রিটার্নিং কর্মকর্তার চোখে ধুলা দিয়ে কম বয়সী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান টিকটকার পপি
- আপডেট সময় : ১০:৩৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪
- / ২২১৫ বার পড়া হয়েছে
রিটার্নিং কর্মকর্তার চোখে ধুলা দিয়ে দেশের সবচেয়ে কম বয়সী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন টিকটকার পপি। আইন অনুযায়ী ২৫ বছর বয়স না হওয়ায়, প্রার্থী হওয়ার আগে রহস্যজনক কায়দায় রাতারাতি শিক্ষা সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ পাল্টে ফেলেন তিনি। কিন্তু সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী বয়স ২২ বছর। এরপরও অদৃশ্য শক্তি ইশারায় নির্বাচনে প্রার্থী হলেন পপি। এ নিয়ে চলছে তোলপাড়।
মিউজিক ভিডিও আর টিকটকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কাঁপানো এই পপি এখন দেশের সবচেয়ে কম বয়সী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। অনার্স পড়ুয়া পপি খাতুনের রাজনৈতিক কোনো পদ-পদবি নেই। অথচ বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। পপির হঠাৎ এই উত্থানে বিস্ময়ের ঘোর যেন কাটছে না।
গেলো ২৯ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রাজশাহীর পবা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ধর্মহাটার ঠাকুরপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা পপি।
তবে নির্বাচনের পর ফাঁস হয়েছে ২২ বছর বয়সী পপি কীভাবে নিজের বয়স ২৫ করে প্রার্থী হন। ২০১১ সালে পাস করা পিএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ২০০৩ সালের ১২ জানুয়ারি। আর এসএসসির কাগজপত্রে জন্মতারিখ রয়েছে ২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি। কিন্তু ভোটে প্রার্থী হওয়ার আগে রাজনৈতিক প্রভাবে রাতারাতি পপি তার শিক্ষাগত সনদে জন্মতারিখ পাল্টে ১৯৯৮ সালের ১২ জানুয়ারি করেন। একই কায়দায় জাতীয় পরিচয়পত্রেও জন্মতারিখ পরিবর্তন করেন। অথচ হালনাগাদ ভোটার তালিকাতে পপির জন্মতারিখ ২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি।
নিয়ম অনুযায়ী ভোটার তালিকায় দেওয়া তথ্য ধরেই পপির মনোনয়ন যাচাইয়ের কথা। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা তা করেননি। ফলে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে পপির প্রার্থিতা বহাল রাখা হয়। এ ঘটনাকে নিজের ভুল বলে স্বীকার করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
তবে কোন ডকুমেন্টের বলে পপির জন্ম তারিখ পাল্টে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে কথা বলেননি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা।
এদিকে জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ পাল্টানোর ক্ষেত্রেও ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন পপি। ২০ মার্চ জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ সংশোধনের আবেদন করেন তিনি। কিন্তু ৩ এপ্রিল সেটি বাতিল হলে আরেকটি আবেদন করেন। এরপর রহস্যজনক কারণে ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে আরেকটি আবেদনে সংশোধনের আবেদন বহালের অনুরোধ জানান। অবিশ্বাস্য গতিতে পরদিনই পপির জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ পাল্টে দেয়া হয়।
যোগাযোগ করা হলে কথা দিয়েও ক্যামেরার সামনে হাজির হননি পপি। তবে তার দাবি নিয়মকানুন মেনেই তিনি জন্মতারিখ পাল্টে প্রার্থী হয়েছেন।
গেল ৪ জুন পপিকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গেজেট বেরিয়েছে। এখন অপেক্ষা শপথ গ্রহণের।