তাণ্ডব চালিয়ে উপকূল থেকে বিদায় নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’
- আপডেট সময় : ১০:৩৫:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
- / ১৭৪৭ বার পড়া হয়েছে
তাণ্ডব চালিয়ে উপকূল থেকে বিদায় নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। তবে রেখে গেছে ক্ষতের দাগ। তীব্র ঝড় সাথে ভারি বর্ষণ- নিঃস্ব করেছে লাখো মানুষকে। ঘরবাড়ি ও সহায়-সম্বল হারিয়ে দিগ্ ভ্রান্ত উপকূলের মানুষ। এই ক্ষতি কাটিয়ে কীভাবে তারা পুনরায় নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়াবেন সেটি নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা তাদের। সরকারি হিসাব মতে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে অন্তত ১৯ জেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জেলায় প্রাণ গেছে ১৪ জনের। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য ও চিত্রে ডেস্ক প্রতিবেদন ।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা উপজেলার ৩টি জায়গার ১৫০ মিটার ভেঙে বাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ’ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। রাতজুড়ে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে গভীর রাত থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ২০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাত ও জোয়ারে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে নিচু এলাকাগুলোতে। পানির তোড়ে দেয়াল ধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পাহাড়ধসের আশংকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বরিশালে ৬ ফুট উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে সব নদীর পানি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কীর্তনখোলা ও মেঘনা নদীর পানি জোয়ারের সময় ৬ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে প্রবাহিত হয়। যে কারণে এই নদী দুটির নিকটবর্তী এলাকা বেশ প্লাবিত হয়েছে। এর সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত পানি আরও বাড়িয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ নদীরগুলোর কয়েকটি ১ থেকে দেড় মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুরেও অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
রিমালের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কলাপাড়া, খেপুপাড়া, রাঙ্গাবালি, বরগুনা, পাথরঘাটা, মনপুরা, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখানসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা। জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট, কোথাও কোথাও ৬ থেকে ৭ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জরাজীর্ণ বাধ ভেঙে অন্তত অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দী রয়েছে।রাত থেকেই জেলায় ১৫ লাখ মানুষ বিদুৎ বিছিন্ন হয়ে পরেছে।
বাগেরহাটের উপকূল জুড়ে প্রবল বেগে বৃষ্টির সাথে বাতাস বইছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সম্পূর্ন বাগেরহাট জেলা। আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর বিদ্যুৎকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়েছে।
ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিশখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে ৭ থেকে ৮ ফুট বেড়েছে। যা বিপদ সিমার ৬৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বাতাসের কারছে আঞ্চলিক মহাসড়কে পাশে থাকা গাছ উপড়ে পরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।