মাগুরায় এবার সাড়ে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মান পতাকা
- আপডেট সময় : ০৪:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
- / ১৬৩৬ বার পড়া হয়েছে
আমজাদ হোসেন দুরারোগ্য রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন জার্মানি থেকে আনা ওষুধ খেয়ে৷ তারপর থেকেই তিনি ফুটবলে জার্মানিকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন৷
সেইবার ভয়ঙ্কর ব্যাধিকে হার মানানো আমজাদের বয়স ৭০- এ ঠেকেছে৷ বয়সের ভার জাঁকিয়ে বসলেও ফুটবল আর জার্মান দলের প্রতি ভালোবাসা কমেনি এক বিন্দু৷ ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার মধ্যে এবার প্রিয় দলের সাড়ে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা বানিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন আমজাদ হোসেন ৷
সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে শুক্রবার বেলা ১১টায় দীর্ঘ এ পতাকা প্রদর্শন করে এটিকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড়’ পতাকা বলে দাবি করেছেন তিনি ৷
একই ইউপির ঘোড়ামরা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আমজাদ ২০০৬ সালে প্রথম জার্মানির দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা তৈরি করেন ৷ সেই পতাকা ২০১০ সালের বিশ্বকাপে আড়াই কিলোমিটারে গিয়ে দাঁড়ায় ৷
এর সঙ্গে আরও এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য যুক্ত করে ২০১৪ সালে আমজাদ তৈরি করেন সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা; সবশেষ ২০১৮ সালে পতাকার দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছিল সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারে ৷ গতবারের চেয়ে পতাকার দৈর্ঘ্য দুই কিলোমিটার বাড়াতে প্রায় এক লাখ টাকা খবচ হয়েছে বলে আমজাদ জানালেন৷
জার্মানি দলের প্রতি ভালোবাসার কারণ জানতে চাইলে আমজাদ বলেন, ১৯৮৭ সালে একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন তিনি৷ জার্মানির ওষুধ খেয়েই সেই রোগ থেকে মুক্তি পান৷ এরপর থেকেই তিনি জার্মানের ভক্ত৷ একইভাবে জার্মান ফুটবল দলকেও তিনি ভালোবাসেন৷
প্রিয় দলের সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়ে ভালোবাসার সেই প্রকাশ ঘটান দাবি করে আমজাদ আরো বলেন, এবার নতুন দুই কিলোমিটার পতাকা তৈরি করতে কাপড়ে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা ৷ বাকি ৩০ হাজার গেছে দর্জির মজুরি আর যাতায়াতে৷
স্থানীয়রা জানান, আমজাদ দরিদ্র হলেও জার্মানির পতাকা বানানোর জন্য এর আগে তিনি বাড়ির তিন শতক জমিও বিক্রি করেছেন৷ ২০১৪ সালে জার্মান রাষ্ট্রদূত মাগুরায় তার বাড়িতে ওই পতাকা দেখতে গিয়েছিলেন৷
সে সময় তাকে জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়; একই সঙ্গে জার্মান ফুটবল দলের ফ্যান ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আমজাদ৷
এবারের বিশ্বকাপে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হলে বাড়িতে কয়েকশ’ লোককে খাওয়ানোসহ গোটা পতাকা নিয়ে মাগুরা শহরে মিছিল করবেন বলে জানান৷
মাগুরা ফুটবল অ্যাকাডেমির পরিচালক সৈয়দ বারিক আনজাম বার্কি বলেন, ‘‘আমজাদ জার্মান-পাগল মানুষ ৷ দরিদ্র কৃষক হলেও বিশ্বকাপ ফুটবল এলে তিনি জার্মানির দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে চমক সৃষ্টি করেন৷ প্রতি বছর তার পতাকার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়৷”
চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, ‘‘আমজাদ এ বছর সাড়ে ৭ কিলোমিটার পতাকা তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে৷ তার এ জন্য বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশসহ তার নিজ এলাকা পরিচিতি লাভ করছে৷”
ডয়চে ভেলে (ডিডব্লিউ)