, তারা হয়ত সরকারের কাছাকাছি থাকতে চান, সুবিধা নিতে চান। এটাও সরকারে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে বলে আমি মনে করি। আর সরকার সেটা মনে করলে তাদেরই উচিত এটা যারা করেছেন তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। অথবা মানহানির মামলা করা।”

মূলধারার সংবাদমাধ্যম এসব ফেক কলাম ছেপে পেশাদারিত্বের অভাব প্রমাণ করেছে বলে মনে করেন অধ্যাপক সুমন রহমান,” কোনো কলাম ছাপার আগে সেই কলামিস্টের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি। আবার দেখতে হবে যে বিষয়ে তিনি লিখছেন, সেটা নিয়ে লেখার অথরিটি তার আছে কিনা। সেটা না করেই যখন ছাপা হয়েছে তখন বুঝতে হবে সংবাদমাধ্যমের গেট কিপিং ঠিকমতো হচ্ছে না।”

তবে অধ্যাপক রাজ্জাক মনে করেন, “এগুলো আবার কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে ছেপে থাকতে পারেন। কেউ আবার জেনেশুনেই স্বার্থ বা চাপের কারণে ছাপতে পারেন। আগেই বলেছি, এই পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি ভালো গবেষণা হতে পারে এবং হওয়া জরুরি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এইসব ফেক নিউজ, কলামের টার্গেট হচ্ছেন সাধারণ মানুষ বা পাঠক, যারা এটা করেন, তারা আসলে তাদের পক্ষে বা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একটি পরিবেশ তৈরি করতে চান। তারা তা করেন ভুয়া বা অসত্য তথ্য দিয়ে। এতে সাধারণ মানুষকে প্রকৃত তথ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়। শুধু তাই নয়, তাদের অন্ধকারে রাখার চেষ্টা করা হয়। বিভ্রান্ত  করা হয়।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, “ইলেকট্রনিক বিন্যাস বা ডিজিটাল মাধ্যমে অপ্রপ্রচার, গুজব, অসত্য তথ্য, মানহানি এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা ছিল। নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনেও একই বিধান আছে। আর প্রিন্ট বা অন্য মাধ্যমে দণ্ডবিধিতে মানহানি, ক্ষতিপূরণের মামলার ব্যবস্থা আছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র কনসার্ন হলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও হতে পারে।”

“মামলা করতে হবে যিনি ক্ষতিগ্রস্ত, তাকে। এখন সরকারের প্রশংসামূলক ওইসব ভুয়া কলামে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তারা মামলা করতে পারেন। সরকার যদি নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করে, তাহলে সরকারও মামলা করতে পারে,” বলেন এই আইনজীবী।

তার কথা, “যা সত্য নয়, তা সত্য বলে প্রচার করাই হলো গুজব, অপপ্রচার। সেটা খারাপ অপপ্রচার ও ভালো অপপ্রচার দুটোই হতে পারে। কেউ যা করেননি, বলেননি- সেটা ভালো বা খারাপ যা-ই হোক না কেন, তা প্রচার করা গুজব ছাড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়।

 

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

নতুন কৌশলে গুজব ও ভুয়া খবর

আপডেট সময় : ১১:৩১:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গুজবনির্ভর সংবাদ পরিবেশন বা ভুয়া খবর প্রচার বেশ পুরোনো বিষয়। ফ্যাক্ট চেকারদের গ্রুপগুলো সেগুলো আগে ধরিয়েও দিয়েছে। তবে এবার এসেছে ভুয়া কলাম বা ভুয়া বিশেষজ্ঞদের কলাম।

সেগুলো  ইংরেজিতে  কিছু অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখান থেকে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমও ছেপেছে। এএফপির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, লেখক হিসেবে যাদের নাম ও পরিচয় দেয়া হয়েছে ওইসব কলামে, বাস্তবে তাদের অস্তিত্বই নেই। এরকম মোট ৩৫ জন ভুয়া কলামিষ্টের ৭০০ নিবন্ধ গত এক বছরে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো সরকারের পক্ষে প্রশংসা করে লেখা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উন্নয়ন কর্মসূচি, কূটনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রশংসা করে কথিত ওই নিবন্ধগুলো দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এএফপির অনুসন্ধান বলছে, এসব লেখকভুয়া পরিচয়, ছবি এবং নামব্যবহার করেছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া, ওয়াশিংটনভিত্তিক ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের সাউথ এশিয়া ব্রিফসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসব লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

কথিত বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন। তাদের কেউ কেউ আবার প্রকৃত বিশ্লেষকদের নামে বানোয়াট মন্তব্যও উদ্ধৃত করেছেন।

লেখাগুলোতে বতর্মান সরকারের প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে। বিশেষ করে চীনের প্রতি জোরালো সমর্থন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

কথিত কলামিস্ট হিসেবে আলোচিত নামগুলোর মধ্যে ১৭টির সঙ্গে পশ্চিমের এবং এশিয়ার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত সংযোগ দেখা যায়। তাদের মধ্যে ৯ জন যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন বলে পরিচয়ে লিখেছেন, সেসব বিশ্ববিদ্যালয় এএফপিকে নিশ্চিত করেছে, ওইসব নাম তারা কখনো শোনেনি। এসব কলামিস্টের মধ্যে আটজন যেসব ছবি ব্যবহার করেছেন, সেগুলো অন্য মানুষের। তাদের মধ্যে ভারতের একজন জনপ্রিয় ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সারের ছবিও রয়েছে।

কথিত লেখকদের একজনের নাম ডরিন চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতার সমালোচনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশংসা করে অন্তত ৬০টি নিবন্ধ লিখেছেন। ডরিন চৌধুরী তার পরিচয়ে একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন বলে জানিয়েছেন, সে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তার নামে কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি।

ব্যাংকক পোস্ট এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের একটি ব্লগসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন ফুমিকো ইয়ামাদা নামে একজন। তাকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলা হয়েছে। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার উপস্থিতির কোনো প্রমান নেই এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ নামে সেখানে গবেষণার কোনো ক্ষেত্রও নেই।

নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজের একজন অধ্যাপক জেরার্ড ম্যাকার্থি বলেছেন, পৃথ্বীরাজ চতুর্বেদী নামে মিয়ানমারের প্রতি ‘পশ্চিমা দ্বিচারিতার’ নিন্দা করে একটি নিবন্ধ তার চোখে পড়েছে। এতে তার নামে সম্পূর্ণ বানোয়াট উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক গুজব বা ফেক নিউজের প্রবণতা বেশ পুরোনো। এর উদ্দেশ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করা। আবার অনলাইনে লাইক, ক্লিক পাওয়াও একটা লক্ষ্য। এই গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনি, সাম্প্রদায়িক  হামলা ও নিরীহ মানুষের ক্ষতির কারণ ঘটছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য সরকারের অনুদান নিয়েছেন- সম্প্রতি এরকম একটি ব্যাংক চেকের ফেক ছবিও বেশ ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমন রহমানের নেতৃত্বে ‘ফ্যাক্ট ওয়াচ’ টিম কাজ শুরু করে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই। তার নিয়মিতভাবে পেশাদার হিসেবে গুজব, ফেক নিউজ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ” শুরুর দিকে  বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের অনলাইনে নানা ধরনের  ফেক নিউজ ছাপা হতো। এটা হতে পারে লাইক , কমেন্ট পাওয়ার জন্য বা না বোঝার কারণে। তবে এই প্রবণতা কমেছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং একটু কম গ্রহণযোগ্য অনলাইন পোর্টালে এই ধারা অব্যাহত আছে।”

“কিন্তু সমস্যা হলো যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করেন, তারা কিন্তু থেমে নেই। এটা রাজনৈতিক গোষ্ঠী করে, কোনো স্বার্থানেন্বষী মহল করে, সেটা বলতে গেলে এক ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।  তারা জেনেশুনেই এটা করে। নির্বাচনের আগে সেটা আরো বাড়বে বলে মনে হয়,” বলেন অধ্যাপক সুমন রহমান।

তিনি জানান, ” লাইক কমেন্টের জন্য ফেক নিউজ বা গুজবের প্রবণতা কিছুটা কমলেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গুজব, ফেক নিউজ, প্রচারণা এটা না কমে , বরং বেড়েছে এবং এটা সংঘবদ্ধভাবে করা হচ্ছে।”

তার কথা, “প্রচলিত ধারণা ছিল গুজব, ফেক নিউজ শুধু খারাপ বিষয় নিয়েই করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি দেখা গেল ভুয়া কলামিস্ট, অস্তিত্বহীন কলামিস্টের নামে সরকারের গুণগানমূলক গুজব বা ফেক কলামের ছড়াছড়ি। এটা অর্গ্যানাইজড ওয়েতেই করা হয়েছে। এখানে বিনিয়োগ আছে। যারা করেছেন তারা সাধারণ মানুষকে তথ্যগত বিভ্রান্তিতে ফেলে সুবিধা নিতে চান।”

তার কথা, “এটা সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রেও ঘটছে। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রশংসামূলক নানা প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে। হয়তবা প্রতিবেদন তৈরি করে সরাসরি সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে. সেটাই ছাপা হচ্ছে সরাসরি। এর পিছনে চাপ থাকতে পারে. সুবিধা নেয়ার কারণ থাকতে পারে। তবে যা-ই হোক না কেন এগুলোও গুজব, ফেক নিউজ।”

“মূল বিষয়টি হলো ফ্যাক্ট অ্যান্ড নন-ফ্যাক্ট। এভাবে বিবেচনা করলেই বিষয়টি সহজ হয়ে যায়, যা সত্য নয়, তাই ফেক বা গুজব। সেটা  মানহানিকর হোক আর প্রশংসামূলক হোক, দুটোই অপরাধ। কারণ, এর মাধ্যমে মানুষকে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি করা হয়, যা সত্য নয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করার যে-কেনো ধরনের চেষ্টাই অপরাধ,” অভিমত তথ্য প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপনের।

এর পিছনে ভেস্টেড ইন্টারেস্ট গ্রুপ কাজ করে, তারা তাদের পক্ষে বা প্রতিপক্ষকে হেয় করতে এই সব অসত্য তথ্য, কলাম প্রচার করে। ভুয়া নামে প্রচার করা হলেও এগুলো কেউ না কেউ তো লেখেন, তৈরি করেন। এটা করতে তো অনেক অর্থ ব্যয় হয়। এটা অনেকটাই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করা হয়। নির্বাচনের আগে এই ধরনের প্রোপাগান্ডা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করেন জাকারিয়া স্বপন। তিনি বলেন, “এটা শুধু ভুয়া কলাম বা খবরের মধ্য দিয়ে নয়, পোস্টার , প্রচারপত্র, লিফলেটের মাধ্যমেও করা হয়। রাজনৈতিক বক্তৃতায় তো সারাক্ষণই হচ্ছে।”

তার মতে, এটা পুরনো গোয়েবলসীয় পদ্ধতি। একটি মিথ্যাকে বার বার সত্য বলে প্রচার করলে মানুষ সেটা সত্য মনে করবে।  শুধু কৌশল পরিবর্তন হয়েছে। তবে যারা যেভাবেই করুক না কেন, সেটা অপরাধ। তার কথা, “গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্য হলো পানি ঘোলা করা, মানুষকে বিভ্রান্ত করা। এর মাধ্যমে স্বার্থ উদ্ধার করা।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ভালো কলামিস্ট খুঁজছে বলে গত বছর সংবাদমাধ্যমে একটি খবর বের হয়েছিল। কলামিস্ট খোঁজার উদ্দেশ্য ছিল সরকারের ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে কলাম লেখা, সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারের জবাব দেয়া । এটাকে তারা বলেছিল আউট সোর্সিং। তাদের সম্মানি দিয়ে ‘ভালো’ লেখা লেখানোর কথা ছিল। এজন্য সংসদসীয় কমিটিকেও ভালো কলামিস্ট খুঁজে দেয়ার অনুরোধ করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা শেষ পর্যন্ত ভালো কলামিস্ট পেয়েছিলো কিনা সেই খবর আর জানা যায়নি। তবে সরকারের পক্ষে লেখা অস্তিত্বহীন কলামিস্টের কলামের তথ্য পেয়েছে এএফপি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, “বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ যে ভুয়া কলামিস্টের ঘটনাটি প্রকাশ পেলো, সেটা অভূতপূর্ব। এমনটি এর আগে কখনো দেখা যায়নি। এটা একেবারেই নতুন। এটা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হতে পারে। এর আগে আমরা ভাড়াটে লেখক, দলীয় লেখক- এসব বিষয়ে জেনেছি। কিন্তু ভুয়া লেখক, অস্তিত্বহীন কলামিস্ট একেবারেই নতুন। কিন্তু এই লেখাগুলো তো কেউ না কেউ লিখেছেন। তারা কারা? তারা একটি গ্রুপ, সংঘবদ্ধ গ্রুপ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন লেখার জন্য সম্মানির বিনিময়ে কলামিস্ট খোঁজে, তখন অনেক কিছুই বোঝা যায়। এটা তো তাদের কাজ নয়। কলামিস্ট খুঁজবে পত্রিকা, সংবাদমাধ্যম।”

তার কথা, “এই যে কলামগুলোর কথা আমরা জানলাম, এগুলোও গুজব, ফেক কলাম। যারা করেছেন, তারা হয়ত সরকারের কাছাকাছি থাকতে চান, সুবিধা নিতে চান। এটাও সরকারে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে বলে আমি মনে করি। আর সরকার সেটা মনে করলে তাদেরই উচিত এটা যারা করেছেন তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। অথবা মানহানির মামলা করা।”

মূলধারার সংবাদমাধ্যম এসব ফেক কলাম ছেপে পেশাদারিত্বের অভাব প্রমাণ করেছে বলে মনে করেন অধ্যাপক সুমন রহমান,” কোনো কলাম ছাপার আগে সেই কলামিস্টের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি। আবার দেখতে হবে যে বিষয়ে তিনি লিখছেন, সেটা নিয়ে লেখার অথরিটি তার আছে কিনা। সেটা না করেই যখন ছাপা হয়েছে তখন বুঝতে হবে সংবাদমাধ্যমের গেট কিপিং ঠিকমতো হচ্ছে না।”

তবে অধ্যাপক রাজ্জাক মনে করেন, “এগুলো আবার কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে ছেপে থাকতে পারেন। কেউ আবার জেনেশুনেই স্বার্থ বা চাপের কারণে ছাপতে পারেন। আগেই বলেছি, এই পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি ভালো গবেষণা হতে পারে এবং হওয়া জরুরি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এইসব ফেক নিউজ, কলামের টার্গেট হচ্ছেন সাধারণ মানুষ বা পাঠক, যারা এটা করেন, তারা আসলে তাদের পক্ষে বা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একটি পরিবেশ তৈরি করতে চান। তারা তা করেন ভুয়া বা অসত্য তথ্য দিয়ে। এতে সাধারণ মানুষকে প্রকৃত তথ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়। শুধু তাই নয়, তাদের অন্ধকারে রাখার চেষ্টা করা হয়। বিভ্রান্ত  করা হয়।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, “ইলেকট্রনিক বিন্যাস বা ডিজিটাল মাধ্যমে অপ্রপ্রচার, গুজব, অসত্য তথ্য, মানহানি এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা ছিল। নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনেও একই বিধান আছে। আর প্রিন্ট বা অন্য মাধ্যমে দণ্ডবিধিতে মানহানি, ক্ষতিপূরণের মামলার ব্যবস্থা আছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র কনসার্ন হলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও হতে পারে।”

“মামলা করতে হবে যিনি ক্ষতিগ্রস্ত, তাকে। এখন সরকারের প্রশংসামূলক ওইসব ভুয়া কলামে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তারা মামলা করতে পারেন। সরকার যদি নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করে, তাহলে সরকারও মামলা করতে পারে,” বলেন এই আইনজীবী।

তার কথা, “যা সত্য নয়, তা সত্য বলে প্রচার করাই হলো গুজব, অপপ্রচার। সেটা খারাপ অপপ্রচার ও ভালো অপপ্রচার দুটোই হতে পারে। কেউ যা করেননি, বলেননি- সেটা ভালো বা খারাপ যা-ই হোক না কেন, তা প্রচার করা গুজব ছাড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়।

 

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ