একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দেশের সবচেয়ে বেশি গেরিলা যুদ্ধ হয় চট্টগ্রামে
- আপডেট সময় : ১০:০০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯
- / ১৫৬০ বার পড়া হয়েছে
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দেশের সবচেয়ে বেশি গেরিলা যুদ্ধ হয় চট্টগ্রামে। মাত্র ১৫/১৬টি প্রশিক্ষিত গেরিলা দলের উপুর্যুপুরি আক্রমনে হতবিহবল হয়ে পড়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। যুদ্ধের শুরুতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অচল করে হানাদার বাহিনীর শক্তি কমিয়ে আনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর চট্টগ্রাম বন্দরে অপারেশন জ্যাকপটের মাধ্যমে দেশী বিদেশী ২১টি জাহাজ ধ্বংস করে বিশ্ববাসীকে অবাক করে দেয়া হয়।
একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ক্রাক ডাউনের পর নগর থেকে বন্দরে দাপিয়ে বেড়ায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই ঢুকে তাদের গোলা-বারুদ ও রসদ। সেখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে অচল করতে হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এর জন্য প্রয়োজন একটি ফেরীসহ কয়েকটি কালভার্ট ও মেঘনা গোমতি সেতু ধ্বংস করা। যুদ্ধের অন্যতম এই অপারেশনে অংশ নেন মাত্র ১৪ জন প্রশিক্ষিত গেরিলা যোদ্ধা।
এরপরও সবকিছু নিয়ন্ত্রনে আছে- বিশ্বব্যাপী এমন অপপ্রচার চালায় পাকিস্তান। তাই বিশ্বকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানান দিতে, অপারেশন জ্যাকপট নামের সবচেয়ে বড় গেরিলা অপারেশনের প্রস্তুতি নেন মুক্তিযোদ্ধারা। টার্গেট ঠিক হয় চট্টগ্রাম বন্দর। বুকে মাইন নিয়ে উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের সাথে ভাসতে ভাসতে বন্দরের বহি:নোঙ্গরে অবস্থান করা জাহাজ ধ্বংসের অভিযান শুরু করে একদল গেরিলা যোদ্ধা। সফল এই অভিযানে ধ্বংস হয় দেশি-বিদেশি ২১টি জাহাজ। আর অচল হয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর। বিশ্ব দেখে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব।
এমন খন্ড খন্ড সফল অভিযানেই এসেছে মহান স্বাধীনতা। কিন্তু এত বছর পরও সেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা দেখে কষ্ট পান এই দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা। একইসাথে সহযোদ্ধা ও সহযোগীদের অবমাননার পাশাপাশি অনেকে যুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় স্থান করে নেয়ায় ক্ষুব্ধ তারা।
সু-সজ্জিত পাকিস্তানী সেনাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধের চেয়ে গেরিলা যুদ্ধের ‘হিট অ্যান্ড রান’ কৌশলকেই বেছে নেয় চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে অচল কিংবা অপারেশন জ্যাকপট ছাড়াও চট্টগ্রাম শহরের সবকটি পেট্রোল পাম্প, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারসহ একযোগে ৭০টি স্পর্শকাতর স্থাপনা ধ্বংসের অভিযান ছিলো উল্লেখ করার মতো সফল গেরিলাযুদ্ধ। *মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ ঢাকা থেকে লাগাবেন