নিজ অর্থায়নে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে একুশে পদক সম্মাননা পাচ্ছেন জিয়াউল হক
- আপডেট সময় : ০৬:৪২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১৬৬৫ বার পড়া হয়েছে
নিজ অর্থায়নে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পাঠাগার গড়ে এবার পাচ্ছেন একুশে পদক পাচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জিয়াউল হক। আনন্দিত হওয়ার চেয়ে বিস্মিত তিনি। ‘বেচি দই, কিনি বই’ শ্লোগানের রূপকার- সাদা মনের মানুষ- সমাজসেবায় এমন গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাচ্ছেন এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। শুধু বই নয়….ঘরবাড়ি নির্মাণ থেকে শুরু করে এলাকার টিউবওয়েলও স্থাপন, অসহায়দের কম্বল, পোষাক বিতরণ করে বেড়ান তিনি। চরম দরিদ্রতাকে জয় করে পথচলা জিয়াউল চাঁপাইনবাবগঞ্জকে আবারো গৌরবান্বিত করেছেন।
লেখাপড়া পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। পরিবারে অভাব ঘোঁচাতে নামেন দুধ বিক্রিতে। স্কুলে না যাওয়ার আক্ষেপটা থেকেই যায় মনে মনে। দই বিক্রির অর্থ থেকে এলাকার গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বইসহ অন্যান্য উপকরণ কিনে দিতে শুরু করেন। এভাবে আলো ছড়াতে থাকেন শিক্ষার প্রতি অনুরাগী জিয়াউল হক। বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চামা মুশরীভুজা গ্রামে।
যেখানে বইয়ের বিশাল ভাণ্ডার। প্রতিদিনের দই বিক্রির টাকা থেকে কিনতেন দুই-একটি বই অথবা পত্রপত্রিকা। ১৯৬৯ সাল থেকে গড়ে তুলেন ‘জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার’। নিজ বাড়ির এই পাঠাগারে প্রায় ২০ হাজারের উপরে বই রয়েছে।
জিয়াউল হক সমাজের নানা সেবায় নিজেকে যুক্ত রেখেছেন সেই থেকে। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের পোষাক, মানুষের জন্য কম্বল, টিউবওয়েল, টিন আর নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। তার এমন কাজে সমাজের অনেক বিত্তবান ও প্রশাসনের কর্তারাও জড়িত।
জিয়াউল হকের একুশে পদক প্রাপ্তিতে আনন্দে ভাসছে ভোলাহাটসহ পুরো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাবাসী। জিয়াউল হকের একুশে পদক প্রাপ্তি অন্যদেরকে সমাজসেবায় আগ্রহী করার পাশাপাশি অনুপ্রাণিত করবে বলে দাবি সচেতন মহলের।
একুশে পদকের স্বীকৃতি তাকে আরো অনুপ্রাণিত করবে বলে দাবি জিয়াউল হকের।
শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবী জিয়াউল হক কাজের স্বীকৃতিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এর আগেও পেয়েছেন বহু সম্মাননা । সরকারের এমন স্বীকৃতি গর্বের বিষয় বলছেন পরিবারের সদস্যরাও।
পদ-পদবি, ক্ষমতা ও অর্থ না থাকলেও যে সমাজে অবদান রাখা যায় তা প্রমাণ সাদা মনের এই মানুষটি।
৬৭ বছর ধরে দই বিক্রেতা জিয়াউল হক নিজের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ঘোষণার খবর পান ১৩ ফেব্রুয়ারি।