০১:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

চূড়ান্ত আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি, টানা কর্মসূচি আওয়ামী লীগের

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৭:১৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুন ২০২৩
  • / ১৬১৯ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঈদের পর এক দফার আন্দোলন শুরু করবে বিএনপি ও তার শরিকরা৷ তারা মনে করছে, সরকারের বিদায় ছাড়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পুরণ হবে না৷ আর আওয়ামী লীগ টানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলা ও নির্বাচন করতে চাচ্ছে৷

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে  যে, তারা মনে করছেন জুলাই-আগস্টের মধ্যেই যা করার করতে হবে কারণ এরপর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের তফসিল হয়ে গেলে দলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নানা মত তৈরি হতে পারে। তখন আন্দোলন জমানো কঠিন হবে। সরকার তখন বিএনপির মধ্য থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী খুঁজতে পারে। জাতীয় পার্টিসহ আরো কিছু রাজনৈতিক দল নানা হিসাব নিকাশ করে নির্বাচনমুখী হতে পারে। আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল তো আছেই। তাই নির্বাচনের হাওয়া শুরু হওয়ার আগেই সরকারকে বিদায় করে  বিএনপি নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করে নিতে চায়। তারা মনে করে, এই সময়ে সরকারের ওপর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়বে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি৷ এবারের আন্দোলন হবে অতীতে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যেভাবে আন্দোলন করেছে সেভাবে। তারা জাতীয় পার্টি ও জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করেছে। আমরা দেখেছি দেশের মানুষ দেখেছে তারা কীভাবে আন্দোলন করেছে। আমরাও সেভাবে করব। রাজপথের আন্দোলন যেভাবে হয় সেভাবে হবে।”

সেই আন্দোলন কতটা কঠোর হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। সরকার যদি আমাদের আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করে আমরাও তার জবাব দেব, প্রতিরোধ করব।”

তিনি মনে করেন, “ঈদের পর সরকারের ওপর সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়বে। আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়বে সরকার।”

মঙ্গলবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঈদের পর দেশ বাঁচাতে “মেহনতি জনতার পদযাত্রা”  কর্র্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আগামী ১৫ জুলাই নোয়াখালীতে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর দিনাজপুরে ১৯ জুলাই, রাজশাহীতে ২৮ জুলাই, যশোরে ৫ আগস্ট, হবিগঞ্জে ১২ আগস্ট ও বরিশালে ১৯ আগস্ট কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচি সফল করবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, তাঁতীদল ও মৎস্যজীবী দল। কর্মসূচি বাস্তবায়নের সমন্বয়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ওই চার সংগঠনের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন। তারা এই এলাকাগুলোতে সমাবেশও করবে। ঢাকায়ও এই কর্মসূচি হতে পারে।

বিএনপির শ্রমিক দলের মাধ্যমে ঢাকা ছাড়া ছয় শহরে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে। ১৪ জুলাই চট্টগ্রামে প্রথম সমাবেশ হবে। এরপর গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহে সমাবেশ হবে।

বিএনপির চলমান কর্মসূচির মধ্যে আছে “তারুণ্যের সমাবেশ”। ১৮ জুন চট্টগ্রাম থেকে এটা শুরু হয়েছে। ২২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। আগামী ৯ জুলাই সিলেট এবং ১৭ জুলাই খুলনায় এই সমাবেশ হবে।

বিএনপি নেতারা বলছেন এটা আসলে মূল কর্মসূচি নয়। এর মাধ্যমে সব শ্রেণির মানুষকে আন্দোলনে যুক্ত করা হবে। এই কর্মসূচির মধ্যেই নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে। এজন্য যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছে তাদের সঙ্গে দ্রুতই বৈঠক হবে। বিএনপি চায় তাদের যুগপৎ আন্দোলনে শরিক সব দলকে নিয়ে নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করে এক দফার সরকার পতনের আন্দোলনে যেতে। সেটা তারা ১৫ জুলাইয়ের আগেই চূড়ান্ত করতে চান। এখন পর্যন্ত বিএনপি এককভাবেই কর্মসূচি ঘোষণা করছে।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক “গণতন্ত্র মঞ্চ” আলাদাভাবে ১৯, ২০ এবং ২১ জুলাই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোড মার্চ করবে। এর আগে ১৭ জুলাই বরিশালে তাদের সমাবেশ করার কথা আছে। তারাও ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় পদযাত্রাসহ সমাবেশ করতে চায়। এইসব কর্মসূচি নিয়ে ৪ জুলাই তারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করবে।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “এই সরকারের বিদায় ছাড়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন সম্ভব নয়। তাই চূড়ান্ত আন্দোলন এক দফারই হবে। আমরা  মনে করি জুলাই আগস্টই চূড়ান্ত আন্দোলনের সময়। এরপর নির্বাচনের তফসিলের সময় এসে যাবে। তার আগেই আমরা আমাদের দাবি আদায়ের চূড়ান্ত আন্দোলন করব। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছেন তাদের নিয়েই কর্মসূচি দেয়া হবে।”

ধারাবাহিক কর্মসূচি আওয়ামী লীগের

ঈদের পরে আওয়ামী লীগ সারাদেশে টানা কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। এরমধ্যে আছে শান্তি সমাবেশ, জনসভা, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ। ১-২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা  কোটালিপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে মত বিনিময় করবেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আটটি টিম সারাদেশ সফর শুরু করবে ঈদের পর থেকেই।

জুলাই মাসে আওয়ামী লীগের আর কোনো কর্মসূচি এখনো ঘোষণা করা না হলেও ঈদের পরই কর্মসূচি দেয়া হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ঢাকা থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তাদের ধারাবাহিক শান্তি সমাবেশ চলবে। বিএনপির কর্মসূচির দিকে খেয়াল রেখে এলাকায় এলাকায় শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি দেয়া হবে। আর  স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মসূচিও দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের টিম জুলাই থেকেই সফর শুরু করবে। এই টিম মূলত আগামী নির্বাচন এবং বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলায় নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। পুরো আগস্ট মাস জুড়ে ঢাকাসহ সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকীর শোকের কর্মসূচি পালন করবে দলটি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা পুরোদমে নির্বাচনের কাজে নেবে যাবে। ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

জুলাই থেকেই আওয়ামী লীগ ১৪ দলকে সারাদেশে সক্রিয় করবে। আওয়ামী লীগ চাইছে নির্বাচন পর্যন্ত সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা ১৪ দলকে সাথে নিয়েই করবে। ১৪ দলকে  সক্রিয় করতে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের জুলাই মাসেই বৈঠক হতে পারে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, “বিএনপির এই এক দফার আন্দোলনকে আমরা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছি না। তারা ২০১২-১৩ সালেও এক দফার সরকার পতনের  আন্দোলন করেছে।  এগুলো তাদের বাগাড়ম্বর। তাদের এক নেতা কারাগারে। আরেক নেতা বিদেশে পলাতক। তাদের আন্দোলন সফল হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাদের অপকর্ম দেশের মানুষ ভুলে যায়নি।”

তার কথা, “আওয়ামী লীগ বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোর জন্য কোনো কর্মসূচি দেয়নি।  জুলাই মাসে আমাদের সাংগঠনিক কর্মসূচি আছে। আগস্ট শোকের মাস। মাসজুড়ে আমাদের কর্মসূচি আছে। তারপর আমরা নির্বাচনের কাজে নেবে যাব। ফলে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠেই আছে আওয়ামী লীগ।”

তিনি বলেন,”বিএনপি তার কর্মসূচি পালন করবে। কিন্তু তারা যদি কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাহলে আমরা প্রতিরোধ করব। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনির সদস্যরা প্রতিরোধ করবে।”

তার ভাষায়, “বিএনপি আসলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। তারা  সরকারের পতন ঘটাতে বিদেশি ষড়যন্ত্রের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে। বিদেশিরা পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারে। বন্ধু হিসেবে পরামর্শ দিতে পারে। তবে তাদের হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। এই সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পাঁচটি সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন তা প্রমাণ করেছে।’’

ডয়চে ভেলে 

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

চূড়ান্ত আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি, টানা কর্মসূচি আওয়ামী লীগের

আপডেট সময় : ০৭:১৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুন ২০২৩

ঈদের পর এক দফার আন্দোলন শুরু করবে বিএনপি ও তার শরিকরা৷ তারা মনে করছে, সরকারের বিদায় ছাড়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পুরণ হবে না৷ আর আওয়ামী লীগ টানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলা ও নির্বাচন করতে চাচ্ছে৷

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে  যে, তারা মনে করছেন জুলাই-আগস্টের মধ্যেই যা করার করতে হবে কারণ এরপর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের তফসিল হয়ে গেলে দলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নানা মত তৈরি হতে পারে। তখন আন্দোলন জমানো কঠিন হবে। সরকার তখন বিএনপির মধ্য থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী খুঁজতে পারে। জাতীয় পার্টিসহ আরো কিছু রাজনৈতিক দল নানা হিসাব নিকাশ করে নির্বাচনমুখী হতে পারে। আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল তো আছেই। তাই নির্বাচনের হাওয়া শুরু হওয়ার আগেই সরকারকে বিদায় করে  বিএনপি নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করে নিতে চায়। তারা মনে করে, এই সময়ে সরকারের ওপর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়বে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি৷ এবারের আন্দোলন হবে অতীতে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যেভাবে আন্দোলন করেছে সেভাবে। তারা জাতীয় পার্টি ও জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করেছে। আমরা দেখেছি দেশের মানুষ দেখেছে তারা কীভাবে আন্দোলন করেছে। আমরাও সেভাবে করব। রাজপথের আন্দোলন যেভাবে হয় সেভাবে হবে।”

সেই আন্দোলন কতটা কঠোর হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। সরকার যদি আমাদের আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করে আমরাও তার জবাব দেব, প্রতিরোধ করব।”

তিনি মনে করেন, “ঈদের পর সরকারের ওপর সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়বে। আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়বে সরকার।”

মঙ্গলবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঈদের পর দেশ বাঁচাতে “মেহনতি জনতার পদযাত্রা”  কর্র্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আগামী ১৫ জুলাই নোয়াখালীতে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর দিনাজপুরে ১৯ জুলাই, রাজশাহীতে ২৮ জুলাই, যশোরে ৫ আগস্ট, হবিগঞ্জে ১২ আগস্ট ও বরিশালে ১৯ আগস্ট কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচি সফল করবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, তাঁতীদল ও মৎস্যজীবী দল। কর্মসূচি বাস্তবায়নের সমন্বয়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ওই চার সংগঠনের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন। তারা এই এলাকাগুলোতে সমাবেশও করবে। ঢাকায়ও এই কর্মসূচি হতে পারে।

বিএনপির শ্রমিক দলের মাধ্যমে ঢাকা ছাড়া ছয় শহরে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে। ১৪ জুলাই চট্টগ্রামে প্রথম সমাবেশ হবে। এরপর গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহে সমাবেশ হবে।

বিএনপির চলমান কর্মসূচির মধ্যে আছে “তারুণ্যের সমাবেশ”। ১৮ জুন চট্টগ্রাম থেকে এটা শুরু হয়েছে। ২২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। আগামী ৯ জুলাই সিলেট এবং ১৭ জুলাই খুলনায় এই সমাবেশ হবে।

বিএনপি নেতারা বলছেন এটা আসলে মূল কর্মসূচি নয়। এর মাধ্যমে সব শ্রেণির মানুষকে আন্দোলনে যুক্ত করা হবে। এই কর্মসূচির মধ্যেই নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে। এজন্য যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছে তাদের সঙ্গে দ্রুতই বৈঠক হবে। বিএনপি চায় তাদের যুগপৎ আন্দোলনে শরিক সব দলকে নিয়ে নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করে এক দফার সরকার পতনের আন্দোলনে যেতে। সেটা তারা ১৫ জুলাইয়ের আগেই চূড়ান্ত করতে চান। এখন পর্যন্ত বিএনপি এককভাবেই কর্মসূচি ঘোষণা করছে।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক “গণতন্ত্র মঞ্চ” আলাদাভাবে ১৯, ২০ এবং ২১ জুলাই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোড মার্চ করবে। এর আগে ১৭ জুলাই বরিশালে তাদের সমাবেশ করার কথা আছে। তারাও ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় পদযাত্রাসহ সমাবেশ করতে চায়। এইসব কর্মসূচি নিয়ে ৪ জুলাই তারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করবে।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “এই সরকারের বিদায় ছাড়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন সম্ভব নয়। তাই চূড়ান্ত আন্দোলন এক দফারই হবে। আমরা  মনে করি জুলাই আগস্টই চূড়ান্ত আন্দোলনের সময়। এরপর নির্বাচনের তফসিলের সময় এসে যাবে। তার আগেই আমরা আমাদের দাবি আদায়ের চূড়ান্ত আন্দোলন করব। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছেন তাদের নিয়েই কর্মসূচি দেয়া হবে।”

ধারাবাহিক কর্মসূচি আওয়ামী লীগের

ঈদের পরে আওয়ামী লীগ সারাদেশে টানা কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। এরমধ্যে আছে শান্তি সমাবেশ, জনসভা, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ। ১-২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা  কোটালিপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে মত বিনিময় করবেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আটটি টিম সারাদেশ সফর শুরু করবে ঈদের পর থেকেই।

জুলাই মাসে আওয়ামী লীগের আর কোনো কর্মসূচি এখনো ঘোষণা করা না হলেও ঈদের পরই কর্মসূচি দেয়া হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ঢাকা থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তাদের ধারাবাহিক শান্তি সমাবেশ চলবে। বিএনপির কর্মসূচির দিকে খেয়াল রেখে এলাকায় এলাকায় শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি দেয়া হবে। আর  স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মসূচিও দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের টিম জুলাই থেকেই সফর শুরু করবে। এই টিম মূলত আগামী নির্বাচন এবং বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলায় নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। পুরো আগস্ট মাস জুড়ে ঢাকাসহ সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকীর শোকের কর্মসূচি পালন করবে দলটি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা পুরোদমে নির্বাচনের কাজে নেবে যাবে। ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

জুলাই থেকেই আওয়ামী লীগ ১৪ দলকে সারাদেশে সক্রিয় করবে। আওয়ামী লীগ চাইছে নির্বাচন পর্যন্ত সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা ১৪ দলকে সাথে নিয়েই করবে। ১৪ দলকে  সক্রিয় করতে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের জুলাই মাসেই বৈঠক হতে পারে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, “বিএনপির এই এক দফার আন্দোলনকে আমরা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছি না। তারা ২০১২-১৩ সালেও এক দফার সরকার পতনের  আন্দোলন করেছে।  এগুলো তাদের বাগাড়ম্বর। তাদের এক নেতা কারাগারে। আরেক নেতা বিদেশে পলাতক। তাদের আন্দোলন সফল হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাদের অপকর্ম দেশের মানুষ ভুলে যায়নি।”

তার কথা, “আওয়ামী লীগ বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোর জন্য কোনো কর্মসূচি দেয়নি।  জুলাই মাসে আমাদের সাংগঠনিক কর্মসূচি আছে। আগস্ট শোকের মাস। মাসজুড়ে আমাদের কর্মসূচি আছে। তারপর আমরা নির্বাচনের কাজে নেবে যাব। ফলে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠেই আছে আওয়ামী লীগ।”

তিনি বলেন,”বিএনপি তার কর্মসূচি পালন করবে। কিন্তু তারা যদি কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাহলে আমরা প্রতিরোধ করব। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনির সদস্যরা প্রতিরোধ করবে।”

তার ভাষায়, “বিএনপি আসলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। তারা  সরকারের পতন ঘটাতে বিদেশি ষড়যন্ত্রের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে। বিদেশিরা পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারে। বন্ধু হিসেবে পরামর্শ দিতে পারে। তবে তাদের হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। এই সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পাঁচটি সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন তা প্রমাণ করেছে।’’

ডয়চে ভেলে