সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর প্রধান সড়ক এবং অলিগলিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা
- আপডেট সময় : ০১:৫৩:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
- / ১৫২৮ বার পড়া হয়েছে
সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর প্রধান সড়ক এবং অলিগলিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। নগরবাসীর দীর্ঘদিনের এই দুর্দশা নিরসনে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অপরিকল্পিত উদ্যোগ এবং কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও আসেনি সুফল। রাজধানীতে বসবাসরত প্রায় তিন কোটি মানুষের ভাগ্যে জুটেছে কেবল ভোগান্তি। নগর পরিকল্পানবিদরা বলছেন, সড়ক ও স্থাপনা নির্মাণ ত্রুটিও জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রাকৃতিক খালগুলো সংরক্ষণের বিকল্প নেই।
বর্ষা মৌসমে রাজধানীতে বসবাসরত প্রায় দুই কোটি মানুষ কোন না কোনভাবে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েন। বর্ষা এলেই সিটি করপোরেশন, ওয়াসাসহ বিভিন্ন দপ্তরগুলো খড়াখুড়ির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দেখে মনে হয় আর হয়তো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবেনা। কিন্তু কিছুতেই পিছু ছাড়ছেনা নগরবাসীর জনদুর্ভোগ।
একসময়ে প্রাচীনএই নগরীতে জলাবদ্ধতা হতো না। অনায়াসেই বৃষ্টির পানি বিভিন্ন খাল-নালা দিয়ে আশপাশের নদ-নদীতে নেমে যেত। এখন খাল-নালাগুলো দখল-ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনে ভাটা পড়েছে। যেকোনো শহরের মোট ভূমির কমপক্ষে ১২ ভাগ জলাধার থাকা দরকার। যার বিপরীতে ঢাকা নগরীতে রয়েছে মাত্র দুই ভাগ।
সম্প্রতি সময়ে দেখা যায়, ঢাকার বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থায় ঘণ্টায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে পানি সরতে সময় লাগে তিন ঘণ্টা। ৫০ মিলিমিটার হলে চার ঘণ্টা আর ৭০ মিলিমিটারে লাগে ১০ ঘণ্টা। ভরা বর্ষা মৌসুমে ঘণ্টায় ৭০ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করছে পানি নিষ্কাশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো। কিন্তু দ্রুত পানি নিষ্কাশনের বিষয়ে তারা প্রায় নীরব।
এমন বাস্তবতায় সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় রাজধানীর গুরুত্বপুর্ন সড়ক এবং অলি-গলি। এতে ভোগান্তির শেষ থাকেনা নগরবাসীর।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত সড়কগুলোর চেয়ে ফুটপাতগুলো উচুঁভাবে তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া সরু পাইপ দেওয়ায় লেকগুলোতে পানি নামতে প্রচুরপরিমাণ সময় লাগে। আবার সরু এই পাইপগুলোতে বিভিন্ন সময়ে ময়লা-আবর্জনা ঢুকে বন্ধ হয়ে থাকে। সড়কে জলাবদ্ধতার এটিও একটি বড় কারণ। এ জন্য সড়কে দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে।
বৃষ্টিকালীন সময়ে হাতিঝিলের আশ-পাশের অলি-গলিতে জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন প্রায় বিশ হাজার মানুষ।
সড়ক ও ফুটপাতরের উচ্চতার নির্মাণে ত্রুটির কারণেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় বলে মনে করেন এই দুই নগরপরিকল্পনাবিদ।
অনিয়ন্ত্রীত নগরায়ন জলাবদ্ধতার জন্য কম দায়ী নয় জানিয়ে তারা বলেন, তা দূর করতে হলে ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যানের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।
খাল এবং সব ধরনের প্রাকৃতিক জলাধারগুলো রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরগুলোকে উদ্যোগী হওয়ার কথাও বলেন,তারা।