আজ প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন
- আপডেট সময় : ০১:৪৪:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ১৫৩৪ বার পড়া হয়েছে
হাসু থেকে শেখ হাসিনা। টুংগীপাড়া থেকে জাতীয় সংসদ আর গণভবন। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে সফল এই রাষ্ট্রনায়ক এখন বিশ্বনেতৃত্বের রোল মডেল। বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছেন উন্নয়নের শত বছরের ধারাবাহিকতায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা পিতার আদর্শ, দেশপ্রেম আর ত্যাগের ব্রত নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা উন্নত করতে। সেই ভিশনারী নেতার ৭৫তম জন্মদিন আজ।
যেই বজ্র কণ্ঠ শুনে সাত কোটি বাঙ্গালী জেগেছিল, সেই কন্ঠের আদরের ডাকে ঘুম ভাংতো ছোট মেয়েটির। মায়ের বকুনি খেয়ে পড়তে বসা আর বাবার আদুরে স্বরে দেশ আর মানুষকে নিয়ে স্বপ্নের গল্প শুনে শুনেই বেড়ে উঠছিলো ছোট্ট হাসু। গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় সবার আদরের হাসু, পোশাকি নাম শেখ হাসিনা।
১৯৫৪ সাল থেকে ঢাকায় বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ও মা বেগম ফজিলাতুননেছার সাথে বসবাস শুরু। ৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ৬৭ তে বদরুননেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৬ সালে ছাত্রলীগ থেকে ইডেন কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। আর ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন শেখ হাসিনা। এরমধ্যেই বিয়ে হয় তরুণ বিজ্ঞানী এম ওয়াজেদ মিয়ার সাথে।
রাজনীতি তাঁর রক্তে। বঙ্গবন্ধুর কাছেই কন্যার রাজনীতির প্রথম পাঠ। আর তাই স্কুলে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য ও রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিনা বাবার পাশে থেকে দীক্ষা নেন স্বাধিকারের।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাত্রিতে হারান পরিবার আর স্বজনদের। একমাত্র ছোটবোন শেখ রেহানা আর সন্তানদের নিয়ে শুরু হয় নির্বাসিত জীবন। মূলধারার রাজনীতিতে আসবেন তখনো ভাবেননি । কিন্তু ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতেই আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সে বছর ১৭ মে দীর্ঘ ছয় বছর পর যখন বাংলার মাটিতে পা দেন, লাখো মানুষের ভালোবাসাময় স্লোগানই নির্ধারণ করে দেয় শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ, জীবন কেবল দেশের জনগনের জন্য ।
গৃহবধু থেকে আওয়ামী লীগের মত বিশাল দলের প্রধান ও সফল রাষ্ট্রনায়ক -এই বিশাল যাত্রা ছিল খুবই কঠিন। তারই নেতৃত্বে গণআন্দোলনে সামরিক শাসনের অবসান হয়, ফেরে গণতন্ত্র। ৮১ থেকে ২০২১ টানা হাল ধরে আছেন দলের আর দেশ পরিচালনায় নৈপুন্য ও সফলতা দেখাচ্ছেন ১৭ বছর ধরে।
গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষহীন এই নেতা কারাবরণ করেছেন, গৃহান্তরীণ হয়েছেন একাধিকবার। সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন অন্তত ২০ বার। গাড়িবহরে হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাও দমাতে পারেনি তাঁকে। সহিংসতা নয় সবসময় গেয়েছেন শান্তির গান। কেবল পার্বত্য এলাকাতেই নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনেও এসেছে স্থিতীশীলতা।
চারবার ক্ষমতায় এসেছেন। জনগণের ম্যানডেট নিয়ে টানা ১২ বছরের বেশি সময় পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় আর্থিক , সামাজিক, কূটনীতি সবদিকেই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। পেয়েছেন ৩৫ টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরষ্কার।
ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ফলে করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব থমকে গেলেও বাংলাদেশ থামেনি। অদম্য গতিতে এগোনোর ফলে মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কমেছে দারিদ্রের হার। নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আঞ্চলিক রাজনীতি, করোনা মোকাবিলা ও প্রতিষেধক নিশ্চিত করা প্রতিটি খাতই সামলে চলেছেন সমান দক্ষতায়।
তিনি স্নেহময়ী মা কিন্তু কঠোর প্রশাসক। ক্রীড়ামোদী, সংস্কৃতিপ্রেমী কিন্তু ফজরের নামাযে দেশের শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় দিন শুরু হয় তাঁর। পদ্মাসেতু, মেট্ররেলের মত অসংখ্য গর্বের দাবিদার জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলা ও বাংলাদেশের মর্যাদা।