ভারতে নতুন পার্লামেন্ট নিয়ে যত বিতর্ক
- আপডেট সময় : ০৬:৪৯:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩
- / ১৬০৯ বার পড়া হয়েছে
রোববার নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন করেছেন নরেন্দ্র মোদী। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
জাঁকজমক কম ছিল না। ছিল সোনার তৈরি রাজদণ্ড বা সেঙ্গল। কিন্তু তথাপি নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন বিতর্কশূন্য হল না। বিরোধীদের কটাক্ষ ধেয়ে এল বার বার। সব মিলিয়ে ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে।
রোববার সকাল থেকেই নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। ভবনটি যারা তৈরি করেছেন, তাদের সংবর্ধনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর পুরোহিত পরিবেষ্টিত রাজদণ্ড বা সেঙ্গলের সামনে গিয়ে অষ্টাঙ্গে প্রণাম করেন মোদী। অর্থাৎ, সম্পূর্ণ শুয়ে পড়ে প্রণাম। এর আগে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে পুরনো পার্লামেন্টের সামনে এভাবেই প্রণাম করেছিলেন তিনি। অযোধ্যায় নির্মীয়মান রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও একই কাজ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন প্রণাম এবং পুজো শেষ করে সোনার তৈরি সেঙ্গলটি তিনি স্পিকারের আসনের পাশে রাখেন।
কী এই সেঙ্গল
তামিলনাডুর ঐতিহ্য এই সেঙ্গল বা রাজদণ্ড। বিজেপির দাবি, ব্রিটিশের হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় এই সেঙ্গল দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে। তাই এটি স্বাধীনতার প্রতীক। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, জওহরলালকে ওই দণ্ড উপহার দেওয়া হলেও তার সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো যোগ ছিল না। এই রাজদণ্ড আসলে রাজতন্ত্রের প্রতীক। এর সঙ্গে ধর্মীয় অনুষঙ্গও যুক্ত। কটাক্ষ করে কংগ্রেসনেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ”মোদীর রাজ্যাভিষেক হল।”
রাষ্ট্রপতি বিতর্ক
বিতর্ক শুরু হয়েছিল আগেই। নতুন ভবনের উদ্বোধনে ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। মোদীই এই ভবনের উদ্বোধন করেন। এখবর জানামাত্র ২০টি বিরোধী দল অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরমধ্যে কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টির মতো গুরুত্বপূর্ণ দলগুলি আছে। তাদের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে শাসকদল দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আক্রমণ করেছে। বস্তুত, মঙ্গলবার বিহারের রাজধানী পাটনায় বিরোধী দলগুলি এক বিরোধী সমাবেশের ডাক দিয়েছে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এর আহ্বায়ক।
করোনা বিতর্ক
বিরোধীদের আরো অভিযোগ, করোনার সময়েও এই ভবনটির কাজ বন্ধ রাখা হয়নি। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। অথচ ওই সময় ভারতে স্বাস্থ্যখাতে আরো বেশি অর্থ খরচ করা প্রয়োজন ছিল। নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধনের সময় এই বিতর্কটিও নতুন করে সামনে চলে আসে।
ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন
এদিকে এদিন যেভাবে পুরোহিতদের উপস্থিতিতে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতের পার্লামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়েছে, বিভিন্ন মহলে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি এদিনের অনুষ্ঠানকে কফিনের সঙ্গে তুলনা করে বিতর্ক আরো উসকে দিয়েছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে মোদীর সঙ্গে সর্বক্ষণ ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, নতুন ভবনটি রেকর্ড সময়ে তৈরি করা হয়েছে। এর ভিতর অত্যাধুনিক সমস্ত ব্যবস্থা আছে। আধুনিক ভারতের অন্যতম মানদণ্ড এই পার্লামেন্ট ভবন।
ডয়চে ভেলে