উত্তরাঞ্চলে বন্যাকবলিতরা ত্রাণ সংকটে
- আপডেট সময় : ০৫:০৬:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২
- / ১৫৪৩ বার পড়া হয়েছে
দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বেড়েছে বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে লালমনিরহাট-রংপুর-কুড়িগ্রাম-সিরাজগঞ্জসহ উত্তরের অনেক জেলার নিচু এলাকা। ডুবেছে বাড়িঘর-রাস্তাঘাট। ত্রাণ সংকটে বিপাকে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।
অব্যাহত বৃষ্টি ও উজানের ঢলে আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত: দেড় লাখ মানুষ। এ অবস্থায় বিশেষ করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুর্গম চরাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষজন। চুলা জ্বালাতে না পারায় এবং টিউবয়েল তলিয়ে থাকায় তীব্র হয়ে উঠছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। এদিকে, সরকারী ভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
উন্নতি হয়নি লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতি। সকাল ৯টা থেকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতেকরে তিস্তা ও ধরলার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলোর পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলছে। পাশাপাশি বাড়ছে অভ্যন্তরীন নদ-নদীর পানিও। গেল ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্ট আরও ২১ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
উজানের পাহাড়ী ঢল ও ভারী বর্ষনে জামালপুরে যমুনা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গেল ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৪৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসানের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলায় ৫০ মেট্রিকটন চাল, নগদ ১ লাখ টাকা ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টিতে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি গেল ২৪ ঘন্টায় আরো বেড়েছে। সারিয়াকান্দি পয়েন্টে সকাল থেকে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার ৮৩৪ হেক্টর জমির আউস, পাট, ভূট্টা ও বীজতলা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।
টানা দু’দিনের বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজীর মুহুরীর নদীর বাঁধের ২টি অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সকালে ফুলগাজী উপজেলা বাজারসহ সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর ও দরবারপুর ইউনিয়নের বরইয়া এলাকা দিয়ে লকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। বর্তমানে নদীর পানি বিপদসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিটি নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
জেলার ১০টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সকালে উব্দাখালী নদী পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার, কংস নদীর পানি ২৭ সেন্টিমিটার এবং ধনু নদীর পানি ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উজানের ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে বিপদসীমা ছাড়িয়েছে তিস্তার পানি। বর্তমানে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নদী তীরবর্তী কয়েকটি চরগ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি গেইট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ।