০২:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

আমস্টারডামে রাতের আকর্ষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১২:১৯:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১৫৫৬ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পর্যটকদের কাছে আমস্টারডাম শহরের নানা আকর্ষণ৷ কিন্তু তাদের বেড়ে চলা সংখ্যার কারণে ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন কঠিন হয়ে পড়ছে৷ পৌর কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক উদ্যোগ নিয়ে স্বার্থের সংঘাত বাড়ছে৷

আমস্টারডামের ‘রেড লাইট’ এলাকায় শুক্রবার রাত দশটার সময়েও ব্যস্ততা৷ স্থানীয় বাসিন্দা এল্স ইপিং লক্ষ্য রাখছেন, কেউ বেয়াদপি করছে কিনা৷ তিনি পর্যটকদের ভিড় আর সহ্য করতে পারেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা আমস্টারডামের মধ্যযুগীয় কেন্দ্রস্থল৷ এটা শহরের সবচেয়ে সুন্দর অংশ, একেবারে ডিজনিল্যান্ড৷ কিন্তু সেই ডিজনিল্যান্ডে জানালার পেছনে নগ্ন নারী ও মাদকসেবি পর্যটক থাকে৷ আমরা সেটা সহ্য করতে পারি না৷”

শহর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই পর্যটকদের জন্য পার্টির রমরমা কমাতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ বিশেষ করে ব্রিটেনের মানুষদের জন্য ‘স্টে অ্যাওয়ে’ স্লোগান দিয়ে এক অভিযান শুরু করা হয়েছে৷

কর্তৃপক্ষ সেইসঙ্গে বার ও যৌনপল্লি রাতের আগেই বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে এবং সেই এলাকায় গাঁজা সেবন নিষিদ্ধ করেছে৷ সেই এলাকায় এমন নির্দেশিকা স্পষ্ট শোভা পাচ্ছে৷ শহরের পরিস্থিতি শান্ত করার উদ্যোগ নিয়ে সংশয় নেই৷

তবে রাতের হইহুল্লোড়ের উপর নির্ভর করে যারা উপার্জন করেন, তাদের অবস্থা আরও কঠিন হয়ে উঠছে৷ যেমন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যৌনকর্মী৷ তাঁর মতে, আগের তুলনায় তিন ঘণ্টা আগে যৌনপল্লি বন্ধ করার কারণে সমস্যা হচ্ছে৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা আয়ের একটা বড় অংশ হারিয়েছি৷ সেই ক্ষতি পূরণ করতে আরও মেয়ে পথে নেমে গ্রাহক খুঁজে বাসায় আনার চেষ্টা করছে৷ সেটা সত্যি বিপজ্জনক৷ কয়েক বছর আগে এক যৌনকর্মীকে এমন মারধর করা হয়েছিল, যে সে এখনো কোমায় রয়েছে৷”

কিন্তু বিশাল মাত্রায় পর্যটন শুধু আমস্টারডামের সমস্যা নয়৷ এমন নিষেধাজ্ঞা শুধু স্থানীয় মানুষের একাংশকে সাহায্য করছে৷ ‘মাস টুরিজিম’-এর বিরুদ্ধে আরও টেকসই পদক্ষেপ কেমন হতে পারে? ফ্রেক ওয়ালাগ আমস্টারডাম শহরের রাতের মেয়র৷ তিনি রাতে সক্রিয় নানা ধরনের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং মানুষের সঙ্গে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নেন৷ তাঁর মতে, পৌর কর্তৃপক্ষ ছোট ছোট নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ভুল পথ বেছে নিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এড়িয়ে যাচ্ছে৷ ফ্রেক মনে করছেন, ‘‘আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে পর্যটন শিল্পকে সামলাতে হবে৷ যেমন সস্তার উড়াল৷ সেটা পরিবেশের জন্যও উপকারী হবে৷ তখন উদার গাঁজা নীতি ও যৌনকর্মের মতো আমস্টারডামের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার খর্ব করার প্রয়োজন পড়বে না৷”

আবার শুক্রবার রাতের ব্যস্ততার মাঝে ফেরা যাক৷ এল্স ইপিং পৌরসভার সদস্য ছিলেন বলে অনেকেই তাঁর মুখ চেনেন এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কেও জানেন৷

বাসিন্দাদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘাত ব্যক্তিগত হয়ে উঠতে পারে৷ এল্স ইপিং কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছেন? তিনি বলেন, ‘‘আমার বা অন্যান্যদের প্রতি ব্যবসায়ীদের আগ্রাসী মনোভাব বেড়েই চলেছে৷ আমি সেটাকে প্রশংসা হিসেবে দেখি, কারণ আমরা হুমকি হয়ে উঠেছি৷ কিন্তু ভালো লাগছে না৷”

চলতি বছরে আমস্টারডামে এক কোটি আশি লাখ পর্যটক আসবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ কিছু মানুষের জন্য সেটা দুঃস্বপ্ন হলেও বাকিদের জন্য তা স্বর্ণখনির মতো৷ পৌর কর্তৃপক্ষের জন্য সেটা একটা উভয় সংকট৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে সেই সমস্যা সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷

ডয়চে ভেলে

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আমস্টারডামে রাতের আকর্ষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক

আপডেট সময় : ১২:১৯:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পর্যটকদের কাছে আমস্টারডাম শহরের নানা আকর্ষণ৷ কিন্তু তাদের বেড়ে চলা সংখ্যার কারণে ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন কঠিন হয়ে পড়ছে৷ পৌর কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক উদ্যোগ নিয়ে স্বার্থের সংঘাত বাড়ছে৷

আমস্টারডামের ‘রেড লাইট’ এলাকায় শুক্রবার রাত দশটার সময়েও ব্যস্ততা৷ স্থানীয় বাসিন্দা এল্স ইপিং লক্ষ্য রাখছেন, কেউ বেয়াদপি করছে কিনা৷ তিনি পর্যটকদের ভিড় আর সহ্য করতে পারেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা আমস্টারডামের মধ্যযুগীয় কেন্দ্রস্থল৷ এটা শহরের সবচেয়ে সুন্দর অংশ, একেবারে ডিজনিল্যান্ড৷ কিন্তু সেই ডিজনিল্যান্ডে জানালার পেছনে নগ্ন নারী ও মাদকসেবি পর্যটক থাকে৷ আমরা সেটা সহ্য করতে পারি না৷”

শহর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই পর্যটকদের জন্য পার্টির রমরমা কমাতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ বিশেষ করে ব্রিটেনের মানুষদের জন্য ‘স্টে অ্যাওয়ে’ স্লোগান দিয়ে এক অভিযান শুরু করা হয়েছে৷

কর্তৃপক্ষ সেইসঙ্গে বার ও যৌনপল্লি রাতের আগেই বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে এবং সেই এলাকায় গাঁজা সেবন নিষিদ্ধ করেছে৷ সেই এলাকায় এমন নির্দেশিকা স্পষ্ট শোভা পাচ্ছে৷ শহরের পরিস্থিতি শান্ত করার উদ্যোগ নিয়ে সংশয় নেই৷

তবে রাতের হইহুল্লোড়ের উপর নির্ভর করে যারা উপার্জন করেন, তাদের অবস্থা আরও কঠিন হয়ে উঠছে৷ যেমন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যৌনকর্মী৷ তাঁর মতে, আগের তুলনায় তিন ঘণ্টা আগে যৌনপল্লি বন্ধ করার কারণে সমস্যা হচ্ছে৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা আয়ের একটা বড় অংশ হারিয়েছি৷ সেই ক্ষতি পূরণ করতে আরও মেয়ে পথে নেমে গ্রাহক খুঁজে বাসায় আনার চেষ্টা করছে৷ সেটা সত্যি বিপজ্জনক৷ কয়েক বছর আগে এক যৌনকর্মীকে এমন মারধর করা হয়েছিল, যে সে এখনো কোমায় রয়েছে৷”

কিন্তু বিশাল মাত্রায় পর্যটন শুধু আমস্টারডামের সমস্যা নয়৷ এমন নিষেধাজ্ঞা শুধু স্থানীয় মানুষের একাংশকে সাহায্য করছে৷ ‘মাস টুরিজিম’-এর বিরুদ্ধে আরও টেকসই পদক্ষেপ কেমন হতে পারে? ফ্রেক ওয়ালাগ আমস্টারডাম শহরের রাতের মেয়র৷ তিনি রাতে সক্রিয় নানা ধরনের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং মানুষের সঙ্গে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নেন৷ তাঁর মতে, পৌর কর্তৃপক্ষ ছোট ছোট নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ভুল পথ বেছে নিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এড়িয়ে যাচ্ছে৷ ফ্রেক মনে করছেন, ‘‘আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে পর্যটন শিল্পকে সামলাতে হবে৷ যেমন সস্তার উড়াল৷ সেটা পরিবেশের জন্যও উপকারী হবে৷ তখন উদার গাঁজা নীতি ও যৌনকর্মের মতো আমস্টারডামের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার খর্ব করার প্রয়োজন পড়বে না৷”

আবার শুক্রবার রাতের ব্যস্ততার মাঝে ফেরা যাক৷ এল্স ইপিং পৌরসভার সদস্য ছিলেন বলে অনেকেই তাঁর মুখ চেনেন এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কেও জানেন৷

বাসিন্দাদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘাত ব্যক্তিগত হয়ে উঠতে পারে৷ এল্স ইপিং কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছেন? তিনি বলেন, ‘‘আমার বা অন্যান্যদের প্রতি ব্যবসায়ীদের আগ্রাসী মনোভাব বেড়েই চলেছে৷ আমি সেটাকে প্রশংসা হিসেবে দেখি, কারণ আমরা হুমকি হয়ে উঠেছি৷ কিন্তু ভালো লাগছে না৷”

চলতি বছরে আমস্টারডামে এক কোটি আশি লাখ পর্যটক আসবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ কিছু মানুষের জন্য সেটা দুঃস্বপ্ন হলেও বাকিদের জন্য তা স্বর্ণখনির মতো৷ পৌর কর্তৃপক্ষের জন্য সেটা একটা উভয় সংকট৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে সেই সমস্যা সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷

ডয়চে ভেলে