ভারীবর্ষণ ও ভারতীয় ঢলে বাড়ছে তিস্তার পানি
- আপডেট সময় : ০৫:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩
- / ১৭১৪ বার পড়া হয়েছে
ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানের পানি প্রবলবেগে ধেয়ে আসায় তিস্তার পানি বাড়ছে। এছাড়াও টানা বৃষ্টিতে রাজশাহী ও ময়মনসিংহ-সহ বিভিন্ন জেলায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে করে বেড়েছে দুর্ভোগ।
ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় রাজশাহী নগরীর নিচু এলাকা দু’দিন ধরে তলিয়ে আছে। দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজশাহীতে মারাত্মক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজশাহীর নগরীর প্রায় সকল এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। চলতি বছর এই প্রথম সর্বোচ্চ ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় রাজশাহীতে। এদিকে ভারতীয় ঢলের চাপে তিস্তাপাড়ে ভেঙে গেছে রংপুরের গঙ্গাচড়ার গ্রামরক্ষা বাঁধ। ওদিকে, ভারী বর্ষণে ময়মনসিংহে সড়ক ও বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কন্ট্রোল রুমে পানি ঢোকায় রাতে নগরীর ৫০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এদিকে, উজান থেকে ধেয়ে আসা ভারতীয় ঢলের প্রভাবে তিস্তার প্রবল স্রোতে রংপুরের গঙ্গাচড়া এলাকার স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি কয়েক শ’ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আজ ভোররাত ৪টার দিকে বাঁধটি ভেঙে যায়। বাঁধ রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানের পানি প্রবলবেগে ধেয়ে আসায় বাড়ছে তিস্তার পানি। কুড়িগ্রামে সকাল ৬টায় কাউনিয়া সেতু পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা অববাহিকায় গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ২শ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে রাজারহাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার সতর্কতা নিয়ে মাইকিংসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চরবাসীদের সম্ভাব্য বন্যা থেকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় নৌকা ও ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পানি সাময়িক কমলেও বন্যার শঙ্কা কাটেনি। এর আগে তিস্তার পানি বেড়ে ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বহু আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়। এদিকে, জনমনে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন আতঙ্ক। অতিবৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটের রেল লাইনের এক কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ওই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নেত্রকোনায় টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। তলিয়ে গেছে হাওরের রোপা আমন। নষ্ট হচ্ছে শাকসব্জি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে সাধারণ কৃষকরা। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে জেলার সোমেশ্বরী, উব্দাখালী, ধনুসহ নদ-নদীর বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর জেলায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ করা হয়েছে।