ভারতের ছেড়ে দেয়া পানিতে বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা

- আপডেট সময় : ০৭:৪৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
- / ১৯১২ বার পড়া হয়েছে
ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে দেশের আট জেলা। এরমধ্যে ফেনী ও নোয়াখালীতে বন্যাকবলিত ২২ লাখেরও বেশি মানুষ। নতুন করে পানি ঢুকতে শুরু করেছে ফেনীর সদর উপজেলায়। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ। সড়ক ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন জেলার বাসিন্দারা। বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে ৭ নদীর পানি। ফলে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ।পানিবন্দীদের উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে সেনা ও নৌবাহিনী । এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের -পাউবো জানায় , উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ফেনীতে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকে ডুবতে শুরু করেছে নতুন নতুন এলাকা। ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান জানিয়েছন, জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখেরও বেশি বর্তমানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।
কয়েকদিনের বৃষ্টি আর ভারতের ছেড়ে দেয়া পানিতে তলিয়ে গেছে পুরো নোয়াখালী। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে ৯ উপজলায়। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক-উচ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আবহাওয়া অফিস বলছে, ২৪ ঘটায় ১৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে নোয়াখালীতে।
ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বাড়ছে হবিগঞ্জের খোয়াই নদীর পানি। তলিয়ে গেছে রিচি ও লোকড়া ইউনিয়নের হাওরে রোপা-আমন ক্ষেত। পুকুরের মাছ ভেসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খামারিদের। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, খোয়াই নদীর পানি চুনারুঘাটের বাল্লা পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে মৌলভীবাজারের ৪ উপজেলা। পানিতে তলিয়েছে শতাধিক বসতভিটা। জেলার কুলাউড়া, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও সদর উপজেলায় মনু ও ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়েছেন দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ। গবাদিপশু ও আসবাবপত্র নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।
২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ফের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে খাগড়াছড়িতে। প্লাবিত হয়েছে পৌর এলাকাসহ জেলা সদরের বিস্তীর্ণ এলাকা। তলিয়ে গেছে পৌর বাস টার্মিনাল। জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, খাগড়াছড়ি পৌরসভায় ১৮টিসহ পুরো জেলায় ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে।
ভারতের পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার উপজেলার নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি চার ইউনিয়নের ৩৪টিরও বেশী গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি, সবজিক্ষেতসহ অসংখ্য মাছের ঘেড়।
অব্যাহত বৃষ্টি ও ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ক্রমেই ফুঁসে উঠেছে কুমিল্লার গোমতী নদী। বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, বাঁধ রক্ষায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দরা কাজ করছেন। এদিকে, আকস্মিক বন্যায় দুদিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
পটুয়াখালীতে ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। টানা বৃষ্টিতে নেমে এসেছে স্থবিরত। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। পানির নিচে তলিয়ে আছে আমন ক্ষেত।