কলকাতার একটি এজেন্ট জানায়, ভারতের টি২০ লিগ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (কেকেআর) ই-মেইলে নিশ্চিত করেন সাকিব৷
এ ব্যাপারে সাকিব আল হাসানের মোবাইলে কল করে আর হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেওয়া হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি৷ তবে জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের একজন সদস্যকে সাকিব বলেছেন, বিসিবি অনাপত্তিপত্র না দেওয়ায় তাঁর কোনো আক্ষেপ নেই৷ শুধু ছোট্ট করে বলেছিলেন, ‘দিলে ভালো হতো, দেয়নি অসুবিধা নেই৷’
৩৬ বছর, বয়স বিবেচনায় সাকিবের শেষ আইপিএল হতে পারত এটি৷ এ কারণে লিগের প্রথম থেকে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ থাকায় অনাপত্তিপত্র দেয়নি বিসিবি৷ এ নিয়ে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকেও বিশেষ অনুরোধ জানাননি সাকিব৷
সাকিব-লিটন দুজনকেই নিয়েছে কেকেআর৷ বিসিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮ এপ্রিলের পরে অনাপত্তিপত্র কার্যকর হবে দুজনের৷ ২৫ দিনের মতো আইপিএলে থাকতে পারতেন তারা৷ কারণ ইংল্যান্ডের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটি হবে ৯ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত৷ এর আগে ৫ মে একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ৷ যার অর্থ ৩ মের মধ্যে সাকিব আর লিটনকে ইংল্যান্ডে যেতেই হবে৷ আর আইপিএল শেষ হবে ২৮ মে অর্থাৎ ৮ এপ্রিল থেকে ২ মে, আবার ১৫ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত আইপিএলে খেলার সুযোগ ছিল সাকিবের৷ কিন্তু এভাবে ভেঙে ভেঙে বিদেশি ক্রিকেটার রাখতে চায় না কেকেআর৷
দলটির কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন বাংলাদেশি এ দুই ক্রিকেটারকে আরও বেশি সময় পাওয়া যাবে৷ বিসিবির শক্ত অবস্থানের কারণে সেটা সম্ভব না হওয়ায় সাকিব-লিটনকে কেকেআর থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াতে৷ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রস্তাবে সাকিব রাজি হলেও লিটনের বিষয়টি ঝুলে রয়েছে৷ উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার বিসিবি থেকে অনাপত্তিপত্রও নিয়ে রেখেছেন৷ টেস্ট শেষ করেই ভারতে বিমান ধরতে পারেন৷ লিটন-মুস্তাফিজ অনাপত্তিপত্র নিলেও সাকিব নেননি৷
মূলত আর্থিক লাভ-ক্ষতির পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক চাপের বিষয়টিও সিদ্ধান্ত নিতে সাকিবকে প্রভাবিত করেছে বলে জানান ক্রিকেটের এক কর্মকর্তা৷ আইপিএলে গেলে ছয় থেকে সাতটি ম্যাচে দলের সঙ্গে থাকা হতো সাকিবের৷ ম্যাচ না খেলে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকলে যে টাকা পাবেন, তার চেয়ে বেশি পাবেন জাতীয় দল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলে৷ বোনাস হিসেবে থাকছে চাপমুক্ত থাকতে পারা৷ নিয়মিত সময় দিতে পারবেন বিজ্ঞাপনী কাজেও৷
গতকাল টিম হোটেল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসকে সাকিব জানান, আইপিএলকে না করে দিয়েছেন তিনি৷ একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, জালাল ইউনুসের কাছে আইপিএলে না যাওয়ার কারণও বলেছেন টেস্ট অধিনায়ক৷ যদিও ফোনে যোগাযোগ করা হলে জালাল ইউনুসকে পাওয়া যায়নি৷
সাকিব নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট শেষ করে মোহামেডানের হয়ে লিগের ম্যাচ খেলবেন৷ মোহামেডান ক্রিকেট কমিটির সহসভাপতি এ জি এম সাব্বির বলেন, ‘সাকিব ৮ এপ্রিল ম্যাচ খেলবেন এটা নিশ্চিত৷ আইপিএলে না গেলে বাকি ম্যাচ খেলবেন৷’
সাধারণত আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারকে এমনিতে বাদ দিতে পারে না৷ শুধু চোট বা ক্রিকেটার স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে বিকল্প নিতে পারবে তারা৷
ডয়চে ভেলে