বরেণ্য শিল্পী কবরী বেঁচে থাকবেন কোটি মানুষের অন্তরে
- আপডেট সময় : ০২:০১:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১
- / ১৫৩৮ বার পড়া হয়েছে
পরিচালক সুভাষ দত্তের সুতরাং দিয়েই শুরু সফলতার গল্প। বহুমাত্রিক অভিনেত্রী কবরীর ইতিহাস হয়ে ওঠার শুরুটাও তখনই। ময়নামতি, তিতাস একটি নদীর নাম, সুজন সখী, সারেং বউ-এর মতো অসংখ্য সিনেমায় সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে মানুষের হৃদয়ের গভীরে পৌঁছেছেন কবরী সারোয়ার। শুধু কি অভিনয়, প্রযোজনা কিংবা পরিচালনা তার ৭ দশকের জীবনটা সফলতার গল্পেই মোড়ানো। পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় নিলেও তিনি থাকবেন অন্তরে অন্তরে।
চট্টগ্রামের মীনা পাল, বয়স তের বা চৌদ্দ। মঞ্চে সদ্য অভিনয় শিখছেন। হঠাৎই পরিচালক সুভাষ দত্তের চোখে পরেন তিনি। সুতরাং ছবিতে মুল নারী চরিত্রে অভিষেকের সাথে সাথেই পান সাফল্যের স্বাদ। পোষাকী নাম এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন পড়েনি। ‘ময়নামতি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সারেং বৌ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘সুজন সখী’র মতো প্রায় দুইশ’রও বেশি ছবিতে দর্শকরা অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন বাংলাদেশের চিত্রজগতের অসামান্য এক অভিনয়শিল্পীর তারকা হয়ে ওঠা। অভিনয়ে, প্রযোজনায়, পরিচালনায়—তাঁর সাত দশকের জীবনটা যেন আশ্চর্য সফলতার গল্প।
ঢাকাই সিনেমার অন্তত ৫ জন ডাকসাইটে নায়কের যাত্রা শুরু কবরীর সাথে। নায়করাজ রাজ্জাক, ফারুক, আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন নায়কের সাথে তার রসায়ন ছিল অপ্রতিদ্বন্দী। মিষ্টি হাসি দিয়েই জয় করেছিলেন দর্শকের হৃদয়। ষাট আর সত্তরের দশকের অনেক তরুণের ‘স্বপ্ন’ ছিলেন কবরী।
উত্তাল একাত্তরে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে ভারতের বড় বড় শহরে জনমত সংগঠন, সেলুলয়েডের বাইরে রাজনীতি জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতি, ঢাকাই সিনেমার সদর-অন্দরের পাশাপাশি এ শিল্পের উপর যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতির অভিঘাতের কথাও সেখানে দুই মলাটে বেঁধেছেন কিংবদন্তী এই অভিনেত্রী। রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন মূলধারার রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগের টিকিটে হয়েছিলেন নারায়নগঞ্জ চার আসনে সংসদ সদস্য ।
পরিচালনাতেও মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন আয়না ও এই তুমি সেই তুমি চলচ্চিত্রে।তারপর সব ফেলে গতকাল শুক্রবার রাতে চলে যান না–ফেরার দেশে। মিষ্টি মেয়ে কবরী, বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী। ‘দ্বীপ নিভে গেলেও” আলো হয়ে থাকবেন কোটি হৃদয়ে…