বহুমাত্রিক জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন সাহেদ করিম
- আপডেট সময় : ০৮:০৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০
- / ১৬০৪ বার পড়া হয়েছে
বহুমাত্রিক জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন রেবের হাতে সদ্য গ্রেফতার হওয়া, রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিম। এমএলএম ব্যবসা, আণ্ডারগ্রাউণ্ড পত্রিকা, চিকিৎসা বাণিজ্য, কর ফাঁকি, ভূয়া এফডিআর দিয়ে ঋণ আত্মসাৎ– প্রতারণার এমন কোনো শাখা বাকি রাখেনি এসএসসি পাশ এই প্রতারক। সবশেষ করোনা টেস্টে জালিয়াতি করে দেশজুড়ে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন সাহেদ। এরই মধ্যে তার মালিকানাধীন আটটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। সরকারের প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অল্প সময়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন তিনি।
মো. সাহেদ নামে পরিচিতি হলেও আসল নাম সাহেদ করিম। সাতক্ষীরার এক নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে। ১৯৯৮ সালে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়তেন। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। পিলখানায় রাইফেলস স্কুল থেকে এসএসসি পাসের পর, প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পরিবর্তে প্রতারণায় মনোযোগী হয় সে।
২০১১ সালে ধানমন্ডিতে এমএলএম ব্যবসা করে গ্রাহকদের ৫শ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন । কখনো কর্নেল, কখনো মেজর, কিংবা সচিব, যখন যেটা প্রয়োজন, তখন সেই পরিচয়েই নিজেকে পরিচয় দিতো। শুধু তাই নয়, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস ছিলেন এমন পরিচয়ও দিতেন।
বিএনপির নেতা পরিচয়ে ২০০৭ সালে রিজেন্ট হাসপাতালের অনুমোদন নেন সাহেদ করিম। যদিও ওই সময় হাসপাতাল না চালিয়ে ক্লিনিক ব্যবসা শুরু করেন । সরকার পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেওয়া শুরু করে সে। সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ নামের একটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান চালু করে নিজেকে বুদ্ধিজীবী বা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে সাহেদ।
২০০৯ সালের জুলাই মাসে প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার হয়ে কয়েক মাস জেল খেটেছেন তিনি। তবে প্রতারণা থামেনি, বরং মাত্রা বেড়ে যায়। ২০১০ সালের দিকে সাহেদ ধানমন্ডি এলাকায় বিডিএস ক্লিক ওয়ান এবং কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি নামে দুটি এমএলএম কোম্পানি খোলেন। ২০১১ সালে শত শত গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সাহেদ । প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে গা ঢাকা দেয় সে।
সম্প্রতি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের নামে শুরু হয় নতুন প্রতারণা। নমুনা সংগ্রহ করে করোনা টেস্টের হাজার হাজার ভুয়া রিপোর্ট দেয়।