পরমাণু বিদ্যুৎ থেকে চিরতরে বিদায় নিচ্ছে জার্মানি
- আপডেট সময় : ০১:০৭:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
- / ১৫৭৭ বার পড়া হয়েছে
আগামী শনিবার জার্মানির শেষ তিনটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন৷ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে৷
১৯৬৭ সালে জার্মানির প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র কাজ শুরু করেছিল৷ ২০২৩ সালের ১৫ই এপ্রিল শেষ তিনটি পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ করা হবে৷ জ্বালানির উৎস হিসেবে প্রচলিত পরমাণু বিদ্যুৎ চিরকালের জন্য ত্যাগ করছে জার্মানি৷ ছয় মাস আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হলেও ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে অনিশ্চয়তার কারণে সময়সীমা কিছুকাল বাড়ানো হয়৷
German Chancellor Olaf Scholz stands behind the planned Saturday shutdown of the last three German nuclear power plants despite suggestions from his junior coalition partner that the pylons should be kept in reserve.https://t.co/89VA4JxJaw
— dpa news agency (@dpa_intl) April 12, 2023
পরমাণু বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ে জার্মানির জোট সরকারের মধ্যেও দ্বন্দ্ব পুরোপুরি কাটে নি৷ পরিবেশবাদী সবুজ দল গত বছরই শেষ তিনটি কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও উদারপন্থি এফডিপি দল জ্বালানি সংকট এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেগুলি চালু রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিল৷ শেষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস নিজের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ এফডিপি সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করলেও শলৎস নিজের সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছেন৷ এমনকি কেন্দ্রগুলি অকেজো করার বদলে রিজার্ভ হিসেবে রেখে দেবার প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছেন তিনি৷ সবুজ দলের নেতৃত্বে পরিবেশ মন্ত্রণালয় মনে করিয়ে দিয়েছে, যে জার্মানির শেষ তিনটি পরমাণু কেন্দ্র রিজার্ভ হিসেবে রাখা বেআইনি পদক্ষেপ হবে৷ তাছা়ড়া সেগুলি অকেজো করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল৷
Germany torn over energy policy as nuclear plants shut down https://t.co/bDmruBRsxC
— FT Energy (@ftenergy) April 13, 2023
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যাবার পর জার্মানিতে জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু সরকারের তৎপরতায় দ্রুত বিকল্প উৎসের ব্যবস্থা হওয়ায় ব্ল্যাকআউট বা অন্য কোনো অঘটন ঘটে নি৷ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কাও মোটামুটি সামলে নেওয়া গেছে৷ ফলে পরমাণু বিদ্যুতের উপর নির্ভরতার আর কোনো কারণ দেখছেন না বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ৷
জার্মানির জ্বালানি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি পরমাণু বিদ্যুৎ বন্ধ হবার পর ঘাটতি পূরণ করতে আরও দ্রুত গতিতে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সংগঠনের মতে, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে এমন পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি৷ ভবিষ্যতে এমন কেন্দ্র গ্যাসের বদলে হাইড্রোজেন দিয়েও চালানো সম্ভব হতে পারে৷ তবে এমন কেন্দ্রে বিনিয়োগের জন্য সরকার কোনো উৎসাহ না দেওয়ায় সেই উদ্যোগে গতি আসছে না৷
শনিবার বিদ্যুতের গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পরেও তিনটি পরমাণু কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হবে না৷ অনেক দিন ধরে সেই কাজের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ নিরাপদে সেই প্রক্রিয়া চালাতে ধীরে ধীরে চুল্লিগুলি ঠাণ্ডা করতে হবে৷ পানি ভরা চুল্লির মধ্য থেকে ফুয়েল এলিমেন্ট বার করে নিতে হবে৷ কেন্দ্র ভেঙে ফেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে৷ কেন্দ্রগুলি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হতে বেশ কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশকও সময় লাগতে পারে৷
জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর জার্মানির সরকার ২০১১ সালে পরমাণু বিদ্যুৎ পুরোপুরি বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়৷ এর আগে ২০০২ সালেও তৎকালীন সরকার নীতিগতভাবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর নতুন করে কোনো কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয় নি৷
Germany is on course to shut down its three remaining nuclear power plants on Saturday https://t.co/XiDPTYGkUs
— Sky News (@SkyNews) April 11, 2023
ডয়চে ভেলে