ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং কাল ভোরে আঘাত আনতে পারে দেশের উপকূলে
- আপডেট সময় : ০২:৩৯:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২
- / ১৭৬৩ বার পড়া হয়েছে
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কাল ভোরে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। উপকূল থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এরই মাঝে মোংলা ও পায়রায় ৭ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরাসহ ঝুঁকিতে আছে দেশের ১৯টি জেলা। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রেখেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে, এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই বলে দাবী করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ফুঁসে উঠছে সাগর। ঝড়ো হাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বায়ুমন্ডলে সৃষ্ট গভীর বায়ুচাপ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের নিম্নচাপ।
এরই মাঝে উপকূলসহ দেশে জুড়ে শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে স্থানভেদে সতর্ক সংকেত দেখিয়েছে। দেশের উপকূলীয় সব জেলায় জরুরি খাবার, উদ্ধার সরঞ্জামসহ ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের এক টানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে, আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সব অপারেশন বন্ধ রেখেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। জেটিতে নোঙ্গর করা ১৭ টি জাহাজসহ বহি:নোঙ্গরে অপেক্ষমান জাহাজগুলোকে বন্দর চ্যানেলের বাইরে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ জেলায় ভারী ও হাল্কা বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া বইছে। সিত্রাং মঙ্গলবার ভোর নাগাদ আঘাত হানতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে…ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলায়। গতকাল রাত থেকে দমকা হাওয়াসহ মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এ ভিডিও চিত্রে বিস্তারিত জানাচ্ছেন জুলিয়েট গোমেজ।
সকালে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার ২৬টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব ধরনের নৌ চলাচল ও বিদুৎ বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যাপক প্রভাব পরেছে জনজীবনে। উপকূলীয় জনসাধারণকে সাইক্লোন শেল্টারে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
আইলা, সিডর, আম্পানের পরে আবারও ঘূর্নিঝড়ের খবরে আতংকগ্রস্ত সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ। ষাটের দশকের বেড়িবাঁধের ভঙ্গুর দশায় আবারও প্লাবনের আশংকায় তারা। যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্ততি নেয়া হয়েছে,প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।
ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিপাতে ঝিনাইদহে সকাল থেকে সড়ক, মহাসড়কে মানুষের চলাচল কমেছে। বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল থেকে কোস্ট গার্ডের সহযোগিতায় লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
বৈরী আবহাওয়ায় জীবনযাত্রা অচল হয়ে পরেছে ভোলাতেও। সব রুটে নৌ চলাচল বন্ধ। চরাঞ্চল থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সকালে আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদসংকেত ঘোষণা করার পর এই সিদ্ধান্ত জানায় চট্টগ্রাম বন্দর।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে কক্সবাজারে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশানস। ভ্রমণরত পর্যটকদের সতর্ক করতে সৈকতে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে লাল পতাকা। বন্ধ রয়েছে সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকাগুলো ইতোমধ্যেই উপকূলে ফিরে এসেছে।