বাণিজ্যিকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে খয়ের গাছের চাষ
- আপডেট সময় : ০৫:৩০:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১
- / ১৫৪৭ বার পড়া হয়েছে
গ্রামের বিয়ে বাড়ি, অথচ ঠোঁট রাঙিয়ে এক খিলি পান খাবেন না-এমন মানুষ কমই আছেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে গালভরা পান চিবুনোর মজাটাই যেন অন্যরকম। আর পানে মুখ রাঙাতে খয়েরের কোনো জুড়ি নেই। কিন্তু খয়ের কী থেকে তৈরি হয়, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। পানপ্রেমীদের জন্য খানিকটা মন খারাপের খবর হলো- বাণিজ্যিকভাবে খয়ের গাছের চাষ এখন বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, এতে আর লাভের মুখ দেখছেন না ব্যবসায়ীরা।
বাংলা কাব্য-কবিতা আর গানে নানাভাবে এসেছে পান খেয়ে মুখ রাঙানোর কথা। পানের সাথে ঠোঁট লাল করতে খয়ের খাওয়া চল ঠিক কবে থেকে তা বলা কঠিন। তবে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার গোপালপুরে খয়ের তৈরি শুরু হয় ১৯৫২ সালের দিকে। এর একমাত্র কাঁচামাল খয়ের গাছ এ উপজেলাতেই এক সময় উৎপাদন হতো। খয়ের গাছ কুচি কুচি করে কেটে সেদ্ধ করে এর নির্যাস থেকেই তৈরি হয় খয়ের। অনেকেই চাষ করতেন বাণিজ্যিকভাবে। এই ক্ষুদ্র শিল্পের সাথে জড়িত ছিলেন বহু মানুষ। এখান থেকেই সারাদেশে যেতো খয়ের। চলতো জীবন-জীবিকা।
এখন আর সেই সুদিন নেই। দিনে দিনে বিভিন্ন ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। কিন্তু প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে খয়ের তৈরির কারখানা। তবে এখনো হাতে গোণা কয়েকজন কোনো রকমে ধরে আছেন বাপ-দাদার সেই পেশা। তারা ব্যবসাটা ধরে রেখেছেন লাভের চেয়ে মায়ার টানেই বেশি ।ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে থেকে আসছে খয়ের। ফলে দেশীয় খয়েরের বাজার আর নেই। এ কারণে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
এদিকে, কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, খয়ের তৈরির জন্য একটি গাছের বয়স লাগে ২০ থেকে ২৫ বছর। এখন আর এতো দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে চান না গাছ উৎপানকারীরা। তাই কম সময়ে অধিক লাভের আশায়, খয়ের গাছের কেটে তারা আম চাষেই আগ্রহী বেশি।
কেবল মুখ রাঙাতেই নয়, খয়েরের আছে ঔষধিগুণও। ফোঁড়া, শ্বেতি রোগ, দাঁতের সমস্যা, কাশি ও আমাশয় নিরাময়ে খয়ের বেশ উপকারী।