কর্ণফুলীর কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে নগরজুড়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ
- আপডেট সময় : ০২:৩৬:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুন ২০২৩
- / ১৫৬৪ বার পড়া হয়েছে
ঘরে চুলা জ্বলছে। নিয়মিত বিলও পরিশোধ করছেন। ইআরপি সফটওয়ারেও গ্রাহকের অস্তিত্ব আছে। কিন্তু সংযোগটিই ভুয়া। রেকর্ডে যে ঠিকানা আছে সেখানেও রয়েছে অস্পষ্টতা। চট্টগ্রামের কর্ণফূলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানীর রাজস্ব ও আইটি শাখার কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারি মিলে নগরজুড়ে এমন আড়াই হাজার অবৈধ সংযোগ দিয়ে রেখেছেন বছরের পর বছর ধরে।
পেট্রোবাংলার এক তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়লে, নিচের স্তরের তিন কর্মচারীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা করছে কর্ণফূলী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটিকে সামান্য বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে এই ঘটনাকে জ্বালানী খাতের অরাজকতার আরেকটি নজীর হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকার হাজী আমীর ছাফা নামের এক গ্রাহকের ৪ টি চুলার অনুমোদন আছে। গেলো ৩০ মে কোনো ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই মালিকানা পরিবর্তনের কথা বলে, ফয়জুন্নেসা চৌধুরীর নামে ২৭ টি চুলার অনুমোদন দিয়েছে কর্ণফূলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানী। অথচ ২০১৫ সাল থেকে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রেখেছে সরকার।
অভিনব এই জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ হলে, তোলপাড় শুরু হয় কর্ণফুলী ও পেট্রোবাংলায়। তরিঘরি করে ৭ জুন খাতা কলমে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দুটি ঠিকানার কোনটিরই অস্তিত্ব নেই। অর্থাৎ ভুয়া ঠিকানায় সংযোগগুলো এখনো চলছে।
কর্ণফূলী সংশ্লিষ্টরা জানায়, কোনো গ্রাহকের মালিকানা পরিবর্তন করতে হলে মার্কেটিং, রাজস্ব ও আইটি বিভাগের সমন্বয়ে বেশ কিছু জটিল প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। কিন্তু বায়েজিদের এই ঘটনার পর ইআরপি সফটওয়ার ঘাটাঘাটি করে এমন আড়াই হাজার সংযোগের অস্তিত্ব মিলেছে; যেগুলোর ক্ষেত্রে কোন নিয়মই মানা হয়নি। এতে হতবাক ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংঠনগুলো।
অভিযোগ রয়েছে রাজস্ব বিভাগের জিএম খায়রুল হাসান, আইটি বিভাগের জিএম রইস উদ্দিন ও ডিজিএম হাসান সোহরাবের নেতৃত্বাধীন একটি সিন্ডিকেট এই অবৈধ সংযোগের মুল হোতা। বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে দুই দিন ধর্না দিলেও ক্যামেরার সামনে কথা বলেননি কেউ। মুঠোফোনেও একে অন্যের ওপর দায় চাপান।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় পেট্রোবাংলার নির্দেশে তদন্ত কমিটি করে কর্ণফুলী। কিন্তু তদন্ত শুরুর আগেই নিচের স্তরের তিন কর্মচারীকে অব্যাহতিও দেয়া হয়। এতে তদন্তের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। গ্যাস বিতরণ কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে অবৈধ সংযোগের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু অভিনব এই জালিয়াতির ঘটনা এটাই