ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ লঘুচাপে পরিণত : কয়রায় বাঁধ ভেঙে পানিবন্দী দুই’শ পরিবার
- আপডেট সময় : ০৫:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১
- / ১৫৮০ বার পড়া হয়েছে
গভীর নিম্নচাপের পর ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নিতে যাচ্ছে। সমুদ্র পথ ধরে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। এটি লঘুচাপ হিসেবে খুলনা-বরিশাল উপকূল দিয়ে দেশের স্থলভাগে উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এর প্রভাবে আজও উপকূলীয় জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঝড়ে এক জন মারা গেছেন। খুলনার কয়রায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই’শ পরিবার।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে রহিমা বেগম নামে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাস্তার পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। গাছের ডাল ভেঙ্গে তার মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ সময় আরও দু’জন আহত হন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ শক্তি হারিয়ে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে বরিশালে কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। নগরীর নিম্নাঞ্চলে পানি উঠায় ভোগান্তিতে পড়েছে বাসিন্দাদারা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বের হননি কেউ।
সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে খুলনায় থেমে থেমে বৃষ্টি ও বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। গেল শনিবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এখন পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। মোংলা বন্দরে ৩ নাম্বার স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। জলোচ্ছ্বাসে কয়রা উপজেলার সাতবেড়িয়া নদীতে পানি বেড়েছে। এতে প্রায় ২শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পটুয়াখালীতেও বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। কুয়াকাটার সাগর কিছুটা উত্তাল। তিন দিনেও দেখা মেলেনি সূর্যের। বাতাসের গতি কিছুটা বেড়েছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে হালকা, মাঝারি ও কোন কোন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ২৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
বরগুনায় টানা চার দিনের বৃষ্টিতে থমকে গেছে জনজীবন। রোববার রাত থেকে শুরু হয়ে মুষলধারে ঝরছে বৃষ্টি। নিম্নবিত্তদের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার সকাল থেকে মাগুরায় একটানা বৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। শহরের নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট বৃষ্টিতে ডুবে গেছে। পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চাষিরা। ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছে কৃষক।
সাতক্ষীরায় টানা বর্ষনে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে জনজীবন। দমকা হওয়া ও মুষলধারে বৃষ্টির ফলে বিপাকে পরেছে খেটে খাওয়া মানুষ।
বাগেরহাটের শরণখোলায় দু’দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সুন্দরবনের দুবলার চর ডুবে যাওয়ায় জেলেদের শুঁটকির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড় হাওয়ার কারনে জেলেদের নৌকা ও ট্রলার সুন্দরবনের ছোট ছোট খালে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। প্রবল বর্ষণের সাথে বঙ্গোপসাগরের পানি বেড়েছে ৩/৪ ফুট। মাঝেরকিল্লাসহ আশেপাশের চরগুলো ডুবে গেছে। আবহাওয়া অফিসের আগামীকাল থেকে পরিস্থিতি কিছুটা পরিবর্তন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান।