অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা নিয়ে বছর শুরু হলেও, শেষ দিকে জেগেছে আশার আলো
- আপডেট সময় : ০৯:৩৯:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
- / ১৫৪০ বার পড়া হয়েছে
করোনার কারণে জাতীয় অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা আর হতাশা নিয়ে বছর শুরু হলেও, শেষ দিকে জেগেছে আশার আলো। এবছর অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে তৈরি পোশাক খাতে বিদেশি অর্ডার। ২৮তম গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধানও দিয়েছে বাপেক্স। দু’বছর পর ফের শীর্ষ অবস্থানে এসেছে বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প। আশা জাগানিয়া এসব সংবাদের ভিড়ে রয়েছে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার, বেসামাল ব্যাংকিং খাত ও অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি। ভাটা পড়েছে রেমিট্যান্সেও। তবু, আগামী বছর দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর ২০২১। বছরের শুরুতে কর্মহীন হয়ে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া অনেকেই ফিরেছেন শেষের দিকে। কিন্তু, ফিরে এসেও দ্রব্যমুল্যের কষাঘাতে জর্জরিত তারা। বছরজুড়েই উর্দ্ধমুখী ছিল নিত্যপণ্যের বাজার।
নিত্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান উর্দ্ধগতিতে আরেকদফা মুদ্রাস্ফীতি ঘটিয়েছে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। গত ৩ নভেম্বর এক লাফে প্রতি লিটার ডিজেলে ১৫ টাকা করে বাড়িয়ে দেয় সরকার।
শেয়ার বাজারের অস্থিরতায় কমেছে বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও। গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বরে বিও হিসাবের পরিমাণ ছিল ২৫ লাখ ৩৮ হাজার ৩৩৩ টি। এ বছরের শেষে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৭ হাজার ১৫৩টি।
ব্যাংকিং খাতে কয়েক বছর ধরে চলে আসা অস্থিরতা কমেনি এবছরও। ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ লাখ কোটি টাকারও বেশি। করোনার শুরুতে খেলাপি ঋণের পরিমান ছিলো ৭ দশমিক ছয় ছয় শতাংশ। এবছর তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮ দশমিক এক দুই শতাংশ। গেল ৯ ডিসেম্বর এই ঋণের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানায় আইএমএফ।
বিদেশে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে পিকে হালদার। বিনা বাধায় তিনি বিদেশে গাড়ি জমিয়ে গণমাধ্যমের আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন বছরজুড়ে। এরকম আরও অভিযোগ এসেছে অনেক দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে।
রেমিট্যান্সেও নেই সুখবর। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৬০ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল এক হাজার ৮৯ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ, জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম সূচকটিও কমেছে ২১ শতাংশ।
এতসব নেতিবাচক খবরের মাঝেও করোনায় বিপর্যস্ত রপ্তানীমুখী শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে বছরের মাঝামাঝি সময়ে। এ বছর রপ্তানী প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক শুন্য ৯ শতাংশ। সরকারের সহায়তা পেলে প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকরা।
চলতি বছরের ৯ আগস্ট সিলেটের জকিগঞ্জে ২৮ তম নতুন গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান দিয়েছে বাপেক্স। সেখানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ রয়েছে ৪৮ বিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস সংকটের সময় এটি বিরাট সুখবর বয়ে এনেছে।
জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে গোটা বিশ্বের ৫৮২ টি স্ক্র্যাপ জাহাজের মধ্যে ১৯৭টি কেটে দুই বছর পর ফের শীর্ষ অবস্থানে ফিরেছে বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প।।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রাজস্ব আদায় বাড়িয়েছে এনবিআর। মাসিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শতাংশের বেশী। এছাড়া ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩১ লাখ ৬২ হাজার কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে নতুন রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। ছোট্ট এই পরিসংখ্যানটি দেখেই বোঝা যায় আমদানী-রপ্তানী বাণিজ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে এ বছরে।