সবচেয়ে দীর্ঘ দিনকে ঘিরে লিথুয়ানিয়ার উৎসব
- আপডেট সময় : ১২:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১৫৭১ বার পড়া হয়েছে
ইউরোপের ছোট দেশ লিথুয়ানিয়ার মানুষ বছরের সবচেয়ে ছোট রাতে উৎসবে মেতে ওঠে৷ নানা ঐতিহ্য, আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অশুভ ও নেতিবাচক শক্তিকে দূরে রাখার চেষ্টা করে ছোটবড় সব মানুষ৷
লাটভিয়ার বছরের সেরা উৎসবের নাম মিডসামার ফেস্টিভ্যাল৷ প্রত্যেক বছর ২৩শে জুন রাতে গোটা লাটাভিয়ায় গ্রীষ্মের সূর্যকে এভাবে স্বাগত জানানো হয়৷
কিন্তু সেই উৎসবে ঠিক কী পালন করা হয়? উৎসবের খুঁটিনাটী ও ঐতিহ্যের দিকে নজর দেওয়া যাক৷ স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আন্ডা বেকেরে বলেন, ‘‘মিডসামার উৎসব চিরকাল চলে আসছে৷ পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী সবাই একসঙ্গে সুন্দর সময় কাটাতে সমবেত হয়৷”
লাটভিয়ায় এই উৎসব ‘লিগো’ বা ‘ইয়ানি’ নামে পরিচিত৷ হাজার বছরের ঐতিহ্য মেনে উৎসব পালন করা হয়৷
রাজধানী রিগা থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে কাজডাঙায় রাত আটটা থেকে উৎসব জমে উঠেছে৷ আয়োজক হিসেবে ইয়ানিস রুডজ্রোগা এক দিন আগে প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন৷ বড় করে বনফায়ারের আয়োজন করা অত্যন্ত জরুরি৷ মায়ের কাছ থেকে সেই ঐতিহ্য শিখেছেন বলে তিনি স্বীকার করেন৷
ফুলের স্তবক তৈরি করা উৎসবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আচারের মধ্যে পড়ে৷ প্রকৃতির কোলে বা বাগানে যে কোনো বুনো উপকরণই সাজানোর কাজে লাগানো যায়৷ ঘরে তৈরি জিরার চিজ খাওয়াও উৎসবের অঙ্গ৷ সবাই মিলে লোকসংগীত গাওয়া ও একসঙ্গে নাচাও চাই৷ সব বয়সের মানুষই তাতে শামিল হয়৷
ফুলের স্তবক দুর্ভাগ্য ও অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে বলে বিশ্বাস করা হয়৷ নানা বয়সের নারী ফুল, জড়িবুটি ও ঘাস দিয়ে তৈরি স্তবক পরে৷ পুরুষদের স্তবকে থাকে ওক গাছের পাতা৷ সব কিছু নিজেকেই গাছ থেকে তুলতে হয়৷ কিংবদন্তি অনুযায়ী লিগো উৎসবের জন্য সংগ্রহ করা জড়িবুটি জাদুময়, সেগুলির নিরাময়ের শক্তি থাকে৷ ইয়ানিসের মা ভাইরা রুডজ্রোগা বলেন, ‘‘এই সব পাপড়ি দিয়ে খুব ভালো চা তৈরি করা যায়৷ ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে৷”
চার বছর ধরে ভাইরার ছেলে ইয়ানিস লিগো উৎসব আয়োজন করে আসছেন৷ গত বছর প্রায় ২০০ অতিথি এসেছিলেন৷ চলতি বছর প্রায় ৩০০ মানুষ সমবেত হয়েছেন৷ ইয়ানিস বলেন, ‘‘আমি নার্ভাস নই বা স্ট্রেস অনুভব করছি না৷ কথায় বলে, নিজের সেরাটা করে দেখাও৷ তখন নার্ভাস হবার কোনো কারণ থাকে না৷ কারণ তুমি তো তোমার সেরা দিক তুলে ধরেছো৷”
সবকিছু ওক গাছের ডালপালা দিয়ে সাজানোও ঐতিহ্যের অঙ্গ৷ সেগুলিও অশুভ আত্মা ও নেতিবাচক শক্তি দূরে রাখে বলে বিশ্বাস করা হয়৷ জঙ্গল থেকে এমন ডালপালা সংগ্রহ করা হয়৷
আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন, প্রকৃতির কোলে খোলা আকাশের নীচেই উৎসব পালন করা হয়৷ সে কারণে বনফায়ারের জন্য যথেষ্ট কাঠ জমা রাখা অত্যন্ত জরুরি৷ কারণ সারারাত আগুন জ্বলে৷ বনফায়ার মানুষকে উষ্ণতা দেয়, জাগিয়ে রাখে৷ একেবারেই ঘুমানোর জো নেই, কারণ, সেটা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে৷ এমনকি বাচ্চারাও সারা রাত জেগে উৎসবে মেতে থাকে৷ লাটাভিয়ার সবচেয়ে ছোট রাত হয়ে ওঠে অ্যাডভেঞ্চারে ভরা৷
ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ