নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি, প্লাবিত হয়েছে অনেক নতুন এলাকা
- আপডেট সময় : ০২:০০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০
- / ১৫৪৫ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম, জামালপুর, সিরাজগঞ্জে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে অনেক নতুন এলাকা।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে অন্তত; চার লাখ মানুষ। এ অবস্থায় চরাঞ্চলের মানুষেরা দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে নৌকায় ও ঘরের ভিতর পানি মধ্যে বসবাস করায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাদের জীবন।
জামালপুরের আবারও বাড়ছে যমুনার পানি। সকালে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। দীর্য প্রায় ১ মাসের বন্যায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে জেলার ৭ উপজেলার ৫৯ টি।
সিরাজগঞ্জে মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে যমুনা নদীর পানি চলতি বন্যায় তৃতীয় দফায় বাড়তে থাকায় এবং বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্হিতির আরও অবনিত হয়েছে। সকাল ৬টা পযন্ত ৭ সিন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৭১ সেন্টিমিটার এবং সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্ট ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে ।
ফরিদপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গেল ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমেতা এখনও বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও নতুন করে আর কোন গ্রাম প্লাবিত হয়নি।
তীব্র স্রোত ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। শরীয়তপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। বন্যার পানি না বাড়লেও শরীয়তপুরের ৪টি উপজেলার কমপক্ষে ৫০টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভা পানিয়ে তলিয়ে গেছে। পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৫০ হাজার পরিবার। পদ্মানদীর পানি সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেঃ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী, ধনবাড়ী, গোপালপুর, বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলায় নিমাঞ্চল এবং চরাঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে, আরো ৪টি পৌরসভা আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
গাজীপুরে তুরাগ ও বংশী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কালিয়াকৈর উপজেলার সুত্রাপুর ও ঢালজোড়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
মানিকগঞ্জের যমুনা নদীর পানি শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৬ সেনিটমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন নদীর নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী জেলার খালিয়াজুড়ির ধনু নদীর পানি ১২৭ সেন্টিমিটার এবং কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, পাবনায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও কমতে শুরু করেছে পদ্মা নদীর পানি। যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদ সীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পদ্মা নদীর পানি কিছুটা কমে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ০.৯৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন।