শ্রীলঙ্কাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি
- আপডেট সময় : ০৭:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২
- / ১৫৩৭ বার পড়া হয়েছে
সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জরুরি অবস্থা এবং কলম্বোসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি গোতাবায়ে পালিয়ে যাওয়ার পর জনরোষ ঠেকাতে কয়েকঘন্টার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনিই এখন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি। এদিকে, অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গণ–আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। উচ্ছৃঙ্খল আচরণে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটে গত চারমাস ধরে চলছে দফায় দফায় বিক্ষোভ। এখন বিদ্যুৎ-গ্যাস-জ্বালানি শূণ্য দেশটিতে মানুষ নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে মরিয়া। এরইমধ্যে প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও পলায়ন এবং নতুন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা গ্রহণেও দমানো যাচ্ছে না জনরোষ।
মঙ্গলবার রাতে সামরিক বিমানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপ পালিয়ে গেছেন বলে জানান দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। সেখানেও থিতু হতে পারেননি। মালদ্বীপবাসী ও শ্রীলঙ্কান প্রবাসীরা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিহের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করছেন। এতে, পরের গন্তব্য হিসেবে সিঙ্গাপুরকে নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭৩ বছর বয়সী গোটাবায়ার সঙ্গে আছেন তাঁর স্ত্রী ও এক দেহরক্ষীসহ চার যাত্রী।
৯ জুলাই আন্দোলনকারীরা বাসভবনে হামলার পর আত্মগোপনে ছিলেন গোটাবায়ে। রাজাপাকসের পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে পারিবারটির কয়েক দশক ধরে শ্রীলঙ্কা শাসনের অবসান ঘটে।
এই খবরে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে কলম্বোর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। জড়ো হন সচিবালয়ে বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল গল ফেস গ্রিন-এ। অস্থায়ী মঞ্চে সাধারণ মানুষ মেতে উঠে বিজয় উৎসব।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশজুড়ে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। কলম্বোসহ পশ্চিমাঞ্চলে চলছে কারফিউ। দিনশেষে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে মসনদে বসার শপথ নিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমা সিংহে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্পিকার।
এদিকে, বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘিরে ফেলতেই সেনাবাহনী ও পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়, সঙ্গে লাঠিপেটা। কিন্তু, তাতেও দমেনি বিক্ষোভকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দেয়াল টপকে বিক্ষোভকারীদের ভিড় ঢুকে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে’রও পদত্যাগের দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা । তিনি পদত্যাগ না করলে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশটিকে আরও বিক্ষোভের দিকে ঠেলে দিয়েছে জরুরি অবস্থা ঘোষণা। অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরুনোর পথে না গিয়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে লঙ্কান শাসকরা পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।