১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা কত?

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১৮৩৩ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসেবে দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ। এই বেকারদের মধ্যে ১৬ লাখ ৭০ হাজার পুরুষ আর আট লাখ ৩০ হাজার নারী।

এই হিসাব চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের। আগের প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চ মাসে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৬ লাখ ৩০ হাজার। সেই হিসেবে দেশে বেকারের সংখ্যা তিন মাসে কমেছে ৯০ হাজার।  তাই এখন বেকারত্বের হার কিছুটা কমে ৩.৪১ শতাংশ। আগের প্রান্তিকে ছিলো ৩.৫১ শতাংশ। এটা হিসাব করা হয় মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর বিপরীতে। কিন্তু বাস্তবতা কী বলছে?

বেকারত্বের এই হিসাব করা হয় আইএলওর সংজ্ঞা ধরে।  আর তা হলো ৩০ দিন ধরে কাজ প্রত্যাশী একজন মানুষ যদি শেষের সাত দিনে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ না পান তাহলে তাকে বেকার হিসেবে ধরা হয়। যদি সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা কাজের সুযোগ পান তাহলে তাকে  আর বেকার বলা হয়না।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বেকারত্বে হিসাবের এই পদ্ধতিতে গলদ আছে। এর বাইরে বাংলাদেশে প্রচুর ছদ্ম বেকার আছে। তাদের কর্মজীবী হিসেবেই দেখানো হয়।  এছাড়া যারা কাজে আছেন তাদের বড় একটি অংশের আয় খুবই কম।

বাংলাদেশে শ্রম বাজারে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বিবিএসের হিসাবে এখন  সাত কোটি ৩২ লাখ ৯০ হাজার। কাজে নিয়োজিত আছেন সাত কোটি সাত লাখ ১০ হাজার।

কাজের মধ্যেই নেই কিন্তু বেকার হিসেবে চিহ্নিত হন না, এমন জনগোষ্ঠীর এপ্রিল- জুন প্রান্তিকে বেড়েছে।  সাধারণ ছাত্র, অসুস্থ, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত ও গৃহিণীরা এই তালিকায় আছেন। বর্তমানে এমন জনগোষ্ঠী আছেন চার কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার জন। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের চেয়ে তা প্রায় ১০ লাখ বেড়েছে।  আর এই এই ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা তিন গুণ বেশি।

দেশে শিক্ষত বেকারের সংখ্যা কত তা বিবিএসের জরিপে বলা হয়নি। কিন্তু  গত বছরের আগস্টে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ( টিআইবি) জানায় দেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর শকতরা ৪৭ ভাগ বেকার। ওই বছর একই সময়ে আইএলও জানায়  বাংলাদেশি তরুণদের বেকারত্বের হার ১০.৬ শতাংশ, যদিও জাতীয় পর্যায়ের বেকারত্বের হার তখন ছিলো  মাত্র ৪.২ শতাংশ।

বিবিএসের ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনার  প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণের সংখ্যা তিন কোটি ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৮১১ জন। যা  মোট জনসংখ্যার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ।

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশে যুবগোষ্ঠীর বড় অংশ আর্থসামাজিক ঝুঁকির মধ্যে আছে। বৈষম্য আর গুণগত শিক্ষার অভাবে ৭৮ শতাংশ তরুণ মনে করেন, পড়াশোনা করে তারা চাকরি পাবেন না, গরিব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার ৯০ শতাংশ। চাকরি, পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণে নেই ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণের।

বাংলাদেশউন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপে উঠে এসেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশই বেকার থাকছেন। ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি পান। ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনো অন্য কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর বা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছেন কিংবা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তিন শতাংশ স্ব-উদ্যোগে কিছু করছেন।

আর ২০১৯ সালে বিআইডিএসের এক গবেষণায় দেখা যায়,শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে সম্পূর্ণ বেকার ৩৩.৩২ শতাংশ। বাকিদের মধ্যে ৪৭.৭ শতাংশ সার্বক্ষণিক চাকরিতে, ১৮.১ শতাংশ পার্টটাইম বা খণ্ডকালীন কাজে নিয়োজিত।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন,” বিবিএসের জরিপ অনেকটা অনুমান নির্ভর।  বাংলাদেশে খাত ভিত্তিক কর্মসংস্থানের কোনো  শ্রম জরিপ নেই। আমরা করেনার সময় দেখেছি বেকারত্ব বেড়েছে।  পরে সেটা কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও ইক্রেন যুদ্ধ ও মন্দা  পরিস্থিতির কারণে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আর এখন যে  বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তাতে ভবিষ্যতে আরো বেকারত্ব বাড়বে।”

তার কথায়,”  দেশে শতকরা ২০ ভাগের মতো ছদ্ম বেকার রয়েছে। যাদের উৎপাদনশীলতা এবং আয় খুবই কম। আবার বিপূল সংখ্যক মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাদের কাজও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের নয়। আর শিক্ষিত বেকারের চাপ বাড়ছে। কারণ তাদের কর্মসংস্থানের জন্য যে বিনিয়োগ দরকার তা হচ্ছেনা।”

বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. এ কে এস মুরশিদ বলেন,” মাসে একদিন কয়েক ঘণ্টা কাজ পেলেই তাকে আর বেকার বলা হয়না। এই পদ্ধতিতে বেকার হিসাব করলে বেকারের সংখ্যা তো কম হবেই। বিবিএস যেভাবে জরিপ করে তাতে তো দেশে এখন বেকার নেই বললেই চলে।  শতকরা তিন-চার ভাগ। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।”

তার কথায়,” দেশে ছদ্ম বেকারত্ব আছে। যেমন  কৃষিজমিতে যেখানে পাঁচজন  লোক দরকার সেখানে ১০ জন কাজ করছেন। মৌসুমি বেকারত্ব আছে।  যারা হয়তো বছরে পাঁচ-ছয় মাস কাজ পান। তাই একটি প্রান্তিক দিয়ে বাস্তব অবস্থা বোঝা যায়না। এটা সারা বছরের গড় দিয়ে বোঝা যায়।”

তিনি বলেন,” বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি।  চাহিদা আছে কিন্তু দক্ষতা না থাকায় তারা কাজ পাচ্ছেন না। তাই বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পে প্রচুর বিদেশি দক্ষ লোক কাজ করেন। বাংলাদেশিরা শিক্ষিতরা ওই কাজ পারলে নিশ্চয়ই প্রাধান্য পেতেন।”

এই  অর্থনীতিবিদ বলেন, “আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপরও নির্ভর করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যারা উচ্চ শিক্ষা নেন তারা বেকার থাকেন বেশি। অন্যান্য পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা বেকারের সংখ্যা কম। এখানেই কোয়ালিটি এডুকেশনের প্রশ্ন আসে।”

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা কত?

আপডেট সময় : ১১:৪৮:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৩

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসেবে দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ। এই বেকারদের মধ্যে ১৬ লাখ ৭০ হাজার পুরুষ আর আট লাখ ৩০ হাজার নারী।

এই হিসাব চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের। আগের প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চ মাসে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৬ লাখ ৩০ হাজার। সেই হিসেবে দেশে বেকারের সংখ্যা তিন মাসে কমেছে ৯০ হাজার।  তাই এখন বেকারত্বের হার কিছুটা কমে ৩.৪১ শতাংশ। আগের প্রান্তিকে ছিলো ৩.৫১ শতাংশ। এটা হিসাব করা হয় মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর বিপরীতে। কিন্তু বাস্তবতা কী বলছে?

বেকারত্বের এই হিসাব করা হয় আইএলওর সংজ্ঞা ধরে।  আর তা হলো ৩০ দিন ধরে কাজ প্রত্যাশী একজন মানুষ যদি শেষের সাত দিনে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ না পান তাহলে তাকে বেকার হিসেবে ধরা হয়। যদি সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা কাজের সুযোগ পান তাহলে তাকে  আর বেকার বলা হয়না।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বেকারত্বে হিসাবের এই পদ্ধতিতে গলদ আছে। এর বাইরে বাংলাদেশে প্রচুর ছদ্ম বেকার আছে। তাদের কর্মজীবী হিসেবেই দেখানো হয়।  এছাড়া যারা কাজে আছেন তাদের বড় একটি অংশের আয় খুবই কম।

বাংলাদেশে শ্রম বাজারে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বিবিএসের হিসাবে এখন  সাত কোটি ৩২ লাখ ৯০ হাজার। কাজে নিয়োজিত আছেন সাত কোটি সাত লাখ ১০ হাজার।

কাজের মধ্যেই নেই কিন্তু বেকার হিসেবে চিহ্নিত হন না, এমন জনগোষ্ঠীর এপ্রিল- জুন প্রান্তিকে বেড়েছে।  সাধারণ ছাত্র, অসুস্থ, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত ও গৃহিণীরা এই তালিকায় আছেন। বর্তমানে এমন জনগোষ্ঠী আছেন চার কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার জন। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের চেয়ে তা প্রায় ১০ লাখ বেড়েছে।  আর এই এই ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা তিন গুণ বেশি।

দেশে শিক্ষত বেকারের সংখ্যা কত তা বিবিএসের জরিপে বলা হয়নি। কিন্তু  গত বছরের আগস্টে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ( টিআইবি) জানায় দেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর শকতরা ৪৭ ভাগ বেকার। ওই বছর একই সময়ে আইএলও জানায়  বাংলাদেশি তরুণদের বেকারত্বের হার ১০.৬ শতাংশ, যদিও জাতীয় পর্যায়ের বেকারত্বের হার তখন ছিলো  মাত্র ৪.২ শতাংশ।

বিবিএসের ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনার  প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণের সংখ্যা তিন কোটি ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৮১১ জন। যা  মোট জনসংখ্যার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ।

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশে যুবগোষ্ঠীর বড় অংশ আর্থসামাজিক ঝুঁকির মধ্যে আছে। বৈষম্য আর গুণগত শিক্ষার অভাবে ৭৮ শতাংশ তরুণ মনে করেন, পড়াশোনা করে তারা চাকরি পাবেন না, গরিব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার ৯০ শতাংশ। চাকরি, পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণে নেই ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণের।

বাংলাদেশউন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপে উঠে এসেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশই বেকার থাকছেন। ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি পান। ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনো অন্য কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর বা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছেন কিংবা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তিন শতাংশ স্ব-উদ্যোগে কিছু করছেন।

আর ২০১৯ সালে বিআইডিএসের এক গবেষণায় দেখা যায়,শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে সম্পূর্ণ বেকার ৩৩.৩২ শতাংশ। বাকিদের মধ্যে ৪৭.৭ শতাংশ সার্বক্ষণিক চাকরিতে, ১৮.১ শতাংশ পার্টটাইম বা খণ্ডকালীন কাজে নিয়োজিত।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন,” বিবিএসের জরিপ অনেকটা অনুমান নির্ভর।  বাংলাদেশে খাত ভিত্তিক কর্মসংস্থানের কোনো  শ্রম জরিপ নেই। আমরা করেনার সময় দেখেছি বেকারত্ব বেড়েছে।  পরে সেটা কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও ইক্রেন যুদ্ধ ও মন্দা  পরিস্থিতির কারণে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আর এখন যে  বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তাতে ভবিষ্যতে আরো বেকারত্ব বাড়বে।”

তার কথায়,”  দেশে শতকরা ২০ ভাগের মতো ছদ্ম বেকার রয়েছে। যাদের উৎপাদনশীলতা এবং আয় খুবই কম। আবার বিপূল সংখ্যক মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাদের কাজও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের নয়। আর শিক্ষিত বেকারের চাপ বাড়ছে। কারণ তাদের কর্মসংস্থানের জন্য যে বিনিয়োগ দরকার তা হচ্ছেনা।”

বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. এ কে এস মুরশিদ বলেন,” মাসে একদিন কয়েক ঘণ্টা কাজ পেলেই তাকে আর বেকার বলা হয়না। এই পদ্ধতিতে বেকার হিসাব করলে বেকারের সংখ্যা তো কম হবেই। বিবিএস যেভাবে জরিপ করে তাতে তো দেশে এখন বেকার নেই বললেই চলে।  শতকরা তিন-চার ভাগ। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।”

তার কথায়,” দেশে ছদ্ম বেকারত্ব আছে। যেমন  কৃষিজমিতে যেখানে পাঁচজন  লোক দরকার সেখানে ১০ জন কাজ করছেন। মৌসুমি বেকারত্ব আছে।  যারা হয়তো বছরে পাঁচ-ছয় মাস কাজ পান। তাই একটি প্রান্তিক দিয়ে বাস্তব অবস্থা বোঝা যায়না। এটা সারা বছরের গড় দিয়ে বোঝা যায়।”

তিনি বলেন,” বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি।  চাহিদা আছে কিন্তু দক্ষতা না থাকায় তারা কাজ পাচ্ছেন না। তাই বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পে প্রচুর বিদেশি দক্ষ লোক কাজ করেন। বাংলাদেশিরা শিক্ষিতরা ওই কাজ পারলে নিশ্চয়ই প্রাধান্য পেতেন।”

এই  অর্থনীতিবিদ বলেন, “আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপরও নির্ভর করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যারা উচ্চ শিক্ষা নেন তারা বেকার থাকেন বেশি। অন্যান্য পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা বেকারের সংখ্যা কম। এখানেই কোয়ালিটি এডুকেশনের প্রশ্ন আসে।”

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ