আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসংযোগ, বিএনপির ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলন
- আপডেট সময় : ১১:৪৪:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১৭৬১ বার পড়া হয়েছে
সরকার পতনের সর্বাত্মক কর্মসূচিতে যাচেছ বিএনপি৷ সোমবার‘ যুগপৎ আন্দোলনের’ কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি৷ মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে তাদের আন্দোলন৷ অন্যদিকে আওয়ামী লীগ শুরু করছে নির্বাচনী জনসংযোগ৷
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে৷ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷ তবে তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করাতে চায়৷ কেননা তফসিল ঘোষণার পর সবাই নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে তখন আন্দোলন জমানো কঠিন হয়ে পড়বে৷ অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সারাদেশে নির্বাচনী জনসংযোগ শুরু করতে যাচ্ছে যা, মঙ্গলবার থেকেই শুরু হতে পারে৷ তবে সোমবার বিএনপি কী কর্মসূচি ঘোষণা করে সেটা দেখে তারা নতুন কর্মসূচিও দেবে বলে জানা গেছে৷
বিএনপির ‘যুগপৎ’ আন্দোলন পরিকল্পনা
সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি৷ আর এই কর্মসূচি হতে পারে প্রথম দফায় ১৫ দিনের জন্য৷ মঙ্গলবার শুরু হয়ে তা চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত৷
রোববার তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি শেষ হয়েছে বিএনপির৷ নতুন কর্মসূচিতে বড় চার-পাঁচটি বড় সমাবেশ ছাড়াও থাকবে রোডমার্চ৷ তারা এই ১৫ দিনে কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় চার-পাঁচটি বড় সমাবেশ করতে চায়৷ আর ঢাকার বাইরে সব বিভাগীয় শহরে রোডমার্চ কর্মসূচি দিতে পারে৷ এই ১৫দিনে প্রতিদিনই ঢাকাসহ সারাদেশে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করবে দলটি৷ মঙ্গলবার ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জে বড় একটি সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুন এই কর্মসূচি শুরু হতে পারে৷
এবার সব কর্মসূচিই বিএনপি এবং তাদের যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ৩৭টি দল একযোগে পালন কববে৷ তাই সোমবার যে কর্মর্সূচি ঘোষণা করা হবে তা ‘যুগপৎ আন্দোলনের’ কর্মসূচি হিসেবেই ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে৷
বিএনপির আন্দোলনের শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (১১দল) সমন্বয়কারী এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘‘১৫ দিনের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে আমাদের সঙ্গে বিএনপির প্রাথমিক আলাপ আলোচনা হয়েছে৷ এই কর্মসূচি হবে বড় বড় জনসভা ও রোডমার্চ৷ ঢাকা, ঢাকার আশেপাশে ও বড় বড় শহরে এটা হবে৷ এই ১৫ দিনের কর্মসূচির মধ্যে যদি শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে না নেন তাহলে তারপর থেকে শুরু হবে টানা অবরোধ, ঘেরাও, অবস্থান ধর্মঘট৷ তবে হরতালের চিন্তা আমরা এখনো করছি না৷’’
পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা অক্টোবরেই আমরা আন্দোলনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান৷ বলেন, ‘‘কারণ নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে৷ তার আগেই আমাদের দাবি আদায় করতে হবে৷ আর এখন থেকে সব কর্মসূচি হবে যুগপৎ৷’’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘আমরা সর্বাত্মক আন্দোলনের দিকে যাচ্ছি৷ এই আন্দোলনে নতুন নতুন কর্মসূচি থাকবে৷ গ্রাম, শহরের সব জায়গায় সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তুলব৷ গণ-আন্দোলন গড়ে তুলব৷ আমাদের দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন৷ এই দাবি আদায়ের জন্য আমাদের যা করণীয় তা করবো৷’’
তার কথা, ‘‘এই আন্দোলনে যুগপৎ আন্দোলনের বাইরেও আরো অনেক দল যোগ দিচ্ছে৷ সরকারের সঙ্গে দুই-চারটি সুবিধাভোগী দল ছাড়া আর কেউ নেই৷ সরকারের লজ্জা থাকলে এখনই তারা পদত্যাগ করত৷ আর আমাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে সব সময়ই কথা হচ্ছে৷ এবার সব কর্মসূচি যুৎপৎভাবে পালন করা হবে৷’’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রস্তুতি
এদিকে শাসক দল আওয়ামী লীগ সারাদেশে নির্বাচনী জনসংযোগ শুরু করতে যাচ্ছে৷ সেটা মঙ্গলবার থেকেই শুরু হতে পারে৷ সোমবার বিএনপি কী কর্মসূচি ঘোষণা করে সেটা দেখে তারা নতুন কর্মসূচিও দেবে৷
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, ‘‘যারা এমপি, যারা প্রার্থী হতে চান আগামী নির্বাচনে তারা সবাই এখন নির্বাচনী জনসংযোগে আছেন৷ এটা আরো বাড়ানো হচ্ছে৷ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মসূচি আরো বাড়ানো হচ্ছে৷’’
পাল্টা কর্মসূচি হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শান্তি সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি চলছে৷ ঢাকা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আমাদের প্রতিদিনই কর্মসূচি আছে৷ নির্বাচন পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে৷ তাই আমাদের পাল্টা কর্মসূচি দিতে হবে কেন? আমাদের নিজেদেরই তো অনেক কর্মসূচি আছে৷’’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি যদি জনসভা ও রোডমার্চের নামে অতীতের মতো নাশকতা করে৷ গান পাউডার দিয়ে গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, তাহলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরার সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করবে৷’’
ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ