৪২০ জনের নামে ৫ বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ
- আপডেট সময় : ০৫:৫১:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩
- / ১৬৯২ বার পড়া হয়েছে
কেউ মারা গেছেন, কেউবা বছরের পর বছর প্রবাস জীবন যাপন করছেন। অথচ খাতা-কলমে ভূমিহীন মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের নেয়া ৪০ দিনের অতি দরিদ্রের কর্মসংস্থান প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন ২০১৭ সাল থেকে। ব্যাংকে একাউন্টও খোলা হয়েছে তাদের নামে। নিয়মিত পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। এমন ৪২০ জনের নামে ৫ বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের মীরেরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা উঠে এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা স্থানীয় সরকার বিভাগের হরিলুটের আরেক দৃষ্টান্ত।
মীরেরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ মোস্তফা। ২০২০ সালের ১৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন। একই ইউনিয়নের লিটন মিয়া। ২০১৭ সাল থেকে প্রবাসে বসবাস করেন।সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত প্রতিবন্ধী মোহাম্মদ হারুন। এই তিনজনই খাতা-কলমে করেরহাট ইউনিয়নের হতদরিদ্র প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন কয়েক বছর ধরে। প্রতি মৌসুমে ব্যাংক একাউন্টে টাকাও তুলেছেন নিয়মিত।
শুধু তিনজনই নয়, এমন ৪২০ জন ভুয়া শ্রমিকের তথ্য পেয়েছে দুদক। যাদের নাম ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের সাড়ে তিন কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে ৫ বছরে। অথচ যাদের নামে ব্যাংক এ্যকাউন্ট খুলে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে তারা জানেন না কিছুই।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে গুরুতর অভিযোগটি তদন্ত করে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি অনুসন্ধান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কয়েকটি ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তা এমনকি উপজেলা পিআইও অফিসের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমান পেয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
যদিও করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দফতরে ভুয়া অভিযোগ দিয়ে হয়রানীর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আর বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রকল্পে হরিলুট বন্ধ হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১৭ সাল থেকে ভুমিহীন দরিদ্র নারী পুরুষের জীবন মান উন্নয়নে অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান নামে বছরে ৪০ দিনের বিশেষ প্রকল্প চালু করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। যা দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।