নির্বাচনী সহিংসতায় চার জেলায় নিহত চার
- আপডেট সময় : ০৬:১২:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২
- / ১৫৪৪ বার পড়া হয়েছে
সহিংসতা, কেন্দ্র দখল, গুলি, গ্রেফতার ও ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে পঞ্চম ধাপে ৭০৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা। নির্বাচনী সহিংসতায় গাইবান্ধা, বগুড়া, মানিকগঞ্জ ও চট্টগ্রামে চার জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ৫০ জনের বেশি। চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর করলডাঙ্গায় দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় গণমাধ্যমের আটটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
সাভারের আমিন বাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের ঘটনা ঘটেছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিনোদপুরে জামেয়া মদীনাতুল উলুম এতিমখানা কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়া শুরু হয়। একই সময়ে নৌকার সমর্থকরা প্রিজাইডিং অফিসারকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর সাময়িকভাবে ওই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে জেলা নির্বাচন অফিস। সালেহপুর হাজী বশীর স্কুলে এক নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ভোট দিয়ে ছবি তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মরিচারটেক কেন্দ্র থেকে। চাঁনপুরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোবাইল ফোন রেখে ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিয়েছে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় নির্বাচনী সহিংসতায় ওমকার দত্ত নামের একজন নিহত হয়েছেন। চাতরী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নে পদে ভোট বর্জন করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দিন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল, হামলা ও এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর করলডাঙ্গা ইউনিয়নের আসাদিয়া স্কুল কেন্দ্রে সংঘর্ষের সময় গণমাধ্যমের আটটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনসুর আহমেদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা হামিদুল হকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। এছাড়া একই ইউনিয়নের দক্ষিণ করোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন একজন।
জামালপুরের বকশীগঞ্জে মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী
সিদ্দিকুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোয়ার হোসেন সর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একজন কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ পুলিশ আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাকা গুলি করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহন বন্ধ রাখা হয়।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের বাচামারা ইউনিয়নের বাচামারা ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। নিহত ওই নারীর নাম ছলেমন খাতুন। দুপুরে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ওই নারী নিহত হন।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ী ইউনিয়নের জুমারবাড়ী আদর্শ ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আবু তাহের নামে একজন নিহত হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্রে ভোট বন্ধ রয়েছে। প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০জন।
আশুলিয়া ইউনিয়নের আশুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নৌকার প্রার্থী শাহাবুদ্দিন মাদবরের উপস্থিতিতে তার সমর্থকদের ব্যালটে সিল মারতে দেখা যায়।
দুপুরে কেন্দ্র পরিদর্শনে যান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর ব্যবস্থা নিতে প্রিজাইডিং অফিসারকে নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচন কমিশনার কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর কর্মীদের নিয়ে কেন্দ্রে মহড়া দেন চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাবুদ্দিন মাদবর। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ তাদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলায় বাসুদেব ইউনিয়নের দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনায় ১০ জন আহতসহ দুই মেম্বার প্রার্থীকে আটক করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগে দু’পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মেছড়া ইউপি নির্বাচনে রুপসা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বুধবার ভোরে নরসিংদীর সদর উপজেলার মনোহর দিয়া ইউনিয়নের গাংপাড়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হান্নানের ক্যাম্পে নৌকা প্রার্থী শহিদুল ইসলামের সমর্থকরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।